শিবলিঙ্গ একটি বিশেষ মূল্যবান জিনিস - এটি একটি সর্ব শক্তির অধিকারী একজন দেব এবং প্রাচীন কাল থেকে এটির আরাধনা হয়ে আসছে। আমরা সকলেই জানি হিন্দু ধর্ম দেব দেবী দের পূজা অর্চনা এর মধ্যমে সর্ব প্রকার মনোস্কামনা পূর্ণ করার চেষ্টা করেন। পুরাণ অনুযায়ী ৩৩ কোটি দেবদেবী বর্তমান। কিন্তু তাদের মধ্যে কিছু দেব দেবী আছেন যারা সাধারণভাবে পূজিত হন ও গৃহে অধিষ্ঠিত হন। এই দেব দেবী দের মধ্যে শিব হলেন অন্যতম। কিন্তু কোনো শিব এর পূজা করা হয় ? কিভাবে করা হয় ? এর পিছনে পুরাণ কি বলছে ? শিব লিঙ্গ জিনিসটি আসলে কি ? কিভাবেই বা তার আরাধনা করবেন ?
হিন্দুরা মূর্তি আকারে বিবিধ দেব দেবী দেড় পূজা অর্চনা করলেও পুরাণ অনুযায়ী ঈশ্বর নিরাকার , অদ্বিতীয় , চৈতন্য স্বরূপ ও সর্ব্বব্যাপী। তাই আমরা বলতে পারি পুরাণ মূর্তিপূজা করতে অসম্মত। পুরাণ বলছে প্রাণ বিনষ্ট হোক আর শিরোস্চিন্ন হোক ত্রিলোচন কে পূজা না করে ভোজন করা অনুচিত। এই ত্রিলোচন কি ? ইহাই ঈশ্বর। যাঁর তৃতীয় চোখ বর্তমান। যা মানুষের নেই। এই তৃতীয় চোখ সম্পন্ন অবয়ব ই ঈশ্বর। তাঁকেই ত্রিলোচন বলা হয়ে থাকে। পুরাণ আদেশ দিয়েছ হে প্রিয়ে , হে পরমেশ্বরী সমস্ত জীব এ পরম ভক্তি সহ ব্রহ্মময় শিব লিঙ্গের পূজা করিবে। অর্থাৎ স্নান করে পূজা না করে ভোজন করা মানা। শিবলিঙ্গের পূজা না করে , অগ্নিহোত্র করা , বেদ পাট , ভেন্দান্ত , উপনিষদ পাট করলেও তা সফল হয় না। সহস্র বার ভিন্ন যোনী তে জন্ম করেও শিবলিঙ্গের পূজা না করলে সফল হয় না। পুরাণ অনুযায়ী ব্রম্হান্ডই প্রকৃতিতো নিরাকার পরমেস্বর জ্ঞাপক। এটি বোধক ও স্বরূপ ও লিঙ্গ বলে পূজা করা হয়। তার শক্তি নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। তার শক্তি আন্দাজ করা যায় না। তাঁহার অনন্ত শক্তির ইয়ত্তা করা যায় না। তবুও বুদ্ধিমান ব্যাক্তি তাহার মহিমার ক্ষুদ্র ইঙ্গিত কেই তাহার অচিন্তনীয় শক্তির পরিচয় পেয়ে থাকেন। লিঙ্গ শব্দে শিবের উপস্থ বা মেট্র উপলখ্হিত হয় না। লিঙ্গ তার বিভূতি , চিহ্ন বা মূর্তি বিশেষ মাত্র। শিব লিঙ্গ শিবের লিঙ্গ না , এটি জ্ঞাপক মূর্তি বিশেষ এটিকে ভাবভরে পূজা করলে জীবের ব্রম্ভ জ্ঞান এর উদ্রেক হয়। প্রাচীন ঋষি এইভাবে লিঙ্গ কে হৃদয়ের সামগ্রী করে সিভি লিঙ্গ কে পূজা করতেন। তারা শিবলিঙ্গের পূজা অন্তরে বাইরে করতেন। কেউ , শিলা , স্পটিক কেউ বা আদি মহামূল্য বান রত্নে শিবলিঙ্গ তৈরি করে পূজা অর্চনা করতেন। এই লিঙ্গ ব্রম্যান্ড স্বরূপ , গৌরী পট্ট বা বেদিকা ভোগন মায়া প্রকৃতি। এই মায়া হতে বেরিয়ে আসা মায়ার আশ্রিত অখণ্ড চিহ্নই সাক্ষাৎ দেব দেবী দিগকে জানিবার একমাত্র উপায়।বিশুদ্ধ পরমাত্মা লিঙ্গ নামক কোনো শরীর চিহ্ন নয় , এটি ঈশ্বরের অনুমাপক বা বিজ্ঞাপক চিহ্ন অর্থাৎ ব্রমান্ডই লিঙ্গ বলে ধরা হয়। সংখ্যসূত্র কার বলেছেন " যাহার কোনো কারণ আছে , যাহা অনিত্য , অব্যাপক , ক্রিয়াবান , অনেক ও অন্যের আশ্রিত তাহার নাম "লিঙ্গ " .
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন