শনিবার, ২৯ আগস্ট, ২০২০

তৃতীয়পতির দ্বাদশভাবের অবস্থানফল

তৃতীয়পতির দ্বাদশভাবের অবস্থানফল


১. তৃতীয়পতি লগ্নে থাকলে জাতক সেবাপরায়ণ হয়। সে দুষ্ট লোকের সহিত বন্ধুত্ব করে এবং বাকচতুর হয়, আত্মীয় হতে দূরে থাকে এবং তার কণ্ঠস্বরে ক্রুঢ়তার পরিচয় পাওয়া যায়। তার মধ্যে লাম্পট্য দশ জন্মাতে পারে।

২. তৃতীয়পতি ধনভাবে থাকলে জাতক অল্পায়ু, নির্ধন, বন্ধুবিদ্বেষী এবং ভিক্ষুক স্বভাব যুক্ত হয়, শুভগ্রহ হলে কতকাংশে শুভ হয় এবং সে ক্ষমতাশালী হয়।

৩. তৃতীয়পতি  তৃতীয়ে থাকলে জাতক সাহসী হয়, সে সদবন্ধুযুক্ত থাকে, রাজানুগ্রহ লাভ করে এবং গুরুভক্তিপরায়ণ হয়।

৪. তৃতীয়পতি চতুর্থে থাকলে অনুজ হতে লাভ করে, মাতার সহিত কলহ হয়, কিন্তু পিতাকে শান্তিদান করে, পিতার অর্থ ও সম্পত্তি অপহরণ করে।

৫. তৃতীয়পতি পঞ্চমে থাকলে জাতক সন্তান ও অনুজদ্বারা প্রতিপালিত হয়। সৎ আত্মীয় লাভ করে। সে দীর্ঘায়ু ও পরোপকারী হয়।

৬. তৃতীয়পতি ষষ্ঠে থাকলে জাতক চক্ষুরোগী, বিত্তবান ও বন্ধুদ্বেষী হয়।

৭. তৃতীয়পতি সপ্তমে থাকলে জাতকের স্ত্রী সুন্দরী ও ভাগ্যবতী হয়। ক্রুর বা পাপগ্রহ হলে দেবর গৃহবাসিনী হয়।

৮. তৃতীয়পতি  অষ্টমে থাকলে জাতব্যক্তি অনুজ হানি হয়। পাপগ্রহ হলে আট নয় বছর পর্যন্ত অনুজের পিড়াভোগ থাকে। এই সময় পর্যন্ত মৃত্যুযোগ থেকে দৈবাৎ বেঁচে থাকলেও তার বাহুদ্বয় বিকলাঙ্গ বা ভগ্ন হয়।

৯. তৃতীয়পতি নবম থাকলে জাতক বন্ধু দ্বারা পরিত্যক্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শুভগ্রহ তৃতীয়পতি হলে সৎকীর্তিশালী, অনুজপ্রিয় ও সদবন্ধুলাভ করে।

১০. তৃতীয়পতি দশমে থাকলে জাতক বোন্ধুগণের প্রিয়পাত্র হয়। সে মাতৃভক্ত বা রাজমান্ন হয়, কিন্তু সে স্ত্রীলোকের কথায় চলে।

১১. তৃতীয়পতি একাদশে থাকলে জাতক রাজা বা শ্রেষ্ঠ ব্যাক্তি নিকট হতে লাভবান হয়। সদবন্ধু লাভ করে ও তার বন্ধুবর্গের সাহায্যকারী হয়।

১২. তৃতীয়পতি দ্বাদশে থাকলে জাতক বন্ধুগণের দুঃখদাতা, প্রবাসী এবং বন্ধুবিরোধী হয়।





















একাদশপতির দ্বাদশভাবের অবস্থানফল

একাদশপতির দ্বাদশভাবের অবস্থানফল


১. একাদশপতি লগ্নে থাকলে জাতক ধনলোভী, দাতা, বীর ও ভাগ্যবান হয়। পিপাসার্ত হয়ে তার মৃত্যু হো। সচারচর জাতক অল্পায়ু হয়ে থাকে।

২. একাদশপতি দ্বিতীয় থাকলে জাতকের ধনসঞ্চয় হয়না। আয়বায় সমান থাকে। সে ভোজনবিলাসী হয়। তার শরীরে ব্যাধি থাকে তাই সে অল্পায়ু হয়। সচারচর এরা তীর্থদর্শন পরায়ণ হয়।

৩. একাদশপতি তৃতীয় থাকলে জাতক সদবন্ধুযুক্ত হয়। সে বন্ধুপ্রিয় হয়ে থাকে। এবং বন্ধুর শত্রুহন্তা হয়। এরা কুশলী হয়ে থাকে।

৪.  একাদশপতি চতুর্থে থাকলে জাতক ধার্মিক, পিতৃভক্তি ও দীর্ঘায়ু হয়।

৫. একাদশপতি পঞ্চমে থাকলে জাতকের সন্তানের সহিত মধুর সম্পর্ক থাকে। এবং পিতাপুত্র সমগুণসম্পন্ন হয়। সচারচর এরা সুখী হয়।

৬. একাদশপতি ষষ্ঠে থাকলে জাতক শত্রু মধ্যে বাস করে থাকে। সে দীর্ঘকাল ধরে রোগভোগ করে থাকে। এরা প্রবাসী ও পরসেবক হয়ে থাকে।

৭. একাদশপতি সপ্তমে থাকলে জাতক এক পত্নীবিশিষ্ট হয়। সে দীর্ঘায়ু, তেজস্বী ও শান্ত হয়। কন্যা লগ্ন হলে এরূপ জাতক কখনো দাম্পত্য সুখের হয়না।

৮. একাদশপতি অষ্টমে থাকলে জাতক অল্পায়ু হয়। সে রোগে জীবন্মৃত অবস্থায় থাকে এবং দুঃখী হয়। এদের বুদ্ধি কম হয়ে থাকে।

৯. একাদশপতি নবম থাকলে জাতক ধার্মিক এবং নানাশাস্ত্রে পন্ডিত হয়। পাপগ্রহ হলে জাতক ধর্মবর্জিত হয়। শুভগ্রহ হলে জাতক সত্যবাদী ও স্বধর্মেরত হয়।

১০. একাদশপতি দশম থাকলে জাতক দীর্ঘায়ু, বহু পুত্রপুত্রাদিযুক্ত ধোনি, পিতৃবিরোধী ও মাতৃভক্ত হয়। রাজতুল্য ব্যাক্তিগণও এদের পূজা করে থাকে।

১১.একাদশপতি একাদশে থাকলে জাতক রূপবান, শান্ত, জ্ঞানী, দীর্ঘায়ু এবং ধনী হয়। এরা বাগ্মী, পন্ডিত ও কবি হয়।

১২. একাদশপতি দ্বাদশে থাকলে জাতক অস্থির প্রকৃতির ও বিনা কারণে অন্যায়কারী হয়। সে দাতা, ও ভোগী হয়। সচারচর এরা ম্লেচ্ছ সংসর্গকারী, কামুক ও নির্ধনহয়ে থাকে। 




















শুক্রবার, ২৮ আগস্ট, ২০২০

দশমপতি দ্বাদশ ভাবের অবস্থানফল

দশমপতি দ্বাদশ ভাবের অবস্থানফল 


১. দশমপতি লগ্নে থাকলে মাতৃবৈরী, পিতৃভক্তি, দুঃখী, ও বাল্যে পিতৃহীন হবার সম্ভাবনা থাকে। 

২. দশমপতি দ্বিতীয়ে থাকলে "ক্ষেত্র সিংহাসন যোগ" হয়। জাতক নিজ কর্মবলে প্রচুর ধন উপার্জন করে পোষ্যবর্গকে পোষণ করে থাকে। 

৩. দশমপতি তৃতীয়ে থাকলে জাতক ভাতৃবৎসল হয়, অধীনস্থ ব্যাক্তির ক্ষতি করতে অক্ষম হয়। এবং সমাজসেবায় যশোলাভ করে থাকে। 

৪. দশমপতি চতুর্থে থাকলে জাতক পিতামাতার অনুরাগী হয়। সে বহু সম্পত্তি এবং যানবাহন লাভ করে থাকে। রাজানুগ্রহ লাভ করে সে যশস্বী হয় এবং কর্মদ্বারা শ্রেষ্ঠবন্ধু লাভ করতে পারে। 

৫. দশমপতি পঞ্চমে থাকলে জাতকের কর্মে সৃজনী প্রতিভা থাকে। তার সৎপুত্রলাভ হয়। সে গীতবাদ্যপ্রিয় হয় এবং শ্রেষ্ঠ ব্যাক্তির নিকট হতে তার সম্মান লাভ হয়। 

৬. দশমপতি ষষ্ঠে থাকলে জাতক শত্রুহন্তা হয়। সে নিজ ক্ষমতায় শত্রুকে বশীভূত করতে পারে। এবং পিতার সম্পদের অধিকারী হয়। সে রাজানুগ্রহ লাভ করে থাকে। 

৭. দশমপতি সপ্তমে থাকলে জাতকের স্ত্রী সুন্দরী, সেবাপরায়ণা ও পুত্রবতী হয়। 

৮. দশমপতি অষ্টমে থাকলে জাতকের দুষ্টপ্রকৃতি জন্মে এবং সে মিথ্যাবাদী ধূর্ত ও চোর হয়। শুভগ্রহ হলে এই অশুভ ফল লাভ হয়না। শুভ হয়। 

৯. দশমপতি নবমে থাকলে জাতক ভাগ্যবান, চরিত্রবান, চিন্তাশীল ও শ্রেষ্ঠবন্ধুযুক্ত হয়। তার মাতা পুণ্যশীলা হয়। 

১০. দশমপতি দশমে থাকলে জাতক শ্রেষ্ঠব্যাক্তি, খ্যাতিমান এবং কর্মী হয়। তার মাতৃসুখে সুখী হয় এবং পিত শ্রেষ্ঠ ব্যাক্তি হন। 

১১.দশমপতি একাদশে থাকলে জাতক ধনী, খ্যাতিমান এবং শ্রেষ্ঠবন্ধুযুক্ত হয়। 

১২. দশমপতি দ্বাদশে থাকলে জাতক অলসপ্রকৃতি  ও কর্মবিমুখ হয়। সে পিতৃনিন্দুক হয়। শুভগ্রহ হলে বিপদ থেকে যুক্তিলাভ করে। 




















 

নবমপতির দ্বাদশভাবের অবস্থানফল

নবমপতির দ্বাদশভাবের অবস্থানফল 


১. নবমপতি লগ্নে থাকলে জাতক রাজকর্মী, সাহসী, বুদ্ধিমান, এবং দেব ও গুরুভক্তিপরায়ণ হয়। সে প্রশান্তবদন ও ভাগ্যবান হয়। কিন্তু কৃপণতা দোষে দৃষ্ট থাকে।

২. নবমপতি দ্বিতীয়ে থাকলে জাতক সম্মানী, বিখ্যাত, ধোনি, শান্ত, সংকীর্তিপরায়ণ, বিদ্বান ও চতুস্পদ জীবের অধিকারী হন।

৩. নবমপতি তৃতীয়ে থাকলে জাতক স্ত্রৈণ, বন্ধুপ্রিয় ও ধনবান হয়।

৪. নবমপতি চতুর্থে থাকলে জাতক কর্মদ্বারা বিখ্যাত হয়। তার সৎকীর্তি থাকে। সে ভূসম্পত্তির অধিকারী হয় এবং বন্ধুবর্গের হিতকামী হয়। জাতক পিতৃভক্তি পরায়ণ হয়ে থাকে।

৫. নবমপতি পঞ্চমে থাকলে জাতক দেবভক্তিপরায়ণ, এবং সৎপুত্রযুক্ত হয়। তার সুকৃতি থাকে। সে বুদ্ধিমান ও আদর্শবাদী হয়। তার ভিতরে গাম্ভীর্যপূর্ণ বুদ্ধির দীপ্তি থাকে। সে ভাগ্যবান হয়।

৬. নবমপতি ষষ্ঠে থাকলে জাতক আলস্যপরায়ণ ও খেলাধুলায় মত্ত থাকে। সে শত্রুর সহিত নম্র ব্যবহার করে থাকে। তার মাঝে মাঝে অন্যায় কর্মে প্রবৃত্তি জন্মায়। তার এই অধর্ম পরায়ণতায় উন্নতিতে বাধা বিগ্ন ঘটে থাকে।

৭. নবমপতি সপ্তমে থাকলে জাতকের স্ত্রী মধুভাষীনি হয়। সে ধার্মিক হয়, তার স্ত্রী সত্যপ্রিয়া ও লক্ষ্মীমতি হয়ে থাকে। জাতকের বাণিজ্য দ্বারা ভাগ্যবৃদ্ধি ঘটে থাকে।

৮. নবমপতি অষ্টমে থাকলে জাতকের জীবহিংসাপরায়ণ ও অসৎ হয়। তার স্বকীয় গৃহলাভ বহুকষ্টেও হয়না। সে বন্ধুবিরোধী হয়। পাপগ্রহ হলে জাতক ক্লীব, দুঃশীল ও ভাগ্যহীন হয়।

৯. নবমপতি নবমে থাকলে জাতক ভাগ্যবান, আদর্শবাদী এবং অতুল সম্পদের প্রভু হয়। তার স্বপ্ন সফল হয়। সে বন্ধুগণের সহিত বিবাদ করেনা। পাপগ্রহ হলে কুমতি প্রদান করে। শুভগ্রহ হলে পরম সৌভাগ্যবান, ধার্মিক, সত্যবাদী ও দেবদ্বিজে ভক্তিমান হোন।

১০. নবমপতি দশমে থাকলে জাতক সৎকর্মী, সৎবৃত্তিভোগী ও ধনী হয়। রাজকীয় সম্মান তার ভাগ্যে সকল সময় থাকে। তার মাতা সুখী হয়। জাতক ধর্মকার্য দ্বারা বিখ্যাত হয়।

১১. নবমপতি একাদশে থাকলে জাতক রাজানুগ্রহ লাভ করে, অগ্রজ হতে তার ভাগ্যোন্নতি হয়। সে অধিক স্নেহপ্রবণ ও ধার্মিক হয়। এরা পুণ্যবান বলে খ্যাত হয়।

১২.নবমপতি দ্বাদশে থাকলে জাতক সম্মানী, রূপবান ও বিদ্বান হয়। সে বিদেশে সম্মানলাভ করে। পাপগ্রহ হয়ে নবমপতি শত্রুগৃহে থাকলে জাতক ধূর্ত, অপব্যায়ী ও মন্দবুদ্ধিযুক্ত হয়।





















পঞ্চমপতির দ্বাদশভাবের অবস্থানফল

পঞ্চমপতির দ্বাদশভাবের অবস্থানফল 


১. পঞ্চমপতি লগ্নগত হলে জাতক বুদ্ধিমান ও পন্ডিত হয়। তার কৃপণ স্বভাব ও স্বার্থপর বুদ্ধি থাকে। সে যশস্বী, মায়াবী ও মিষ্টভাষী হয়।

২. পঞ্চমপতি দ্বিতীয় থাকলে জাতক সংগীতজ্ঞ, খ্যাতিমান, ধোনি ও পদস্থ ব্যাক্তি হন। সে ক্রোধী হয় এবং মানসিক অশান্তি ভোগ করে। সে শ্বাসকাশ রোগাক্রান্ত ও বহু সন্তানের জনক হয়।

৩. পঞ্চমপতি তৃতীয়ে থাকলে জাতক ঐন্দ্রজালিক বিদ্যায় পারদর্শী হয়। সে মায়াবী হয় এবং মধুর ভাষণে বন্ধুগণের ভিতরে যশ লাভ করে থাকে।

৪. পনসহম্পতি চতুর্থে থাকলে জাতক মাতৃভক্ত এবং পিতার কাজকর্মের প্রতি অনুরক্ত হয়। সে উত্তম বুদ্ধি দ্বারা জননায়ক হতে পারে। লোকসমাজে গুরুর ন্যায় শ্রদ্ধা অর্জন করে। তার বিদ্যায় খ্যাতি জন্মায়।

৫. পঞ্চমপতি পঞ্চমে থাকলে জাতক বাক্যকুশলী, বুদ্ধিমান, সম্মানী এবং সৎপুত্রযুক্ত হয়। কিন্তু তার সন্তানেরা দীর্ঘজীবী হয়না।

৬. পঞ্চমপতি ষষ্ঠে থাকলে জাতক রোগী হয় এবং সোনাটা হতে শত্রুতা লাভ করে, নিজের বুদ্ধির দ্বারা শত্রু সৃষ্টি করে। সম্মানহীন ও ধনহীন হয়।

৭. পঞ্চমপতি সপ্তমে থাকলে জাতকের স্ত্রীর গর্ভে অধিক সন্তান জন্মে থাকে। তার সচ্চরিত্র স্ট্রিলাভ হয়। তার নিজের বুদ্ধি থাকা সত্ত্বেও স্ত্রীগত বুদ্ধি জন্মায়।

৮. পঞ্চমপতি অষ্টমে থাকলে জাতকের আত্মধ্বংসকারী বুদ্ধি জন্মে। তার সন্তানহানি, স্ত্রী রুগ্না এবং ভ্রাতা ও পুত্র বিকলাঙ্গ হয়। সে শ্বাসকাশ রোগ ও ক্রোধপরায়ণ হয়।

৯. পঞ্চমপতি নবম থাকলে জাতক উচ্চশিক্ষিত, বুদ্ধিমান, কবি, সংগীতজ্ঞ, গ্রন্থকার, বিখ্যাত এবং রাজপূজিতো হয়। সে আদর্শবান হয়। দেবদ্বিজে তার ভক্তি থাকে। সে রাজতুল্য পুত্রের জন্মদাতা হয়।

১০. পঞ্চমপতি দশমে থাকলে জাতক অধিক মাতৃস্নেহ লাভ করে। তার রাজতুল্য পুত্রলাভ হয়। সে সরকারের ভিতরে উচ্চপদ লাভ করে সদভাবে কর্মপরিচালনা করে। সে সর্বদা সৎকর্মরত হয়।

১১. পঞ্চমপতি একাদশে থাকলে জাতক গ্রন্থাগার এবং সৎপুত্রবান হয়। স্ত্রীর গর্ভে সুসন্তান জন্মে থাকে। সে জনপ্রিয় হয়। তার সৎকর্মের অধিকাংশ ফল জীবিত অবস্থায় ভোগ হয়। সে সঙ্গীতপ্রিয় হয়। সে পন্ডিত, বীর ও মহাদক্ষ হয়।

১২. পঞ্চমপতি দ্বাদশে থাকলে এবং পাপগ্রহ হলে জাতক সন্তানহীন হয়। শুভগ্রহ হলে সন্তানলাভ হয়। কিন্তু সন্তান হতে শান্তিলাভ হয়না। সন্তানের স্বাস্থ ভালো থাকে না। তার পিতার সহিত সম্পর্ক রাখতে ইচ্ছা প্রকাশ করেনা। এরূপ জাতকের দত্তক পুত্র লাভের সম্ভাবনা থাকে।

এই বিচার গুলির মাধ্যমে কোষ্ঠীর পূর্ণাঙ্গ নিখুঁত বিচার করতে আপনারা সমর্থ হবেন। 




















বুধবার, ২৬ আগস্ট, ২০২০

সেপ্টেম্বর মাসের রাশিফল

সেপ্টেম্বর মাসের রাশিফল

মেষরাশি
বহু সমস্যা থেকে মুক্তি।নবমগৃহে বৃহস্পতি প্রগতিশীল হওয়ায় আপনার স্তব্ধ বাধাগ্রস্ত কাজ পুনরায় শুরু হবে। সম্পর্কের ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী তিক্ততা এই মাসেই অবসান হবে। আধ্যাতিক মননের দিকে মন যেতে চাইবে। বুদ্ধিমান বন্ধুর সাহচর্য লাভ। ব্যাবসায়ীরা নিজের ব্যাবসায় দুর্দান্ত সাফল্য পাবে। রাজীনীতির সঙ্গে যুক্ত ব্যাক্তিরা উচ্চপদ বা পদোন্নতির যোগ রয়েছে। স্বাস্থ ভালো থাকবে। মাসটি ইতিবাচক হবে। কিছু কঠিন পরিস্থিতি ঘটতে পারে। যেকোনো বিরোধ থেকে দূরে থাকতে বলা হচ্ছে। ভাগ্য আপনার পক্ষে থাকবে। মাসের শেষে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য পেতে পারেন। সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে। পারিবারিক পরিবেশ চমৎকার থাকবে। নিজের বাড়ির নির্মাণ কার্যে বা তদারকিতে ব্যাস্ত থাকতে পারে। দাম্পত্য জীবন শুভ। ভ্রাতা ভগিনীর সঙ্গে বিরোধে জড়াবেন না।
শুভ দিন - ১,২,৭,১০,১১,১৭,১৮,১৯,২৬,২৯
অশুভ দিন - ৩,৪,১৩,১৫,২২,২৩
শুভ রত্ন - রক্ত প্রবাল।

বৃষরাশি
কর্মজীবী পেশাদারদের এই মাসে প্রচুর পরিমানে পরিশ্রম করতে হবে। নতুন ভাবনা আপনার জীবনে ইতিবাচক হবে। এই সময় শারীরিক আরাম এবং বিলাসিতা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। যন্ত্রপাতি ও কৃষিকাজ সম্পর্কিত কাজে ভালো আয় হবে। ১১-ই সেপ্টেম্বর এর পর কোনো ধরণের আঘাতের সম্ভাবনা আছে। উচশিক্ষায় শিক্ষার্থীদের সাফল্য আসবে। স্বাস্থ্য মোটের উপর ভালো থাকবে। ঋণ দিতে হতে পারে কাছের কোনো বন্ধুকে। বিবাহিত জীবনে শান্তি আসবে। পেশাদারিত্বে আপনি কোনো বড়ো বিনিয়োগ করতে পারেন। আমদানি রপ্তানির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ব্যাবসায়ে লোকসানের পরিমান বাড়তে পারে। কিছু দীর্ঘ প্রত্যাশিত কাজ মাসের শেষের দিকে শুরু হতে পারে।
শুভ দিন- ১,৪,৫,৯,১৩,২০,২২,২৬,২৯
অশুভ দিন - ৬,৭,১১,২৫,১৬,২৮
শুভ রত্ন- হীরা।

মিথুনরাশি
স্থির সম্পদ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। মাসের প্রথমার্ধটি আপনার আত্মবিশ্বাসের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। পারস্পরিক সহযোগিতা আপনার পারিবারিক জীবনে উন্নতি ঘটাবে। ভ্রাতা ভগিনীকে সাহায্য করার চেষ্টা করবেন। শৈল্পিক ও সৃজনশীল ক্ষেত্রে জাতক জাতিকা এই মাসে দুর্দান্ত সুযোগ পাবেন। কঠোর পরিশ্রম ফলশালী হবে। অর্থনৈতিক ব্যাপারে সাফল্য আসবে। কর্মজীবী পেশাদারদের জীবনে লড়াই হ্রাস পাবে। স্বাস্থ ভালো থাকবে। জমি ও ব্যবসা সম্পর্কিত বিরোধগুলি এই মাসে  হবে। দাম্পত্য জীবন সুখের হবে। ভালো বাসার সম্পর্কে সন্তুষ্ট থাকবেন। অপ্রয়োজনীয় চাপ থেকে দূরে থাকুন। সরকারি চাকরিজীবীরা কাজের চাপ থেকে অব্যাহতি মিলবে। সমাজে বুদ্ধিমান ব্যাক্তি হিসেবে আপনার গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে। ছোটোখাটো ভ্রমণযোগ রয়েছে।
শুভ দিন - ৩,৬,৭,১০,১৬,২১,২৫,২৮
অশুভ দিন - ১,৮,৯,১৩,২২,২৩
শুভ রত্ন - পান্না।

কর্কটরাশি - কর্মক্ষেত্রে আপনি কিছু অসুবিধার মুখোমুখি হতে পারেন। এই মাসে কাজের চাপ বাড়বে। ব্যাবসায়ে পরীক্ষামূলক কিছু করতে পারেন। মাসের প্রথম দিকে ভালো কাটবে। সন্তানের ভবিষৎ নিয়ে চিন্তা থাকবে। জীবনে হঠাৎ আশ্চর্যমূলক কিছু ঘটতে পারে। আটকে থাকা অর্থ ফেরত পেতে পারেন। পরিবারের সদস্যদের সাথে আপনার সুষ্পট সম্পর্ক থাকবে। শিক্ষার্থীরা নতুন কোনো কোর্সে ভর্তি হতে পারেন। শারীরিক অবস্থা বিশেষ ভালো যাবেনা। শেয়ার মার্কেট বা কমিশন নির্ভর কাজে যুক্ত ব্যাক্তিদের এই মাসটি সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। বিবাহিত জীবন মোটের উপর শুভ। চোখের সমস্যা হালকা ভাবে নেবেন না। প্রগতিশীল বৃহস্পতি কর্মক্ষেত্রের পরিস্থিতি ভালো রাখবে। মনকে আনন্দময় রাখুন ও চিন্তা ভাবনা থেকে দূরে থাকুন। অতিরিক্ত আয়ের উৎস উৎপন্ন হবে। ব্যায় নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা বৃথা হবে।
শুভ দিন - ৬,৮,৯,১৩,১৭,১৮,২৩,২৬
অশুভদিন - ২,১০,১১,১৫,১৯,২২,২৮
শুভ রত্ন- মুক্ত।

সিংহরাশি
আর্থিক বিষয় সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান হবে। মাসের প্রথমার্ধে আপনার সামাজিক বৃত্তটি বৃদ্ধি পাবে। আপনি আপনার পরিবারের চেয়ে ব্যাক্তিগত প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দেবেন। ঘন ঘন ভ্রমণ আপনাকে মানসিক বিরক্তি তে ফেলতে পারে। বিদ্যাশিক্ষার জন্য মাসটি অনুকূল। সন্তানের সাফল্যে আনন্দিত হবেন। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। অহং ও কপটতা থেকে দূরে থাকুন। সাহস ও বীরত্ব বৃদ্ধি পাবে। উচ্চপদে পদোন্নতি হতে পারে। পেশির ব্যাথায় কষ্ট পেতে পারেন। বিদেশে গবেষণারত জাতক জাতিকার সুসময়। সরকারি কর্মকর্তাদের পদোন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা। আপনার জীবনসঙ্গী আপনার থেকে আনুগত্য ও ভালোবাসা আশা করবে। ধর্মীয় কাজে আগ্রহ হ্রাস পাবে।পারিবারিক প্রয়োজনে দামি আসবাব কিনতে হতে পারে।
শুভ দিন - ১,২,৮,১০,১১,১৬,১৯,২০,২৭,২৯
অশুভ দিন - ৩,৪,১৩,২২,২৪
শুভ রত্ন - চুনি

কন্যারাশি
এই মাসটি অর্হতিক পরামর্শদাতা এবং হিসাবরক্ষকদের পক্ষে উপযুক্ত হবে। আপনি আপনার অতীতের প্রচেষ্টায় সুবিধা ভোগ করবেন। পিত মাতা ও অন্যান সদস্যদের স্বাস্থ্যের বিশেষ যত্ন নিন। ব্যবসা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করতে [পারেন। দৈনিক মজুরিতে যুক্ত জাতক জাতিকারা নিয়মিত কাজ পাবেন। প্রবীণদের স্বাস্থ ভালো যাবে। ব্যায় নিয়ে চিন্তিত হবেন। সরাকর সম্পর্কিত কাজে বাধা আস্তে পারে। নিজের কৃতিত্বের জন্য কোনো সংস্থা আপনাকে সম্মানিত করতে পারে। শ্বশুর বাড়ির সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করবেন না। যাদের মাথা ব্যাথা বা মাইগ্রেন সমস্যা আছে তাদের স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া দরকার ও প্রাণায়াম করা প্রয়োজন। আপনার ভাই ব্যাক্তিগত জীবনে কোনো কঠিন সমস্যার মুখোমুখি হতে পারে। রাজনৈতিক ব্যাক্তিগন অধিক দায়িত্ব লাভ করতে পারেন। উৎপাদন ভিত্তিক ব্যাবসায়ে বৃদ্ধির লক্ষণ রয়েছে। ঋণ সম্পর্কিত সমস্যার সমাধান হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
শুভ দিন - ২,৩,৯,১১,১৩,১৪,১৭,২১,২৯
অশুভ দিন - ৬,৭,১০,১৫,১৯,২৮,২৭
শুভ রত্ন - পান্না

তুলারাশি
উচ্চপদে থাকা রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের এই মাসটি অনুকূল। ব্যাবসায়িক পরিস্থিতি আরো চ্যালেঞ্জের হয়ে উঠতে পারে। জীবনসঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করবেন না। বেশিরভাগ চেষ্টা বার্থ হবে। শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল পাবেন। এই মাসে কিছু দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করতে পারেন। আপনার ব্যাক্তিত্ব সম্পর্কে সাধারণ মানুষ ঈর্ষা করতে পারে। একাধিক কাজের সুযোগ পাবেন। পরিবারের সঙ্গে আনন্দে সময় কাটাতে পারবেন। নিজের বাড়ি সংস্কারের পরিকল্পনা করতে পারেন। অবিবাহিত জাতক জাতিকার বিবাহের জন্য তাড়াহুড়ো করা উচিত হবেনা। ব্যাবসায়ে অংশীদারের সাথে কোনো বড়ো চুক্তি চূড়ান্ত করবেন না। কিছু পুরোনো সমস্যা শুরু হতে পারে। আইনি জটিলতা মিতে যেতে পারে। আত্মবিশ্বাস ও ও বীরত্ব বৃদ্ধি পাবে। আপনার উর্ধতন কর্তৃপক্ষ আপনার লক্ষ ও সময়সীমা পূরণে আপনাকে সহায়তা করবে। হজমে গোলমাল থেকে সংক্রমণ ঘটতে পারে। পরিবারের সাথে ভ্রমণের পরিকল্পনা করতে পারেন।
শুভ দিন-  ৩,৫,৭,১২,১৬,২১,২৫,৩০
অশুভ দিন - ১,৮,৯,১৭,১৮,২৬,২৯
শুভ রত্ন - হীরা।

বৃশ্চিকরাশি
এই মাসে নতুন কোনো ব্যবসা শুরু করতে পারেন। স্বাভাবিক ফলাফল এই মাসে নির্দেশ করছে। অতিরিক্ত কাজের চাপ সমস্যা সৃষ্টি করবে। জীবনসঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় হবে। সাংবাদিকতা ও বিনোদন শিল্পের ক্ষেত্রে মাসটি অনুকূল হবে। আপনি জ্ঞানের নতুন শাখা অন্বেষণে আগ্রহী হবেন। কঠোর পরিশ্রম করার ক্ষমতা থাকবে। সৃজনশীলতায় সতুন মাত্রা যুক্ত হবে। স্বাস্থ্য নিয়ে অবহেলা করবেন না। আয়ের চেয়ে ব্যায় বৃদ্ধি ঘটবে। অতিরিক্ত চিন্তা ভাবনা ক্ষতির কারণ হতে পারে। ক্ষুদ্র বিষয়ে মেজাজ ঠিক রাখুন। মাসের শেষে কিছুটা ভ্রমণ করতে হতে পারে। শিশুদের সমস্যার অবসান হবে। অবিবাহিতদের বিবাহের আলোচনা হতে পারে। শেয়ার বাজার সম্পর্কিত বিষয় থেকে আর্থিক লাভের সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারি সাহায্য বা আর্থিক অনুদান পেতে পারেন।
শুভ দিন- ৪,৬,৭,৮,১৩,১৬,১৮,২২,২৬,২৭
অশুভ দিন - ১,১০,১১,১৯,২০,২৪,২৯
শুভ রত্ন - রক্ত প্রবাল

ধনুরাশি
পারিবারিক কিছু অনুষ্ঠান এই মাসে আপনাকে ব্যাস্ত রাখবে। আর্থিক ভাবে আপনি স্বচ্ছল অবস্থায় থাকবেন। বিকল্প আয়ের উৎসের সন্ধান করতে পারেন। ধর্মীয় কাজকর্মে উৎসাহিত বোধ করতে পারেন। আপনার উদ্যোগে নতুন কিছু বিনিয়োগ পটাতে অপেক্ষা করতে হবে। খিটখিটে মেজাজ ও কিছুটা স্বল্পস্বভাবের হয়ে পড়তে পারেন। নিজের ভুল বুঝতে পারবেন। সম্পত্তি সপর্কিত বিষয়গুলি আপনার জরুরি মনোযোগ দাবি করবে। অতীতের কোনো বিনিয়োগ থেকে ভালো রিটার্ন পাবেন। ব্যাবসায়ে গতি আসবে। বিবাহিত দম্পতিরা েকে ওপরের অনুগত ও নিবেদিত থাকবে। আপনার সহনশীল ব্যাক্তিত্বের জন্য মানুষ প্রভাবিত হবেন। অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা আছে। অন্যের সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকুন। ডায়াবেটিস সমস্যা জনিত সমস্যায় হতে হতে পারে।
শুভ দিন - ১,২,৯,১১,১৭,১৮,২০,২৮
অশুভ দিন - ৩,৪,১৩,২২,২৭
শুভ রত্ন - হলুদ পোখরাজ।

মকররাশি
আপনার জীবনে নেতিবাচক কিছু ঘটার সম্ভাবনা এই মাসে রয়েছে। উচ্চরক্তচাপ জনিত সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। ক্যারিয়ার গঠনের দিক থেকে মাসটি  অনুকূল হবে। মায়ের স্বাস্থ্যের যত্ন নিন। বর্তমান পরিস্থিতিতে বেশ কিছু ব্যায় ঘটবে। ভ্রাতা ভগিনীর সমস্যায় ভুগতে হতে পারে। অসৎ মানুষের সঙ্গে এড়িয়ে চলুন। সম্পত্তি সম্পর্কিত সমস্যা আরো জটিল আকার ধারণ করবে। চলমান কাজে হঠাৎ হঠাৎ বাধা উপস্থিত হবে। বন্ধুদের অন্ধভাবে বিশ্বাস করবেন না। বৃহস্পতির গোচরে নেতিবাচক পরিস্তিতির উন্নতি ঘটবে। আর্থিক অবস্থা মোটামুটি থাকবে। জীবনসঙ্গীর উৎসাহ আপনার কাজে উৎসাহিত করবে। অন্যের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবেন না।
শুভ দিন - ৩,৫,১০,১৩,১৯,২২,২৭
অশুভ দিন - ২,৭,১৫,১৬,২৪,২৮
শুভ রত্ন - নীলা।

কুম্ভরাশি
দীর্ঘকালীন রোগভোগ থেকে এই মাসে মুক্তি মিলবে। ব্যাবসায়ে আয় বৃদ্ধি হবে। আর্থিক স্থিতিশীলতা আপনার নতুন প্রকল্পগুলির বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করবে। পরিবারের সদস্যরা খুশি থাকবে। সন্তানের শিখায় বড়ো  বিনিয়োগ করতে হতে পারে। নতুন বাড়িগাড়ি কেনার শুভ সময়। আপনার বিনীত আচরণ সবাইকে মুগ্ধ করবে। ব্যাবসায়ের পুরোনো অংশীদারেরা পুনরায় যোগাযোগ করতে পারে। ঋণের বোঝা চাপতে পারে এই মাসে। দীর্ঘস্থায়ী নেতিবাচক সমাধান এই মাসেই হবে। সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে উদ্বিগ্ন হবেন। পরিবারের সদস্যদের প্রত্যাশা অপরিরোধ হবে। সামাজিক কর্মী ও তাদের খ্যাতি এবং জনসাধারণের ভাবমূর্তি সম্পর্কে সতর্ক হওয়া উচিত।
শুভ দিন - ১,৭,১২,১৫,১৬,২১,২৮
অশুভ দিন - ৪,৯,১৭,১৮,২৬,২৭
শুভ রত্ন - নীলা।

মীনরাশি
ব্যাস্ত ও চাপমুক্ত পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাবেন। স্বাস্থ্য মোটামুটি ভালো থাকবে। ভ্রমণ ও হোটেল সম্পর্কিত ব্যাবসায়ে প্রত্যাশিত বৃদ্ধি লক্ষণীয় হবে। অর্থ সম্পর্কিত বিষয়ে আপনার পরিবারে বড়ো বিরোধ ঘটতে পারে। যারা ব্যাঙ্কিং, কোষাগার, এবং শিক্ষা সম্পকিত পেশায় যুক্ত তারা ভালো বিকাশের সুযোগ পাবেন। আমদানি রপ্তানিকৃত ব্যাবসায়ে গতি আসবে। ব্যাবসায়ে উন্নতি মাসের মাঝামাঝি পর্যায়ে হবে। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। নিজের আত্মসম্মানের সাথে আপোষ করবেন না। পারিবারিক সুখের জন্য বহিরাগতকে হস্তক্ষেপ করতে দেবেন না। পিতার সাথে মতপার্থক্য হতে পারে। তবে আপনার জীবন সঙ্গী আপনার পক্ষে সহায়তা করবে। গাড়ি চালানোর সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন। অপ্রয়োজনীয় ক্রিয়াকলাপে সময় নষ্ট করবেন না। উচ্চপদমর্যাদার ব্যাক্তিরা আপনাকে সহায়তা করতে দ্বিধা করতে পারেন। প্রতিরক্ষা, পুলিশ পরিষেবায় যুক্ত ব্যাক্তিরা এই মাসে কিছু কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারেন।
শুভ দিন - ৩,৪,৯,১৬,১৮,২৫,২৭
অশুভদিন - ১,২,৬,১২,১৯,২০,২৯
শুভ রত্ন - হলুদ পোখরাজ।




















শুক্রবার, ২১ আগস্ট, ২০২০

একটি পূর্ণাঙ্গ কোষ্ঠী প্রণয়ন করতে যে নির্দেশাবলী প্রয়োজন :

একটি পূর্ণাঙ্গ কোষ্ঠী প্রণয়ন করতে যে নির্দেশাবলী প্রয়োজন :


১.জন্মপত্রিকার সূচনার শুরুতেই প্রনামমন্ত্র লিখুন। এটিই কোষ্ঠীর শুভ সূচনা পর্ব। ১

২. জাতক/জাতিকার লোকপ্রকাশিত নাম লিখুন।

৩.পর্যায়ক্রমে লিখে যান -শুভমস্তু, জন্মশকাব্দ, গতমাসাদি, বাংলা সন, জন্মতারিখ, মাসের নাম, জন্মবার, ইংরেজি সাল ও তারিখ, জন্মসময়, দিবা বা নিশাজাত দণ্ডাদি, জন্মপক্ষ, তিথি, নক্ষত্র, রাশি, গণ, বর্ণ ইত্যাদি।

৪. কোষ্ঠীর অলংকার স্বরূপ নিচের সংস্কৃত শ্লোকটি কোষ্ঠী নির্মাণ কালে যথাস্থানে হুবহু লিপিবদ্ধ করুন। যথা -
                                            ওঁ নমঃ
                       শ্রীমৎ পঙ্কজিনী পতিঃ। .............................................
....................................... দীপহীন মিব মন্দিরং নিশি।

৫. নমুনা কোষ্ঠীর ন্যায় "ক্ষেত্রচক্র" স্থাপন করুন।

৬. গ্রহের শত্রু মিত্রাদি চক্র স্থাপন করুন।

৭. জাতক জাতিকার জন্মসময়ের আদর্শ জন্মকুন্ডলী অঙ্কন করুন এবং তাতে লগ্নসহ গ্রহ নক্ষত্রাদি স্থাপন করুন।

৮. একটি পূর্ণাঙ্গ "ভাববিচার চক্র" স্থাপন করুন।

৯. পতাকি চক্র অঙ্কন করুন ও ফলাফল উল্লেখ করুন।

১০. কোষ্ঠীর পরবর্তী অলংকার স্বরূপ নিচের সংস্কৃত শ্লোকটি এইস্থানে সংযোজন করুন।  যথা -
                          অচিন্তব্যাক্ত রূপায়। .............................................................
..................................................... জজসোয়েজং জন্মপত্রিকা"

১১. নমুনা কোষ্ঠীর অনুসৃত পথে পর্যায় ক্রমে স্থাপন করুন - শুভমস্তু, শকাব্দ, মাস, দিবস, বাসর, পক্ষ, তিথি, নক্ষত্র, চরণ, যোগ, করণ, পল, জাতদণ্ড, লগ্ন, হোরা, দেক্কান, নবাংশ, রাশি, গণ, বর্ণ, বিংশোত্তরি দশা ইত্যাদি যথাক্রমে।

১২. এই পর্বে সন্নারি চক্র স্থাপন করুন।

১৩. এই পর্বে দ্বাদশ ভাবের ফল পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে বর্ণনা করুন।

১৪. এই পর্বে জন্মবার ফল, পক্ষফল, তিথিফল, নক্ষত্রফল, জন্মযোগফল, করণফল, হোরাফল, দেক্কান ফল, নবাংশ ফল, লগ্নফল, রাশিফল, গনফল, তুঙ্গফল উল্লেখ করুন।

১৫. ত্রিপাপ চক্র অঙ্কন ও শুভাশুভ বয়ঃক্রমকাল উল্লেখ করুন।

১৬. পুনরায় জন্মকুন্ডলী চক্র স্থাপন করুন।

১৭. এই পর্বে অষ্টবর্গ চক্র স্থাপন করুন এবং প্রয়োজন বোধে ফলাফল উল্লেখ করুন।

১৮. মহা অষ্টবর্গ স্থাপন করুন প্রয়োজনে ফলাফল উল্লেখ করুন।

১৯. বিংশোত্তরি দশা উল্লেখ করুন ও সম্ভব হলে ফল উল্ল্রেখ করুন। প্রয়োজনে শান্তিবিধান দিতে পারেন।

২০. এটি অন্তিম পর্ব। এই স্থানে জ্যোতিষী স্বাক্ষর করবেন ও তারিখ লিখবেন।























বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট, ২০২০

কোষ্ঠী রচনা সহজ করতে বিভিন্ন গ্রহানুযায়ী বিংশোত্তরী মহাদশা ফলাফল

বিভিন্ন গ্রহানুযায়ী বিংশোত্তরী মহাদশা ফলাফল


রবির মহাদশা (৬ বছর)

রবির শুভ দশায় কীর্তি , জ্ঞানযশবৃদ্ধি এবং সন্তানলাভ হয়ে থাকে। জাতক জাতিকার পিতারও শুভ হয়। অশুভ রবির মহাদশায় রোগ, রাজদণ্ড ভয়, অগিনভয় প্রভৃতি অশুভ ফল লাভ হয়ে থাকে। পিতার ও অশুভ হয়। রবি মূলত্রিকোণে, স্বক্ষেত্রে, স্বীয় উচ্ছক্ষেত্রে, কেন্দ্রে, কোন বা একাদশে অবস্থান করলে বা নবমপতি বা দশমপতি যুক্ত হলে বর্গবলে বলীয়ান হলে - এরূপ রবির মহাদশাকালে মহাসুখ, অর্থলাভ, রাজসম্মান, উত্তম যানবাহনাদি জনিত সুখ হয়।  এইরূপ শুভ রবি পঞ্চমপতিম যুক্ত হলে দশাকালে পুত্রলাভ হয়।  দ্বিতীয়পতি যুক্ত হলে ঐশর্য বৃদ্ধি হয় , চতুর্থপতি যুক্ত হলে উত্তম বাহন লাভ হয়। রবি অনুরূপভাবে বলবান হলে জাতক সুখী, ধনী, বস্ত্র ও বাহনাদি লাভ করে থাকবে।
জাতক জাতিকার জন্মকালে রবি নীচস্থ, দুঃস্থানগত, পাপগ্রহ যুক্ত হলে, রাহু বাকেট যুক্ত হলে- এরূপ রবি দশাকালে রোগ, ধনধনাদি ক্ষয়,ধনক্ষয়,প্রবাস,এবং রাজদণ্ড হেতু ক্ষতি, জ্বরাদি রোগ, যশোহানি, বন্ধুজন সোহো বিরোধ, পিতার কষ্ট, পারিবারিক অমঙ্গল প্রভৃতি অশুভ ফল লাভ হয়ে থাকে। অনুরূপ অশুভ রবি পাপগ্রহ দ্বারা দৃশ্য হলে রবির অশুভ কারকতাই বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।

চন্দ্রের মহাদশা (১০ বছর)

উৎকৃষ্ট চন্দ্রের দশায় ভূমি বৃদ্ধি, আরাম ও সুখবৃষ্টি হয়।  এবং গৃহাদি শ্রী বা শোভামন্ডিত হয়ে থাকে। জাতক মাতার থেকেও সুখলাভ করে থাকে। অশুভ চন্দ্রের দশায় অন্নাভাব, অর্থহানি, বুদ্ধিনাশ, হিংসাবৃদ্ধি, মাতার কষ্ট এবং শীত জ্বরাদি কারণে কষ্ট ভোগ করতে হয়।
চন্দ্র স্বক্ষেত্র, উচ্চস্থানে, কেন্দ্রে, একাদশে বা ত্রিকোণে শুভ যুক্ত হয়ে অবস্থান করলে এবং বলবান ও শুভ চন্দ্রের দশায়ন্তর্দশায় অত্যন্ত শুভফল লাভ হয়ে থাকে। অনুরূপ ভাবে, শুভ চন্দ্র দশমপতি, ভাগ্যপতি ও চতুথপতি যুক্ত হয়ে বলবান চন্দ্রের দশায়  শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সৌভাগ্যবৃদ্ধি,ধনধান্যবৃদ্ধি , সুখবৃদ্ধি, বাহনবৃদ্ধি, গৃহে শুভকর্ম, রাজতুল্য ব্যাক্তির দর্শন বা সান্নিধ্য লাভ,উদ্যম বা প্রচেষ্টায় সাফল্য, গৃহে লক্ষি শ্রী প্রভৃতি শুভফল লাভ হয় থাকে। এইরূপ চন্দ্রের দশায় বন্ধুবান্ধব, এবং উচ্চ পদস্থ ব্যাক্তির সহায়তায় অর্থ ও মর্যাদা বৃদ্ধি হয়ে থাকে। শুভ চন্দ্রের দশায় পুত্রলাভ ও হতে পারে।
জাতক জাতিকার জন্মকালেচন্দ্র দ্বিতীয়ে, স্বক্ষেত্রে বা স্বীয় উচ্চ ক্ষেত্রে অবস্থান করলে এরূপ চন্দ্রের দোসাওন্তর্দশা কালে ভাগ্যবৃদ্ধি, অর্থলাভ, মহাসুখ, রাষ্টীয় বৃত্তিলাভ প্রভৃতি শুভফল লাভ হয়।
চন্দ্র নীচস্থ হলে এরূপ দশাকালে ধনহানি হবে। কিন্তু চন্দ্র দুঃস্থানগত হয়েও বলবান হলে কখনো কখনো সুখ এবং অর্থলাভ হবে। চন্দ্র দুর্বল এবং পাপযুক্ত হলে এরূপ দশাকালে দৈহিক রোগ,এবং মানসিক কষ্ট,সূচিত হবে। অর্থহানি, মাতা বা মাতৃকুলের কারুর মৃত্যু হতে পারে।
চন্দ্র দুঃস্থানগত হয়ে যদি বলহীন এবং পাপযুক্ত হয় তবে রাজদ্বেষ, মাতার কষ্ট,অনুতাপ, দৈহিক রোগ, মানসিক কষ্ট সূচিত হবে। চন্দ্র দুঃস্থানগত হয়েও বলবান হলে কখনো সুখ ও অর্থলাভ হবে তবে দৈহিক কষ্ট ও মানসিক কষ্ট ভোগ করতেই হবে।

মঙ্গলের মহাদশা ( ৭ বছর ) ফলাফল :

উৎকৃষ্ট মঙ্গলের দশায় ভূসম্পত্তি ও গৃহাদি লাভ, বুদ্ধির প্রাখর্য, পরাক্রমবৃদ্ধি, রাজ্ সম্মান প্রভৃতি লাভ হয়ে থাকে।
অশুভ মঙ্গলের দশায় ভাতৃ পীড়া, হানি, সন্তান কষ্ট, স্ত্রী কষ্ট, কলহ, চৌর ভয়, ক্ষতাদিরগ, ভূমিনাশ, শত্রুবৃদ্ধি, পদচ্যুতি ও পরাজয় ঘটে। মঙ্গল নীচস্থ, দুস্থানগত, পাপযুক্ত, ও পাপদৃষ্ট হোম মঙ্গলের দশাকালে উপরি উল্লেখিত অশুভ ফলাদি লাভ হয়ে থাকে।
মঙ্গল সুতুঙ্গী হলে, উচস্থ হলে, স্বক্ষেত্র অথবা স্বীয় মূলত্রিকোণে অবস্থান করলে স্বদশায় শুভফল প্রদান করবে। কেন্দ্রে, ত্রিকোণে, একাদশে বা দ্বিতীয় অবস্থিত হলে ও মঙ্গল আধিপত্যবৃদ্ধি, ভূমীলাভ এবং অর্থলাভদির কারক হবে। এবং এরূপ মঙ্গলের দশাকালে রাষ্ট্রীয় সম্মানলাভ, ধনসম্পত্তিবৃদ্ধি, ভাতৃসুখ, মর্যাদা লাভ ও পদোন্নতি ঘটার সম্ভাবনা থাকে।
মঙ্গল সপ্তমস্থান ব্যাতিত ওপর কোনো কেন্দ্রে অবস্থিত হলে এবং লগ্নের ষষ্ঠ ভাব বলবান হলে মঙ্গলের দশায় জাতক নিজের প্রচেষ্টায় সাফল্য, প্রতিষ্ঠালাভ এবং ধনসম্পদ লাভ করবে। এরূপ মঙ্গলের দশায় ও অন্তর্দশায় জাতক বিবাদে বা যুদ্ধে অবশ্যই জয়লাভ করবে। মঙ্গলের দশায় প্রথমভাগ শুভপ্রদ, শেষভাগ কষ্টসুচক হয়ে থাকে।
অশুভ মঙ্গলের দশায় মাতৃহানি বা পত্নীহানি ঘটতে পারে।

রাহুর মহাদশা ( ১৮ বছর )

পরাশরের মোতে বৃষরাশি রাহুর তুঙ্গ বা উচ্চস্থান (বৃশ্চিকরাশি কেতুর তুঙ্গ বা উচ্চস্থান) কর্কট ও মিথুনরাশি রাহুর মূলত্রিকোনস্থান (মকর ও ধনুরাশি কেতুর মূলত্রিকোনস্থান), রাহুর স্বক্ষেত্র কন্যারাশি (কেতুর স্বক্ষেত্র মীনরাশি ) জাতকের জন্মকালে রাহু উপরিউক্ত স্থানাদিতে অবস্থিত হলে দশাকালে বহুসখ্য এবং ধনধান্য ও সম্পদাদি প্রদান করে। রাহু শুভগ্রহ দ্বারা যুক্ত বা দৃষ্ট হলে কিংবা রাজযোগকারক বা সৌভাগ্য যোগকারক কোনরূপ সন্মন্ধে আবদ্ধ হলে রাহুর মহাদশাকালে বন্ধুজন এবং প্রভু জাতকের বশীভূত থাকেন। গৃহনির্মাণ বা গৃহলাভ ঘটে। বাহনাদির ও অধিকারী হওয়া যায়। এরূপ শুভ রাহু তদীয় মহাদশাকালে পুত্রলাভ, ধর্মচিন্তা, ও গৃহে উৎসবাদী অনুষ্ঠানের কারক হয়ে থাকে। যারা দূরদেশে বিদ্যালাভ বা সম্মানজনক কার্যাদির জন্য গমন করেন - উচস্থ, মূলত্রিকোনস্থ বা শুভরাশিস্থ বলবান রাহু এরূপ ভ্রমণের কারক হয়ে থাকে।
রাহু কেন্দ্রে, কোনে, একাদশে শুভরাশিস্থ হলে রাজতুল্য ব্যাক্তির কৃপালাভ হয়, সম্পদ ও সুখবৃদ্ধি হয়। এরূপ রাহুর দশায় জাতক প্রভুর দ্বারা সম্মান ও প্রতিষ্ঠা লাভ এবং গৃহে কল্যাণকর্মাদি অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
রাহুর লগ্নের অষ্টমে বা দ্বাদশে অবস্থিত হলে রাহুর মহাদশাকালে কষ্টপ্রদ হবে। পাপগ্রহের সঙ্গে রাহু কোনোরূপ সন্মন্ধে আবদ্ধ হলে, মারক গ্রহ যুক্ত হলে বা নিচ রাশিস্থ হলে এরূপ মহাদশায় স্থাননাশ এবং মানসিক কষ্ট সূচিত হতে পারে।
এরূপ রাহুর মহাদশায় স্ত্রী পুত্রাদি হানি এবং কুঅন্ন ভোজন করতে বাধ্য হতে হবে। এরূপ রাহুর মহাদশায় প্রথমভাগে শারীরিক রোগ এবং অর্থহানি ঘটে, মহাদশার মধ্যভাগে সখ্যবৃদ্ধি ও ধনলাভ হয় এবং মহাদশায় শেষভাগে মানসিক কষ্ট এবং শারীরিক কষ্ট এবং স্থাননাশ বা স্থানচ্যুতি ঘটিয়ে থাকে।

বৃহস্পতির মহাদশা ( ১৬ বছর )

বৃহস্পতির উৎকৃষ্ট দশায় গ্রামাদি বিপুল ভূখণ্ডের ওপর আধিপত্য বিস্তার, পুত্রাদির শ্রী ও সৌভাগ্য বৃদ্ধি, নিজের সম্মান ও আনন্দ বৃদ্ধি প্রভৃতি শুভফল লাভ হয়ে থাকে।
বৃহস্পতির অশুভ বা পাপদশায় রাজদণ্ডজনিত ভয়, রোগ, ধর্মহানি, সম্মানহানি, ধৈর্যচ্যুতি, অর্থহানি, অমঙ্গল প্রভৃতি সূচিত হয়।
বৃহস্পতি স্বক্ষেত্রে, উচ্চ ক্ষেত্রে, কেন্দ্রে, একাদশে,ত্রিকোণে, মূলত্রিকোণে, তুঙ্গে অবস্থিত হলে এরূপ মহাদশায় রাজতুল্য সুখ ও সমৃদ্ধি, মহাসুখ, রাষ্ট্রীয় সম্মান, যানবাহনাদি লাভ, পুণ্যকর্ম, স্ত্রী ও পুত্রাদির সাফল্য এবং রাজতুল্য ব্যাক্তির অনুগ্রহে অভীষ্ট সিদ্ধি ঘটে। এরূপ বৃহস্পতির মহাদশাকালে স্ত্রীলাভ, পুত্রলাভ, অন্নদান ও কল্যাণকর্মাদি অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
বৃহস্পতি নিশরাশিস্থ, অস্তগত, পাপগ্রহ যুক্ত হলে বা লগ্নের দ্বাদশে বা অষ্টমে থাকলে অথবা অষ্টমপতি বা দ্বাদশপতি যুক্ত হলে এরূপ বৃহস্পতির মহাদশাকালে স্থাননাশ, মনস্তাপ, পুত্রের সঙ্কটজনক রোগ, মহাভয়, গৃহপালিত পশুর হানি, ও অর্থহানি প্রভৃতি অশুভ ফল লাভ হয়। বৃহস্পতির মহাদশায় প্রথমভাগে কষ্টভোগ ও শেষভাগে সুখ ও রাষ্ট্রীয় সম্মানাদি লাভ হয়।

শনির মহাদশা ( ১৯ বছর)

শনির উৎকৃষ্ট মহাদশায় বিভবলাভ, প্রক্ষালাভ, এবং পুণ্যকর্মাদি অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। গ্রাম, ক্ষেত্র ও পুরাদিতে অসামান্য প্রভাব বা অধিকার বিস্তারের সুযোগ লাভ হয়।
অশুভ শনির দশায় বা শনির পাপদশায় বিষভয়, দৈহিক কষ্ট, ব্যার্থতা, রাজদণ্ড, রাষ্ট্রবিরোধী কার্যে লিপ্ত বা সরকার বিরোধী কার্যে লিপ্ত হওয়া এবং রোগ প্রভৃতি অশুভ ফল লাভ হয়ে থাকে।
শনি স্বক্ষেত্র, উচ্চক্ষেত্র, মিত্রক্ষেত্র, মূলত্রিকোণে, তুঙ্গে, লগ্নের দশম স্থানে বা একাদশে অবস্থিত হলে এরূপ মহাদশাকালে রাষ্ট্রীয় সম্মান, বৈভব, সৎকীর্তি স্থাপন, অর্থলাভ, বিদ্যাবিষয়ে খ্যাতি প্রভৃতি শুভফল প্রদান করে থাকে।
অনুরূপভাবে, শনি যোগকারক হলে রাজযোগের ফল প্রদান করে থাকে। অতএব এরূপ শনির মহাদশাকালে মহাসুখ, লক্ষীলাভ, পত্নীলাভ, পুত্রলাভ এবং গৃহে কল্যাণকর্মাদি অনুষ্ঠিত হয়।
শনি শুভগ্রহের সঙ্গে সন্মন্ধযুক্ত হলে কেন্দ্রে, ত্রিকোণে, বা একাদশে থাকলে, মীনে অথবা ধনুতে অবস্থিত হলে মহাসুখ, বিপুল ভূখণ্ড লাভ, বা বিপুল ভূখণ্ডের উপর অধিকার বা প্রভাব বিস্তার এবং রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রভৃতি শুভফল লাভ হয়ে থাকে।
শনি ষষ্ঠে, অষ্টমে, দ্বাদশে অবস্থিত হলে, নিচক্ষেত্রে বা অস্তগত হলে এরূপ মহাদশায় বিষ ভয়, শস্ত্রাদির আঘাতজনিত রোগ, স্থাননাশ, মহাভয়, পিতৃমাতৃবিয়োগ, স্ত্রীপুত্রাদির রোগ, সরকার বিরোধী কাজে লিপ্ত হওয়া, এমনকি কারাবাস ও হওয়া সম্ভাবনা থাকে।

বুধের মহাদশা ( ১৭ বছর )

উৎকৃষ্ট বা শুভ বুধের দশায় বসনভূষণাদি লাভ, ধনলাভ, ধান্যলাভ, লক্ষীলাভ, সখ্য, বন্ধুলাভ, উদ্দমে বা প্রচেষ্টায় সাফল্য, অভীষ্টসিদ্ধি প্রভৃতি শুভফল লাভ হয়ে থাকে।
অশুভ বা পাপ বুধের দশায় বিদেশে বা প্রবাসে ব্যর্থ ভ্রমণ, লোভ, বন্ধুহানি, হীনমন্যতা, রোগ, কলহ সূচিত করে।
বুধ স্বক্ষেত্র, উচ্চক্ষেত্র, কেন্দ্রে, একাদশে, ত্রিকোণে, মিত্রক্ষেত্রে অবস্থিত হলে - এরূপ বুধের মহাদশাকালে সুখ, সখ্য, ধনধন্যাদি বৃদ্ধি, সৎকীর্তি, গুণবত্তা ও জ্ঞানবৃদ্ধি, রাষ্ট্রীয় সমাদর, সৎকর্মে আত্মনিয়োগ প্রভৃতি শুভফল লাভ হয়ে থাকে। এরূপ বুধের মহাদশাকালে পারিবারিক বিষয়ে সুখবৃদ্ধি হয় এবং শারীরিক ও মানসিক সুখলাভ হবার সম্ভাবনা। অনুরূপ শুভ বুধ শুভগ্রহ দৃষ্ট হয়ে ভাগ্যপতি এবং কর্মপতির সঙ্গে সন্মন্ধে আবদ্ধ হলে - মহাদশাকালে পূর্ণ শুভফল লাভ হয়।
বুধ পাপগ্রহ যুক্ত বা দৃষ্ট হলে - সরকারি বিদ্বেষ, মানসিক কষ্ট, বন্ধুবিরোধ, প্রবাসে বা বিদেশে বার্থ ভ্রমণ প্রভৃতি অশুভ ফল লাভ হয়ে থাকে।
বুধ লগ্নের ষষ্ঠে, অষ্টমে বা দ্বাদশে অবস্থিত হলে, পাপগ্রহযুক্ত বা দৃষ্ট হলে - এরূপ মহাদশাকালে পরের দাসত্ব, কলহ, মূত্রকৃচ্ছপীড়াদি, রাজদণ্ডভোয়, চৌরভয়, অগ্নিভয়,কৃষি ও গোধনাদি নাশ প্রভৃতি অশুভ ফল লাভ হয়।
পাপ বুধের মহাদশায় প্রথমভাগে শুভফল লাভ হলেও শেষভাগে দুঃখপ্রদ হয়ে থাকে।


কেতুর মহাদশা (৭ বছর)

কেতুর কোনো দৃষ্টি নেই। উৎকৃষ্ট কেতুর মহাদশাকালে জয়, সাফল্য, নানাবিধ কর্মাদির মাধ্যমে অর্থলাভ, ম্লেচ্ছ বা বিধর্মীর সাহায্যে ভাগ্যোন্নতি, শত্রু হানি প্রভৃতি শুভফল লাভ হয়ে থাকে।
অশুভ কেতুর পাপদশায় অতিশয় কষ্ট, শুলরোগ, অস্থিজ্বর বা অস্থি সম্পর্কিত রোগ, কম্পন, ব্রাম্ভনবিদ্বেষ, মূর্খজনোচিত ক্রিয়াকর্মাদির অনুষ্ঠান প্রভৃতি অশুভ ফল লাভের সম্ভাবনা।
কেতু কেন্দ্রে, একাদশে, ত্রিকোণে অথবা শুভরাশিগত হলে এবং শুভ গ্রহ দৃষ্ট হলে বা নিজ উচ্চক্ষেত্রে বা শুভবর্গে অবস্থিত হলে এরূপ মহাদশাকালে রাষ্ট্রীয় করতিপক্ষের সহযোগিতা, মানসিক সুখ, দেশ গ্রাম প্রভৃতির ওপর আধিপত্য, যানবাহনাদি লাভ, পুত্রলাভ, প্রবাসে বা বিদেশে গমন এবং তজ্জনিত সুখলাভ প্রভৃতি শুভফল লাভ হয়ে থাকে।
তৃতীয়ে, ষষ্ঠে বা একাদশে কেতু অবস্থিত হলেও - অনুরূপ শুভফল প্রদান করে থাকে। কেতু মিত্র নবাংশে  অবস্থিত হলে - এরূপ মহাদশায় প্রথমভাগে রাজযোগের ন্যায় শুভফল প্রদান করে, কিন্তু দশার মধ্যভাগে ত্রাসজনক অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।
কেতু দ্বিতীয়, অষ্টমে কিংবা দ্বাদশে অবস্থিত হলে - এরূপ মহাদশাকালে ব্যর্থ ভ্রমণ, হৃদরোগ, মানহানি, বন্ধুহানি, অর্থব্যয়, বন্ধন, স্থাননাশ প্রভৃতি অশুভ ফল লাভ হয়ে থাকে। এরূপ মহাদশাকালে নিচ জাতীয়ের সংসর্গ, নানারোগ, ধনধান্যহানি, পশুক্ষয়, মানসিক চাঞ্চল্য প্রভৃতি অশুভ ফল লাভ হয়ে থাকে।

শুক্রের মহাদশা (২০ বছর)

শুক্রের উৎকৃষ্ট দশায় - সুখ, সৌভাগ্য, শ্রী, ঐশর্য, ধর্মচিন্তা, রত্নাদি ভূষণে অলংকৃত এবং গীত ও উৎসবাদী অনুষ্ঠিত হবার সম্ভাবনা।
শুক্রের অশুভ বা পাপদশায় - স্ত্রী পুত্রাদির হানি, নানাবিধ অশান্তি, পারিবারিক ব্যাধিজনিত কষ্ট, অর্থহানি, স্ত্রীলোকের কারণে অশান্তি প্রভৃতি অশুভ ফল লাভ হয়ে থাকে।
শুক্র সুতুঙ্গী হলে, উচ্চক্ষেত্রে, স্বক্ষেত্রে, কেন্দ্রে, ত্রিকোণে অথবা একাদশে থাকলে এবং পাপগ্রহ দ্বারা যুক্ত নাহলে এরূপ শুক্রের মহাদশাকালে রাজকীয় মর্যাদা এবং আধিপত্বলাভ, বাহনাদিলাভ, নিত্য মিষ্টান্নভোজন, গৃহে লক্ষীর অধিষ্ঠান হয় এবং উৎসবাদী অনুষ্ঠিত হয়।
শুক্র মীনরাশিতে ত্রিকোনস্থ হলে এরূপ মহাদশাকালে গৃহে বিবাহাদি উৎসব, পুত্রকল্যানে বৈভব বৃদ্ধি, সেনা বা দলের অধিনায়কত্ব লাভ, গৃহে আত্মীয় ও বন্ধু সমাগম হয়। গৃহে বা খামারে গোধনাদি বৃদ্ধি হয়। এরূপ মহাদশাকালে নষ্ট ভূসম্পত্তি পুনরুদ্ধার হতে পারে। বা হৃত আধিপত্য পুনরায় লাভ হতে পারে।
শুক্র নবমপতি বা দশম পতির সঙ্গে একত্রে লগ্নে বা চতুর্থে সহাবস্থান করলে - এরূপ মহাদশাকালে মহাসুখ এবং প্রভূত আধিপত্য লাভ হয়। পুণ্যকর্ম, দানধর্ম, সক্ষবৃদ্ধি, কীর্তিলাভ, দেবালয় নির্মাণ, অন্নদান প্রভৃতি আনন্দদায়ক শুভফল লাভ হয়ে থাকে।
শুক্র ষষ্ঠে, অষ্টমে বা দ্বাদশে থাকলে, নীচস্থ বা পাপগ্রহযুক্ত হলে এরূপ মহাদশাকালে আত্মীয় - বন্ধুজনের হিংসা, স্ত্রীপুত্রাদির রোগ, ব্যাবসায়ে ক্ষতি, গো-মহিষাদির হানি, আত্মীয় বা বন্ধুজনের মৃত্যু প্রভৃতি ফললাভ হয়ে থাকে।
শুক্র জন্মকুণ্ডলীতে দ্বিতীয় বা সপ্তমে থাকলে এরূপ শুক্রের মহাদশাকালে অত্যন্ত কষ্টের হয়ে থাকে। এমনকি জাতকের মৃত্যু ও ঘটতে পারে।





































































































গ্রহগণের রাশিচক্র ভ্রমণের সময়

                গ্রহ                                      এক রাশি ভ্রমণের সময়                                     দ্বাদশ রাশি ভ্রমণের সময়

রবি                                          ১ মাস                                                         ১২ মাস
চন্দ্র                                            ২ দিন ১৫ দণ্ড                                              ২৭ দিন
মঙ্গল                                         ৪৫ দিন                                                       ৫৪০ দিন
বুধ                                           ১৮ দিন                                                       ২১৬ দিন
বৃহস্পতি                                    ১ বছর                                                         ১২ বছর
শুক্র                                            ২৮ দিন                                                        ২২৬ দিন
শনি                                           আড়াই বছর                                                  ৩০ বছর
রাহু                                            দেড় বছর                                                     ১৮ বছর
কেতু                                           দেড় বছর                                                     ১৮ বছর

গ্রহগণের উচ্চ ও সুউচ্চ, নীচস্থ বিচার

গ্রহ                         উচ্চরাশি                   সুউচ রাশি                     নিচ রাশি                   সুনিচ্যাংশ

রবি                        মেষ                          ১০ ডিগ্রি                          তুলা                         ১০ ডিগ্রি
চন্দ্র                        বৃষ                              ৩ ডিগ্রি                          বৃশ্চিক                      ৩ ডিগ্রি
মঙ্গল                      মকর                            ২৮ ডিগ্রি                       কর্কট                      ২৮ ডিগ্রি
বুধ                        কন্যা                             ১৫ ডিগ্রি                       মীন                          ১৫ ডিগ্রি
বৃহস্পতি                কর্কট                             ৫ ডিগ্রি                          মকর                         ৫ ডিগ্রি
শুক্র                      মীন                               ২৭ ডিগ্রি                        কন্যা                         ২৭ ডিগ্রি
শনি                       তুলা                               ২০ ডিগ্রি                       মেষ                           ২০ ডিগ্রি
রাহু                       মিথুন                              ২০ ডিগ্রি                       ধনু                            ২০ ডিগ্রি
কেতু                    ধনু                                    ২০ ডিগ্রি                      মিথুন                         ২০ ডিগ্রি     



















বুধবার, ১৯ আগস্ট, ২০২০

কোন গ্রহ কি ভাব প্রকাশ করে এবং তা থেকে কি বিচার করবেন ?

কোন গ্রহ কি ভাব প্রকাশ করে এবং তা থেকে কি বিচার করবেন ?


রবি - তনু, শত্রু, কর্ম ও জাগতিক উন্নতি এবং পিতার কারক। অর্থাৎ লগ্ন, ষষ্ঠ এবং দশম ভাবের কারকগ্রহ রবি। 

চন্দ্র - মন, মাতা, বিদ্যা, সুখ এবং দেহপুষ্টির কারক তথা চতুর্থভাবের কারক।

মঙ্গল - সাহস, বিক্রম ও ভ্রাতা ভগিনী বা তৃতীয়ভাব, রোগ, শত্রু তথা ষষ্ঠভাব, দুর্ঘটনা, মামলা-মোকদ্দমা বা অষ্টম ভাব এবং ভূমি ও গৃহাদির বা চতুর্থভাবের কারক। মঙ্গল শুভ হলে জাতক সাহসী, কর্মঠ ও অধ্যাবসায়ী হবে। জাতকের ভ্রাতাভগিনীও শুভ হবে। মামলা-মোকদ্দমা ও ভূমি এবং গৃহাদির ব্যাপারে শুভ ফল লাভ হবে। বিপরীতে এই সকল ফলের বিপরীত হবে। মঙ্গল সন্মন্ধে বিশেষ বিধি- তৃতীয়স্থ মঙ্গল সবল হলে ভ্রাতাভগিনীর পক্ষে অশুভ, আর দুর্বল হলে তাদের দীর্ঘায়ু লাভ হবে।

বুধ - চতুর্থ, পঞ্চম ও দশম ভাবের কারক। বুধ বিদ্যা,বুদ্ধি, কর্ম ইত্যাদির কারক গ্রহও বটে।

বৃহস্পতি - ধন, কর্ম, ধর্ম, পুত্র ও বুদ্ধি, আয়, বিদ্যা ও প্রজ্ঞার কারক। অর্থাৎ সেই অর্থে দ্বিতীয়, নবম, দশম, পঞ্চম, একাদশ ও চতুর্থ ভাবের ও কারক গ্রহ হলেন বৃহস্পতি।

শুক্র - চতুর্থ, পঞ্চম, সপ্তম ও দশম ভাবের কারক। মুখ্যত সপ্তম ভাবের কারক গ্রহ হলেন শুক্র।

শনি - মৃত্যু, আয়ু, ঝঞ্ঝাট ও বিশৃঙ্খলা, কর্ম এবং ব্যায়ের কারক। অর্থাৎ শনি সেই অর্থে অষ্টম, দশম এবং দ্বাদশ ভাবের কারক।

ভাববিচারকালে এই সকল সংকেত বা সাধারন নিয়মগুলি স্মরণে রাখতে পারলে কোষ্ঠী বিচার অধিক পরিমানে সহজ হয়ে উঠবে। 

রবিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২০

রত্নের কিছু প্রচলিত ভুল ধারণা

রত্নের কিছু প্রচলিত ভুল ধারণা


অনেক জ্যোতিষী চন্দ্রের জন্য মুক্ত ধারণ করতে বলেন, কিন্তু এটি ঠিক প্রতিকার নয়। মুক্ত চন্দ্র ও বৃহস্পতির মিলিত গ্রহের ক্রিয়ার জন্য। বৃহস্পতি শুভ হলে মুক্ত ধারণ করা ঠিক নয়। পান্না শুধু বুধের নয়, কেতুরও রত্ন। পোখরাজ ও বুধের রত্ন। পিতপোখরাজ বৃহস্পতি ও বুধের মিলিত গ্রহের ক্রিয়া দেয়। শনির ও কিছুটা কাজ করে।

রত্ন ধারণ করে সুফল না পাওয়ার কারণ এটি আরেকটি বলা যায়। সঠিক গণনা ও নির্ভুল বিচারের মাধ্যমে রত্ন ধারণ করা কর্তব্য।




শনিবার, ১৫ আগস্ট, ২০২০

ভাববিচারের সাধারণ নিয়ম

ভাববিচারের সাধারণ নিয়ম

১. জন্মলগ্ন এবং রাশি উভয় হতে ভাববিচার আবশ্যক। তারপর ভাব এবং ভাবপতি গ্রহের কারকতা , ভাবস্থ গ্রহের কারকতা , নৈসর্গিক শুভ এবং পাপগ্রহের কারকতা , ভাবপতির গ্রহগণের চার প্রকার সন্মন্ধজনিত কারকতা, গ্রহবল, ভাববল , গ্রহগণের শত্রুমিত্রাদি ক্ষেত্রে বস্থান ও দৃষ্টি হতে ফল বিচার আবশ্যক।

২. ভাব রাশিগত গ্রহ শুভ বা পাপ যাইহোক না কেন , সেই গ্রহ ভাবে সম্পূর্ণভাবে শুভাশুভ ফল প্রদান করবে। ভাবস্থ গ্রহ অপেক্ষা ভাবদর্শী গ্রহ স্বল্প ফল প্রদান করবে। এবং ভাবদর্শী গ্রহ অপেক্ষা ভাবপতি গ্রহ নূন্যতম ফলদাতা হবে।

৩. ভাবস্থ গ্রহগণের নিজস্ব কারকতা এবং বলাবল অনুসারে ভাবের উপরে আশ্রয়গত ফল দান করবে। গ্রহগণ নৈসর্গিক পাপ, শুভ, শত্রু মিত্রাদি ক্ষেত্রে অবস্থান বা দৃষ্টি ভেদে আশ্রয়গত শুভাশুভ ফল দান করে থাকে। তারপর ভাবাশ্রয়ে গ্রহগণ ভাবপতি জনিত ফল সেই গ্রহের শত্রুমিত্র সম- ভাবাত্মক গ্রহের সঙ্গে সম্মন্ধ করে, সেই শত্রুমিত্রাদি সন্মন্ধের মধ্য হতে যে ভাবে আশ্রয় গ্রহণ করবে, সেইভাবে কারকতাকে অবলম্বন করে শুভাশুভ ফলদান করবে। গ্রহগণের দশাভোগের সময় এবং গোচরে সন্মন্ধ হলে , সেই সময় ওই ফল লাভ হয়। ভাবপতি গ্রহ ভাবাশ্রিত রাশির সন্ধি হলে ডিগ্রিতে থাকলে, সেই সন্ধি ডিগ্রির পূর্বাপর যে ভাব পড়বে , ভাবপতি গ্রহ সেই ভাবেই ফলপ্রদান করবে ; পক্ষান্তরে সন্ধি ডিগ্রিতে অবস্থিত গ্রহগণ রাশিতে নিজস্ব কারকতা অনুসারে মাত্র আশ্রয় ফল প্রদান করবে।

৪. দ্বাদশভাবের মধ্যে যে যেভাবে শুভগ্রহ অবস্থান করবে , সেই সেই ভাবের উপরে স্বকীয় কারকতা বা গুনধর্মানুসারে শুভফলের বৃদ্ধি করবে। এই নিয়মে পাপগ্রহগণ যে যেভাবে অবস্থান করবে - সেই সেই ভাবফলের ক্ষতি করবে। যদি কোনো গ্রহ শুভ ভাবের অধিপতি হয়ে অশুভভাবে অবস্থান করে এবং সেই গ্রহ যদি শুভভাবপতি গ্রহের সঙ্গে সম্মন্ধ স্থাপন করে , তাহলে অশুভভাবে অবস্থান করলেও, ভাবে শুভ ফল প্রদান করবে। অন্যথায় অশুভ ফলদাতা হবে।

৫. নৈসর্গিক পাপগ্রহ এবং অশুভ ভাবপতি গ্রহ উভয়ে বলবান হয়ে নৈসর্গিক শুভগ্রহের বর্গে অবস্থান করলে শুভ ফলদাতা হবে। শুভগ্রহ এবং শুভভাবপতি গ্রহ যদি নৈসর্গিক পাপগ্রহের বর্গে অবস্থান করে পাপগ্রহ কর্তৃক দৃষ্ট বা যুক্ত হয়, তাহলে তারা অত্যধিক অশুভফলদাতা হবে।

৬. প্রত্যেক ভাবের বিষয়সমূহ দেহ, মন ও আত্মাকে অবলম্বন করে বিকাশলাভ করে থাকে। সেই কারণে ভাববিচারে সর্বসময় লগ্ন, লগ্নপতিগ্রহ, জন্মচন্দ্র, ও জন্মরবি এই চারটি বিষয় পরস্পরের সম্মন্ধ বিচার আবশ্যক। তারপর যেকোনো ভাববিচার আবশ্যক হবে, সেই ভাব এবং ভাবপতি গ্রহের উপর শুভ ও পাপগ্রহ এবং শত্রু মিত্র গ্রহের দৃষ্টি লক্ষ্য রেখে বিচার করতে হয়। কারণ উপরি বর্ণিত বিষয় দুটি হতে ভাবপতি গ্রহ তার নিজস্ব কারকতা অনুসারে শুভাশুভ ফল দশা এবং অন্তর্দশা এবং গ্রহ গোচরের মধ্য হতে প্রদান করে থাকে।

৭. নৈসর্গিক শুভগ্রহের রাশিতে যেকোনো নৈসর্গিক শুভগ্রহ অবস্থান করে শুভগ্রহ দৃষ্ট হলে, সেই রাশি সূচিত ভাব অতিশয় বলবান হয়ে শুভ ফলদাতা হবে; পক্ষান্তরে, যদি কোনো ভাব রাশিতে কোনো শুভ গ্রহ অবস্থান করে এবং ওই ভাবপতি গ্রহ দুর্বল হয়, তাহলে সেই ভাবের আংশিক শুভফল লাভ হবে মাত্র। তারপরে ভাবপতি গ্রহ যদি সবল হয় এবং ভাবরাশিতে দুর্বল গ্রহ থাকে, তাহলে সেই ভাবের আংশিক অশুভ ফল লাভ হবে।

৮. যেকোনো ভাবরাশিতে ষষ্ঠ ও অষ্টমতি গ্রহ থাকলে, সেই ভাবপতি গ্রহ যদি বলবান ও হয়, তাহলে সেই ভাবের ফল অশুভ হবে। এইরূপস্থলে ষষ্ঠ ও অষ্টমতি গ্রহদ্বয় যদি মিত্রভাব রাশিতে থেকে মিত্র এবং নৈসর্গিক শুভগ্রহ কর্তৃক দৃষ্ট হয়, তাহলে ভাবফলের আংশিক অশুভ ফল দান করবে। তারপর ষষ্ঠ এবং অষ্টমতি গ্রহ যেভাবে থাকবে - সেই ভাব হতে যদি লগ্নের নবম ভাব তাদিগের দৃষ্টি থাকে, তাহলে ভাবপতি গ্রহ শ্রেষ্ঠ বলী হলেও ভাবফলের সম্পূর্ণ অশুভ ফল প্রদান করবে। ঐ ভাবপতি গ্রহদ্বয়ের যদি লগ্নের নবম দৃষ্টি না থাকে, তাহলে ভাবফলের শুভ হবে। ষষ্ঠ ও অষ্টমতি গ্রহ যদি ষষ্ঠ এবং অষ্টমে অর্থাৎ স্বগৃহে থাকে, তাহলে অশুভ ফলদাতা হবেনা।

৯. নৈসর্গিক পাপগ্রহ যদি কোনো ভাবরাশির উভয় পার্শে থাকে অথবা কোনো ভাবফল হতে চতুর্থ, অষ্টম, পঞ্চম বা নবমে থাকে তাহলে সেই ভাবফল সম্পূর্ণ অশুভ হবে। ঐ নিয়মে যদি শুভগ্রহ অবস্থান করে তাহলে ভাবফলের বৃদ্ধি হয়ে শুভ হবে।

১০. লগ্নাধিপতি, পঞ্চমাধিপতি, নবমপতি ও দশমাধিপতি গ্রহ নৈসর্গিক পাপগ্রহ হোক বা শুভগ্রহই হোক- ওই ভাবপতি গ্রহগণ যেসকল ভাবকে পূর্ণদৃষ্টি প্রদান করবে, সেই সকল ভাবেরই শুভ হবে।

১১. ষষ্ঠ পতি গ্রহ হতে বিপদ, শত্রুবৃদ্ধি, রিপুর উত্তেজনা, ও কর্মে বাধার সৃষ্টি হয়। পক্ষান্তরে, অষ্টমতি গ্রহ দ্বারা জীবনীশক্তি, আয়ু ,মনোব্যাথা, শোক, পথের বাধা, উদ্বেগ ও অপমানের সৃষ্টি হয়। দ্বাদশপতি গ্রহ হতে দারিদ্র, রাজদণ্ড ,সন্তানরিস্টি , পদচ্যুতি, অপব্যয়, স্ত্রী স্বাস্থ, এবং রিপুদোষ সৃষ্টি হয়। এই তিনটি ভাবপতি গ্রহের সঙ্গে কোনো নৈসর্গিক পাপগ্রহের সম্মন্ধ, যুতি বা দৃষ্টির সম্পর্ক হলে, উপরে বর্ণিত ভাবপতি গ্রহ সূচিত কারকতা সম্পূর্ণ অশুভ ফল প্রদান করবে। এই নিয়মে নৈসর্গিক শুভগ্রহের সন্মন্ধে ঐ ভাবপতিগণের বর্ণিত কারকতার সম্পূর্ণ শুভফল দান করবে। অর্থাৎ বিপন্নমুক্তি, রিপুর উত্তেজনা হ্রাস, ইত্যাদি বিষয়ে শুভফল প্রদান করবে। এই ফল বিচারে দশা এবং গ্রহের গোচর ফল -উভয়েরই বিচার প্রয়োজন।

১২. কোনো ভাবপতি গ্রহ, লগ্ন অথবা লগ্নপতির সঙ্গে গোচরে সম্মন্ধ করলে সেই ভাবপতি সূচিত বিষয়সমূহ লগ্ন ও লগ্নপতির প্রকৃতির মধ্য হতে সম্পূর্ণ শুভাশুভ ফল প্রদান করবে।

১৩. লগ্নপতি বা লগ্নের নবাংশ পতি অথবা রাশি পতি গ্রহ এবং প্রয়োজনীয় যেকোনো এবং যেকোনো ভাবপতি গ্রহ যদি জন্মকুন্ডলীতে তুঙ্গগৃহে অবস্থান করে, তবে সেই উক্ত ভাবপতি গ্রহের পূর্ণবল শুভভাবে বিকাশ প্রাপ্ত হয়ে থাকে। এই নিয়মে গ্রহ নীচস্থ হলে সম্পূর্ণ অশুভ ফল জন্মাবে।

১৪. কোনো ভাবপতি গ্রহ এবং ভাবকারক গ্রহ তুঙ্গে, স্বক্ষেত্রে, মূলত্রিকোণে, মিত্রগৃহে, এবং মিত্রবর্গে থেকে লগ্নের অষ্টম ভাবগত হলে সেই ভাবপতি গ্রহ এবং শুভ কারক গ্রহ কোনো ক্রমেই ভাবফেলের শুভ বিকাশ সাধনে শুভ ফল দান করতে পারবেনা। ভাবপতি গ্রহ এবং ভাবকারক গ্রহ যেকোনো অবস্থায় নীচস্থ ও শত্রুগৃহগত হয়েও লগ্নের একাদশ ভাবে থাকলে ভাবফল বৃদ্ধি করবে।

১৫. ভাবপতি গ্রহ এবং ভাবকারক গ্রহ যদি পাপ মধ্যগত, শত্রুগৃহগত, শত্রুদৃষ্ট বা শত্রুযুক্ত হয় তাহলে কোনোক্রমেই ভাবফেলের শুভ করতে পারবেনা। পক্ষান্তরে ভাবপতি গ্রহ এবং ভাবকারক গ্রহ যদি চতুর্থ, অষ্টম ও দ্বাদশভাবগত হয় এবং লগ্নের ত্রিকোনস্থানে নৈসর্গিক নৈসর্গিক পাপগ্রহ বা নীচস্থ গ্রহ থাকে এবং ঐ নীচস্থ গ্রহ যদি নীচভঙ্গ রাজযোগের কারক না হয়, তাহলে সেই ভাবফেলের শুভ কোনোপ্রকারেই হতে পারেনা। নীচস্থ গ্রহের নীচভঙ্গ রাজযোগ থাকলে আংশিক শুভ হবে মাত্র।

১৬. কোনো জাতকের শুভ গ্রহগণ যদি লগ্ন হতে অষ্টমভাবে অবস্থান করে পাপগ্রহগণ দ্বারা দৃষ্ট বা প্রভাবিত হয়, তাহলে সেই ব্যাক্তির জীবনে ও প্রকৃতির পাপপ্রভাব অপেক্ষা শুভপ্রভাব অধিক পরিমানে থাকবে। শাস্ত্রকার অষ্টম ভাবে কেবলমাত্র শুভ গ্রহ অবস্থান এবং দৃস্টিবল প্রভৃতির প্রাধান্য দান করেছেন।

১৭. লগ্নপতি গ্রহ ও যেকোনো ভাবপতি গ্রহ এবং ভাবকারক গ্রহ গোচরে যখন কোনো ভাবগৃহে অথবা জন্মরাশিতে কিংবা ভাবপতির নবাংশে গতিক্রমে অবস্থান করবে তখন সেই ভাবফলের শুভাশুভ ফল সম্পূর্ণ প্রদান করবে।

১৮. যেকোনো ভাবপতি গ্রহ এবং সেই ভাবকারক গ্রহ গোচরে যখন লগ্নে অথবা লগ্নপতির অবস্থিত রাশিতে গমন করবে তখন সেই ভাবের শুভাশুভ ফল সম্পূর্ণ রূপে প্রদান করবে। অথবা ভাবপতি গ্রহ এবং ভাবকারক গ্রহ যখন পরস্পর যুক্ত বা দদৃষ্ট হবে, তখন ভাবফল সম্পূর্ণ রূপে প্রদান করবে।

১৯. বৃহস্পতির গোচরে যখন কোনো ভাবপতি গ্রহের সঙ্গে ভাবগৃহে অথবা ভাবপতি গ্রহের নবাংশে কিংবা ভাবগৃহ হতে ত্রিকোনস্থানে গোচরে অবস্থান করবে তখন সেই ভাবফলের শুভ পূর্ণমাত্রায় প্রদান করবে।

২০. লগ্নপতির নবাংশরাশিতে গোচরে যখন কোনো ভ্যাকারক গ্রহ এবং ভাবপতি গ্রহ গমন করবে, তখন ভাবপতির পূর্ণ শুভাশুভ ফল প্রদান করবে।

২১. অষ্টমতি গ্রহ যখন গোচরে যেকোনো ভাবপতি গ্রহের সঙ্গে সম্মন্ধ করে লগ্নপতির নবাংশরাশিতে গমন করবে, সেই সকল ভাবফলের হানি করবে।

২২. বিভিন্ন গ্রহ যখন একই সময়ে কোনো ভাবরাশিতে গোচরে গমন করে, ঠিক সেই সময় গ্রহগণ সেই ভাবে বিভিন্ন প্রকারের ফল প্রদান করে থাকে।  কিনটি ঐসকল গ্রহগণ মধ্যে যে গ্রহের দশাভোগ হবে অথবা যে দশা চলছে সেই দশার দশা পতির মিত্র এবং সহধর্মী যে গ্রহ উহার ভিতরে থাকবে সেই গ্রহের গোচরফল ওই ভাবের উপর সম্পূর্ণ প্রদান করবে। অন্যান্য গ্রহগণ পরস্পরের রশ্মি সম্পর্কের মধ্যে দিয়ে বিভিন্নপ্রকার ফল সৃষ্টি করে থাকে। ফলের সমতার মধ্যে নিজস্ব গুণধর্মানুসারে সম্পূর্ণ শুভাশুভ ফল প্রদান করবে। এইস্থলে দশা পতি বা তার সহধর্মী, মিত্র প্রভৃতি গ্রহগণ ফলের কারক হবে।

২৩. বৃহস্পতি ও শনি এই গ্রহ দুটিকে প্রধান গ্রহ বলা হয়। গোচরে এই দুটি গ্রহ সর্বদাই দশাফলকে অতিক্রম করে স্বকীয় প্রকৃতি এবং অবস্থান অনুসারে ভালোমন্দ ফলদান করে থাকে।

২৪. রবির দশাভোগকালে গোচরে চন্দ্রের নবমস্থ শনি তে পিতৃহানি অথবা পিতার ক্লেশভোগ হবে। মঙ্গলের দশায় গোচরে অষ্টমস্থ শনিতে স্বীয় রোগভোগ হয়। এছাড়া উপরে বর্ণিত নিয়মে জন্মসময়ে চন্দ্রের অবস্থান  হতে নবমে শনি থাকলে রবির দশাভোগের সময় গোচরে অবস্থা সৃষ্ট হলেও পিতৃহানি হবে।

২৫. জন্মসময়ে যে গ্রহ অস্তমিত, নীচস্থ প্রভৃতি দোষে দুষ্ট থাকবে, গোচরেও সেই গ্রহ যেভাবে গমন করবে-সেই ভাবের অশুভ ফল প্রদান করবে। তারপর যখন যে গ্রহের দশা চলবে, সেই গ্রহের তুঙ্গ এবং মিত্ররাশিতে অথবা দশাকারক গ্রহ হতে তৃতীয়, সপ্তম, দশম ও একাদশ স্থানে গোচরে যখন চন্দ্র গমন করবে তখন শুভ ফল প্রদান করবে। বিপরীতে অশুভ ফল প্রদান করবে।

২৬. জন্মসময়ে লগ্নের দশমে চন্দ্র ও সপ্তমে বৃহস্পতি থাকলে এবং ওই যোগের সঙ্গে লগ্নের নবমে যদি কোনো নৈসর্গিক পাপগ্রহ থাকে তাহলে চন্দ্র ও বৃহস্পতি বলবান হলেও জাতব্যক্তি স্বয়ং তার বংশ ধ্বংসের কারণ হবে। ঐ নিয়মে গোচরে রাশির দশম স্থানে চন্দ্র এবং সপ্তমে বৃহস্পতি থাকাকালীন নবমে যদি কোনো পাপগ্রহ থাকে তাহলে এই যোগ যত সময় ব্যাপী অবস্থান করবে ঠিক ততসময় জাতক স্বকীয় বুদ্ধির দ্বারাই তার কার্যহানী করবে।

২৭. দীর্ঘস্থায়ী বকরী গ্রহগণ বকরি অবস্থায় থাকাকালীন লগ্ন থেকে গোচরফল দান করে। রাশি হতে স্বাভাবিক অবস্থায় সকল গ্রহই ফল দান করে। গ্রহগণ সাধারণত মূলপ্রকৃতি এবং মনের উপর শুভাশুভ ফল প্রদান করে থাকে। লগ্ন হতে প্রকৃতি এবং চন্দ্র হতে মন বিচার করা হয়। বকরি গ্রহগণ দীর্ঘসময় এক রাশিতে তেকে মনকে অতিক্রম করে প্রকৃতির উপরে ফল দান করে থাকে। অতএব বকরি গ্রহগণের গোচরফল,গ্রহগণ বকরি থাকার সময় পর্যন্ত, লগ্ন হতে বিচার করা হয়।

২৮. নষ্টধন, পরিত্যক্ত অর্থ বা অনাদায়ী অর্থলাভের বিচারস্থল লগ্নের অষ্টমে যখন শুভগ্রহ গোচরে গমন করবে এবং যতক্ষণ গোচরে অষ্টমে থেকে লগ্নপতির গ্রহের সহিত সম্মন্ধ করবে, ঠিক সেই সময়ের মধ্যে উপরিবর্নীত বিষয়ের ফললাভ হবে। এইভাবে জন্মগ্রহ সবস্থানে অষ্টমপতি গ্রহের দশায় লগ্নপতি গ্রহের অন্তর্দশা হতে গ্রহগণের পরস্পরের শত্রু-মিত্র, নৈসর্গিক পাপ, শুভ, সমধর্মী ও বিরুদ্ধধর্মী প্রভাবে বিচারপূর্বক উপরিউক্ত বিষয়ের লাভালাভ প্রভৃতি বিচার করা হয়।






















মঙ্গলবার, ১১ আগস্ট, ২০২০

লগ্নে অবস্থিত গ্রহফল ( অতি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা )

লগ্নে অবস্থিত গ্রহফল


রবি - লগ্নে রবি অবস্থান করলে জাতব্যক্তি স্বল্পকেশযুক্ত, ক্রোধী, নিরুৎসাহী, অলস, কর্কশ, দীর্ঘকার, বলিষ্ঠ শরীর, নেত্ররোগী, নির্ঘৃন ও ক্ষমাগুন রোহিত হয়। মেষলগ্নে রবি থাকলে জাতক চক্ষুরোগী ও ধনী হয়। মেষলগ্নেযোগ দৃষ্টিহীন রবি অবস্থান করলে ব্যাক্তি সাধারণ আকার বিশিষ্ট, উচ্চমর্যাদা সম্পন্ন, অভিজাত, বিত্তশালী বংশজাত, সাহসী ও ধনবান হবে। সিংহলগ্নগত রবিতে নিসান্ধ, তুলালগ্নগত রবিতে ধনহীন ও অন্ধ এবং কর্কট লগ্নগত রবিতে চক্ষুতে 'ফুলি' রোগগ্রস্ত হবে। ধনুলগ্নে রবি অবস্থান করলে জাতব্যক্তি ভাগ্যবান, ধার্মিক ও ঈস্বরশক্তি পরায়ণ হয়ে থাকে।
পূর্বোক্ত ফলসমূহ জাতকের জীবনে সাধারণভাবে বিচার্য। রবির শত্রু, মিত্র, নিচ প্রভৃতি ক্ষেত্রে অবস্থান এবং শুভাশুভ কারকতা অনুসারে উপরিউল্লেখিত ফলের বৈষম্য লাভ হয়। রবি দুঃস্থানপতি হয়ে লগ্নে অবস্থান করলে এবং শুভ সম্পর্ক না করলে সম্পূর্ণ অশুভ ফল দান করবে। অর্থাৎ কেন্দ্র বা ত্রিকোনপতি হয়ে লগ্নে তুঙ্গ ও মিত্র গৃহে শুভ গ্রহের সহিত সম্পর্কে শুভফল দান করবে। রবি-বৃহস্পতি যুক্ত বা দৃশ্য হলে ও চন্দ্রের দৃষ্টি রবির উপরে থাকলে এবং বুধ যুক্ত রবি সর্বসময় শুভফলদাতা হয়।

চন্দ্র - মেষ, বৃষ ও কর্কটলগ্নগত হলে জাতকের দয়াদাক্ষিণ্য সদগুণ এবং রূপ সৌন্দর্য,  সম্পদ,ভোগ প্রভৃতি প্রদান করে। অন্যান্য লগ্নে নীচতা, চঞ্চল চিত্ততা, উন্মত্ততা, বধিরতা প্রভৃতি উৎপন্ন করে থাকে। খীণচন্দ্র স্থলে বিশেষরূপে এই সমস্ত ফল উৎপন্ন হয়ে থাকে।
চন্দ্র মেষ, বৃষ, ও কর্কট যেকোনো রাশিতে লগ্নগত হলে, জাতব্যক্তি অধার্মিক, ক্ষীণদেহী , নির্ধন, বুদ্ধিহীন ও বধির হয়। পূর্ণচন্দ্র লগ্নগত হলে জাতব্যক্তি তেজস্বী ও অহংকারী হয়। ক্ষীণচন্দ্র লগ্নস্ত হলে প্রস্রাব্ পীড়া গ্রস্ত এবং ক্লান্তিহীন হয়।
লগ্নস্থ চন্দ্রের এই সাধারণ ফলের ভাবপতিগ্রহের কারকতানুসারে বৈষম্য হয়ে থাকে। বৃহস্পতি যুক্ত বা দৃষ্ট চন্দ্র সর্বসময় শুভফলদাতা। পক্ষান্তরে ক্ষীণচন্দ্র দৃষ্ট বা যুক্ত পাপগ্রহগণ অধিক পাপফল দান করেননা। পাপগ্রহগণ চন্দ্রের প্রভাবে আংশিক শুভফল দান করে থাকে। ক্ষীণচন্দ্র তৃতীয়, অষ্টম, একাদশ বা দ্বাদশপতি হয়ে পাপপীড়িত হলে বালরিস্টি হয়। এবং দৈবাৎ বেঁচে থালেও চিররোগী হয়।
চন্দ্র পাপযুক্ত বা দৃষ্ট হয়ে লগ্নের সঙ্গে সম্মন্ধ করলে জলমগ্ন হবার সম্ভাবনা থাকে। বৃষলগ্নে চন্দ্র অবস্থান করলে জাতকের অসাধারণ মনোবল জন্মে থাকে। জাতকের অবশ্যই সম্মান ও পরাক্রম বৃদ্ধি হয়ে থাকে। ভ্রাতাভগিনীর দিক থেকেও জাতক সুখী হয়।

মঙ্গল - সচারচর মঙ্গল লগ্নে অবস্থান করলে মতিভ্রম, হঠকারীভাব, ক্ষতযুক্ত শরীর, সাহস ও উগ্রতা দান করে। লগ্নে মঙ্গল থাকলে জাতক অর্শ, ভগন্দর রোগী ও বিকল মহুমাযুক্ত উদোর রোগী হয়।
লগ্নস্থ মঙ্গল ছেলেবেলায় অজীর্ণপীড়া, দন্তরোগ, কৃষাঙ্গ, শ্লেষাধাতুযুক্ত, পাপরায়ণ, খলচরিত্র হয়। বন্ধন ভয় এবং দ্বন্দ্ব ও অগ্নিভয় হয়। জাতকের স্ত্রী, পুত্রহানি, শির ও নেত্রপীড়া হয়। জাতক সিংহের ন্যায় কর্মোদ্যমী হয়, কিন্তু তার যেকোনো কাজ করবার পরে ফললাভের সময় নানাপ্রকার উপসর্গ উপস্থিত হয়ে মনকে তাপিত করে থাকে।
লগ্নভাবগত মঙ্গলের অশুভ ফলসমূহ কেবলমাত্র বলবান বৃহস্পতির শুভ যোগ বা দৃষ্টিতে হ্রাস পায়। অন্যকোনো শুভগ্রহ মঙ্গলের অশুভ ফলকে হ্রাস করতে পারেনা। বরং মঙ্গলের প্রভাবে শুভ গ্রহ পতিত হয়ে মঙ্গলের অশুভ প্রকৃতি লাভ থাকে। রবিযুক্ত লগ্নভাবগত মঙ্গলে দাম্ভিক, চন্দ্রযুক্ত মঙ্গলে ক্রোধী, বুধ যুক্ত মঙ্গলে কূটনীতিবিদ, শুক্রযুক্ত মঙ্গলে কামুক, শনি ও রাহুযুক্ত মঙ্গলে গুন্ডা প্রকৃতি, কেতুযুক্ত মঙ্গলে বিষদাতা হয়। কেবলমাত্র স্বক্ষেত্র, তুঙ্গ, মূলত্রিকোণগত এবং বৃহস্পতির ক্ষেত্রগত লগ্নস্থ মঙ্গল শুভ ফলদাতা হয়। সিংহলগ্নে মঙ্গল পরিলক্ষিত হলে জাতব্যক্তি শারীরিক দিক থেকে অবশ্যই শক্তিশালী এবং প্রভাশালী ব্যাক্তি হবে। সে ভাগ্যের উপর অবস্থাশীল হবে। মকরলগ্নে মঙ্গলস্থিত হলে জাতব্যক্তি জাঁকজমকের সঙ্গে জীবনযাপন করবে।

বুধ -  জ্যোতিষশাস্ত্র মতে লগ্নে বুধ অবস্থান করলে জাতব্যক্তি শান্তি, উদার, বিনীত, ধীর, সদাচারী, বিদ্বান, কলাবিশারদ, ও একাধিক সন্তানযুক্ত হয়ে থাকে।
লগ্নভাবগত বুধ গ্রহ দোষজনিত  রিষ্টি নাশ করে। জাতব্যক্তি তীক্ষ্ণধীসম্পন্ন, মসিজীবী, কান্তিমান, এবং চিকিৎসা বিদ্যায় প্রাজ্ঞ হন। কিন্তু জাতকের ব্যাধির আক্রমণ হলে চিকিৎসায় সহসা আরোগ্য লাভ হয়না। জাতব্যক্তি সম্পদশালী, বিদ্বান, তপোপরায়ণ ও সর্বধর্মনুরক্ত হয়। বুধের শুভ এবং পাপ অবস্থান ভেদে স্বক্ষেত্র, মূলত্রিকোণ, তুঙ্গ ক্ষেত্রাদিতে  অবস্থানে এবং ভাবপতির কারকতানুসারে শত্রু মিত্রাদি গ্রহযোগ বা দৃষ্টিহেতু উপরি উল্লেখিত সাধারণ ফলভোগের বৈষম্য ঘটে থাকে।
আমাদের দেশীয় মতে বলা হয়ে থাকে যে, শুভগ্রহযুক্ত বুধ শুভ ফলদাতা এবং পাপগ্রহযুক্ত বুধ পাপফলদাতা হয়। মঙ্গলযুক্ত লগ্নভাবগত বুধে দুষ্টবুদ্ধিপরায়ণ, বিরুদ্ধ সমালোচক এবং কূটনীতিবিশারদ হয়। চন্দ্রযুক্ত বুধে মেধাবী, স্মৃতিশক্তিসম্পন্ন ও কান্তিমান হয়। রবিযুক্ত বুধে সত্যানুসন্ধান প্রিয় ও প্রাজ্ঞ। বৃহস্পতিযুক্ত বুধে তীক্ষ্ণধী। শুক্রযুক্ত বুধে সুলেখক ও বাগ্মী। শনিযুক্ত বুধে চিন্তাশীল, দুর্বল। পক্ষান্তরে, বুধ ষষ্ঠ, অষ্টম, দ্বাদশপতি হয়ে লগ্নে থাকলে, যথাক্রমে ষষ্ঠ পতিতে শত্রু সৃষ্টির বুদ্ধি, অষ্টমতিতে আত্মধ্বংসের বুদ্ধি এবং দ্বাদশপতিতে অপব্যয়ের বুদ্ধি সৃষ্টি করে।
কন্যালগ্নে জাত ব্যাক্তির জন্মসময়ে বুধ লগ্নে অবস্থান করলে অতিসুভ ফলপ্রদান করে থাকেন। কন্যালগ্নে বুধ পরিলক্ষিত হলে জাতকের শারীরিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। পিতার বিষয়ে, সরকারি পৃষ্টপোষকতায় ক্ষেত্রে, চাকরি তথা ব্যাবসার ক্ষেত্রে অর্থ, সুখ, সম্মান, সহযোগিতা এবং উন্নতি সূচিত হয়। মিথুনলগ্নজাত ব্যাক্তির ও লগ্নে বুধ থাকা খুব শুভ। জাতক মেধাবী, কলাবিদ, সৌম্য ও সন্তানসুখে সুখী হয়। এদের রোগ সহজে হবেনা। কিন্তু রোগ হলে জটিল আকার নিয়ে থাকে।

বৃহস্পতি - লগ্নে বৃহস্পতি থাকলে মানব মর্যাদা সম্পন্ন, প্রাজ্ঞ, উদার, রাজপ্রিয়, শান্ত, সুশ্রী, চারুদেহ,, ভোগী, দানি ও সদাশয় ব্যাক্তি হন। বৃহস্পতি লগ্নভাগত হলে জাতক পন্ডিত হয় এবং জনহিতকর কর্মগুণে খ্যাতিলাভ করে। জাতব্যক্তি দিব্যকান্তিযুক্ত, সুখী, সুন্দর ও স্বল্পবীর্যযুক্ত হয়। সে ন্যায়নীতিজ্ঞ ও ধার্মিক হয়। তার অন্তরাত্মায় সৎচিন্তা স্থান পায়। পারলোকিক জ্ঞানমুক্তিই তার ভবিষৎ চিন্তা হয়। তার ধনসম্পদ ভোগের নিমিত্ত ব্যায় হয়। জাতব্যক্তি কবি, সঙ্গীতপ্রিয়, দানশীল, সুচিপরায়ণ, সৌম্যদর্শন, ভোক্তা, রাজা বা শ্রেষ্ঠজন পূজিত, দেব ব্রাম্ভন সেবা পরায়ণ, নীতিজ্ঞ এবং বিত্তশালী হয়।
বৃহস্পতি লগ্নে অবস্থানভেদে ও বলাবল অনুসারে উপরি উল্লেখিত ফলের বৈষম্য সৃষ্টি করে থাকে। দ্বিতীয় ও পঞ্চমপতি বিধায় বৃহস্পতি বৃশ্চিক লগ্নের ষষ্ঠ, ও নবমপতি বিধায় কর্কটলগ্নে, নবম ও দ্বাদশপটি বিধায় মেষলগ্নের পক্ষে শুভপ্রদ। আবার চতুর্থপতি হিসেবে ধনুলগ্নের লগ্নপতি ও দশম পতি হিসেবে মিনলগ্নের এবং পঞ্চমপতি ও অষ্টমপতি হিসেবে সিংহলগ্নের পক্ষে বৃহস্পতি নিরপেক্ষ গ্রহ হিসেবে গণ্য হয়। অনুরূপভাবে দ্বিতীয়পতি ও ষষ্ঠ পতি হিসেবে কুম্ভলগ্নের, তৃতীয় ও ষষ্ঠ পতি হিসেবে মকরলগ্নের, চতুর্থপতি ও দ্বাদশপতি হিসেবে কন্যালগ্নের, সপ্তমপতি ও দশম পতি হিসেবে মিথুনলগ্নের এবং অষ্টমপতি ও একাদশপতি হিসেবে বৃষ লগ্নের পক্ষে বৃহস্পতি অশুভপ্রদ হয়ে থাকে। বৃহস্পতি দোষযুক্ত হয়ে লগ্নে থাকলে জাতক দাম্ভিক ও অত্যাচারী হয়ে থাকে। কিন্তু বৃহস্পতি সর্বতোভাবে শুভ ও পুন্যগ্রহ হওয়ায় সে যেকোনো অবস্থায় থাকুক না কেন , তার প্রকৃতিগত শুভফল হতে অধিক বৈষম্য ফল সৃষ্টি করেন না।
নিচক্ষেত্রস্থ, শত্রুগৃহগত, পাপযুক্ত বা পাপপ্রভাবিত বৃহস্পতি লগ্নে থাকলে পূর্ণ শুভফল দান করতে না পারলেও, পাপগ্রহের মতো সম্পূর্ণ অশুভফল দান করেননা। পরলোকের দিগ্দর্শন করায়। দুর্বল পাপগ্রহ পীড়নের বৃহস্পতি লগ্নে থাকলে জাতকের প্রজ্ঞাকে বলিষ্ঠ না করলেও তাকে ধর্মভীরু করায়। অন্তরে অসাধু প্রেরণা সৃষ্টি হলেও তা স্বল্পাংশেই কার্যে পরিণত হয়। অস্থির ও অবাবস্থিত চিত্তের জন্য তাকে সময় সময় অসাধু প্রেরণা অন্যায় কার্যে কতকাংশে প্রেরণা যোগায়। রবি ও চন্দ্রের বল থাকলে, দুর্বল বৃহস্পতির অসাধু প্রভাব অধিকাংশ দমিত হয়ে থাকে। সেই জাতক আত্মনিগ্রহ এবং আত্মবিশ্লেষনের মধ্য দিয়ে বৃহস্পতির দুর্বল নীতিকে বলিষ্ঠ করে তুলতে পারে। বৃহস্পতি অন্তর্গত, শত্রুগৃহগত, ও পাপপীড়িত এবং ষষ্ঠ, অষ্টম ব্যায়পতি হয়ে লগ্নে থাকলে জাতকের প্রকৃতির ভিতরে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। জাতক নীতিজ্ঞান বর্জিত হয়ে বিবেকহীন হয়। সে লোভপরায়ণ, স্বল্পমেধাযুক্ত, স্বীয় বুদ্ধির দোষে শত্রু সৃষ্টিকারী, বুদ্ধিভ্রম, দুষ্কৃতকারী এবং অযথা অমিতব্যয়ী হয়। এইসকল কর্মের ভিতরেও তার কিছুটা ধর্মভাব প্রচ্ছন্ন থেকে যায়।
রবির দীপতাংশরহিত বৃহস্পতি, চন্দ্র ও বৃহস্পতি, মঙ্গল ও বৃহস্পতির যোগ বা দৃষ্টি লগ্নে থাকলে, বৃহস্পতির স্বকীয় গুনের পূর্ণবিকাশে সক্ষম হয়। লগ্নে বুধযুক্ত বৃহস্পতি মেধাবী ও স্মৃতিশক্তিসম্পন্ন, শুক্রের প্রভাবে রজঃ ও সত্ত্বগুণী এবং ভোগী, শনির প্রভাবে ত্যাগী, রাহুর প্রভাবে বৃহস্পতির চণ্ডনীতিপরায়ণ দোষ জন্মে।

শুক্র - লগ্নে বা প্রথমভাবে শুক্র অবস্থান করলে জাতক প্রিয়দর্শন, শ্রীযুক্ত ও মিষ্টভাষী হয়ে থাকে। বহুবিধ বিদ্যায় তার অধিকার জন্মে। বিপরীত লিঙ্গের নারী বা পুরুষ সহজেই তার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে থাকে।
শুক্র লগ্নস্থ হলে, জাতক সুন্দর কান্তিযুক্ত হয়। জাতক বহু নারীসুখ ভোগ করে থাকে। সে রজগুনের সাধনার মধ্য দিয়ে পারলৌকিক আদর্শ গ্রহণ করে। জাতক বিভিন্ন সদনুষ্ঠানে অনুরক্ত হয়ে থাকে। কাব্বশাস্ত্রাদি, যোগ্যনিষ্ঠ ও ধার্মিক হয়। সে শিল্পকলাভিজ্ঞ হয়। দুর্বল, পাপ পীড়নের শুক্র লগ্নগত হলে উপরি উল্লেখিত ফলের বৈষম্য হয়। দুর্ব শুক্রের প্রভাবেও জাতক সাহিত্য, সংগীত, ও শিল্পবিজ্ঞানে খ্যাতিলাভ করে থাকে। কিন্তু তার ঐসকল সাধনার ভিতরে কামভোগের আতিশয্য থাকে। তার বহু নারীসঙ্গ লাভেও অতৃপ্ত কামনা বাসনা থেকে যায়। এ প্রসঙ্গে লগ্নে পাপশুক্র এমনকি তুঙ্গ শুক্র থাকলেও অতিরিক্ত যৌনাচার বশত যৌনরোগের সম্ভাবনা থাকে।

শনি - লগ্নে শনি থাকলে জাতক অসন্তুষ্ট, অতিলোভী, স্থূলদৃষ্টি, ও দুরাকাঙ্খী হয়ে থাকে। এরূপ জাতক জাতিকা সচারচর অপরের উন্নতিতে ঈর্ষাকাতর হয় এবং কষ্ট পায়। লগ্নে যোগ দৃষ্টি ছাড়া শনি অবস্থান করলে জাতকের দেহ হবে দীর্ঘ, কৃষ্ণবর্ণ, বিকৃত দন্ত, ক্ষীণ, ধীর স্বভাব ও এদের দাম্পত্য জীবনে বাধা উৎপন্ন হয়।
লগ্নে শনির দৃষ্টি পড়লে দাম্পত্য জীবন অশান্তিময় হবেই। সনাতন শাস্ত্র অনুসারে - শনি লগ্নভাবগত হলে জাতব্যক্তি প্রভূত ধনি হলেও তার দুরাশায় বা অতৃপ্ত আকাঙ্খায় সে সর্বদা চিন্তাক্লিষ্ট, স্তুলদৃষ্টিসম্পন্ন, বুদ্ধির জড়তায় সুক্ষবিচারে অসমর্থ থাকে। জাতক মানসিক অশান্তি ভোগ করে এবং পরশ্রীকাতর দোষ তার চরিত্রে প্রভাব বিস্তার করে বলে ক্ররদৃষ্টি সম্পন্ন বা বিষদৃষ্টিযুক্ত হয়। গ্রহদোষ সমূহ চরিত্রে থাকায় জাতকের চিত্ত সর্বদা উদ্বিগ্ন থাকে।
লগ্নভাবগত শনির শত্রু-মিত্র গৃহে অবস্থান, ভাবপতির কারকতা, শুভ এবং পাপগ্রহের প্রভাবভেদে উপরি উল্লেখিত ফলের বৈষম্য হয়। তুলা, ধনু, মীন রাশিগত লগ্নস্থ শনিতে জাতককে রাজতুল্য ক্ষমতা দান এবং ভাগ্যবান করে থাকে। ইহা ব্যাতিত স্বক্ষেত্র, মূলত্রিকোণগত, কেন্দ্র বা ত্রিকোনপতি হয়ে লগ্নে থাকলে অধিকাংশ শুভ ফল দান করে থাকে। শনি নৈসর্গিক পাপগ্রহহেতু ভাবপতি হিসেবে বলবান থাকলেও, যদি কেন্দ্র বা ত্রিকোণে শুভ গ্রহের বল না থাকে বা শুভ গ্রহ প্রভাবিত না হয়, তাহলে শুভ ফলের মধ্যে আংশিক অশুভফল দান করবে। লগ্নস্থ শনিতে বাত, বায়ুপীড়া এবং অনিদ্রার কারণ সৃষ্ট হয়।

রাহু - রাহু লগ্নে থাকলে জাতক শত্রুজয়ী, অসাধু বুদ্ধিসম্পন্ন, স্বজন বঞ্চক, কামপ্রবণ, রুগ্নদেহী ও শিরোরোগী হয়। স্ত্রী থাকলেও উদ্দাম যৌনকামভোগ স্পৃহা থেকেই যায়। স্ত্রী হেতু সে সন্তাপ ভোগ করে থাকে। মেষ, কর্কট ও সিংহ লগ্নস্থ রাহু স্বর্ণ জাতীয় মূল্যবান সম্পদ লাভ করায়। পঞ্চম-নবম বা চতুর্থ-দশম ভাগ্যত বলবান শুভ গ্রহের অবস্থানে লগ্নগত রাহুর অশুভ ফল কতকাংশে প্রশমিত হয়। রাহু রাজযোগের কারক হলেও নৈসর্গিক পাপগ্রহহেতু লগ্নে থাকলে পরপীড়ণের মধ্য হতে রাজযোগের ফললাভ করে ক্ষণকাল ক্ষমতার দম্ভ প্রকাশের পর নিস্তেজ হয়ে পড়ে। শুভ গ্রহের প্রভাব ব্যাতিত রাহুর অশুভ প্রভাব প্রশমন করা সম্ভব নয়। মেষ হতে কন্যা লগ্নে রাহু থাকলে গ্রহরিষ্টি নাশ করে। কিন্তু অন্য লগ্নে থাকলে রাহু কারক ব্যাধির সম্ভাবনা। রাহুকারক ব্যাধি - আত্মহত্যার ইচ্ছা, অজীর্ণরোগ, ও আকস্মিক পীড়া।

কেতু - কেতু লগ্নে থাকলে, জাতক ভ্রাতা ও বন্ধুগণের সহিত বিবাদ করে থাকে। অসাধু প্রকৃতির লোক কর্তৃক জাতক সর্বদা ভীত এবং উদ্বিগ্ন চিত্ত থাকে। তার নানাপ্রকার বায়ুজনিত পীড়া ভোগ হয়। তুলা, মকর ও কুম্ভ লগ্নগত রাহু কতকাংশে শুভফলদাতা হয়। অশুভ কেতু লগ্নে থাকলে বায়ু ও উদর রোগের  সম্ভাবনা। লগ্নস্থ নীচস্থ কেতু বিদেহ মুক্তির অন্তরায়।


























বুধবার, ৫ আগস্ট, ২০২০

বিশেষ লগ্নফল আলোচনা ও সম্যক ধারণা

বিশেষ লগ্নফল আলোচনা ও সম্যক ধারণা 


মেষলগ্ন:

ঋজুদেহ,শৈশবে পীড়া,জীবনে উন্নতি, বহু কষ্টে ভাগ্য,ভাতৃ সহভাবের অভাব,উত্তম বিবাহ,তবে সাংসারিক সুখ কম, দীর্ঘায়ু, সাহসী, একগুঁয়ে,কর্মঠ,যোগপ্রাপ্তি হয়না,পরিশ্রমের ফল পায়না।
রবি, চন্দ্র,বৃহস্পতি শুভ। মঙ্গল নিরপেক্ষ /বুধ ও শনি  অশুভ। শুক্র মারক গ্রহ।

বৃষলগ্ন:

সুশ্রী, দীর্ঘ,পার্থিব আমোদ ভক্ত, সৎভাবে উপার্জন,বুদ্ধিমান,দীর্ঘায়ু,ভালো বিবাহ,কিন্তু স্ত্রী সাংসারিক সুখ দিতে অক্ষম, সাংবাদিক,কলাবিদ্যা, তোষামুদে, তুষ্ট, যশ, কামী , ক্ষমতাশালী,চতুর, ভাগ্যবান।
বৃহস্পতি, চন্দ্র এবং শুক্র পাপগ্রহ। শনি রাজযোগকারী, রবি এবং বুধ শুভ। মঙ্গল অশুভ।

মিথুনলগ্ন:

অঙ্কশাস্ত্র,আইন,বুদ্ধিজীবী,ভালো জননী,ডাটা,ধার্মিক, ব্যায় সঙ্কোচ।

কর্কটলগ্ন:

ভাইবোনের জন্য ব্যায়, সৎ, অর্থ উপার্জনকারী, গৃহে থাকে বা নির্মাণের সুযোগ পায়। মাতা কষ্ট পায় ,মাতৃ শত্রু সৃষ্টি হয়। দীর্ঘায়ু, কর্মে কৃতকার্য, সাঙ্গাসারিক জীবনে অসুখী,পরিশ্রমী, মিতব্যয়ী হলেও ভাগ্যহীন, আত্মবিশ্বাস, প্রতিহিংসা পরায়ণ।

সিংহলগ্ন:

নিজ চেষ্টায় উন্নতি,ভাগ্যবান,বহু উপার্জন, স্ত্রীর সঙ্গে মনোমালিন্য,বিদ্বান, নারী দ্বারা প্রতারিত, দীর্ঘায়ু, কর্তৃত্ব, উচ্ছ আকাঙ্ক্ষা, স্বাধীন চিন্তা, স্বার্থপর, অর্থের জন্য নিচু হতেও পারে। মঙ্গল শুভ।  রবি,বুধ, শুক্র নিরপেক্ষ। বাকি গ্রহ অশুভ ভাবপ্রদ।

কন্যালগ্ন:

দায়িত্বশীল পদ, কাজে সম্মান, ভাইয়ের সঙ্গে অমিল, অসত্য কথা বলা, সম্পত্তি, বুদ্ধিমান, আইন, ভালো উপার্জন, কোলা ও সাহিত্য, রসায়ন বিদ্যা, সংগীত প্রিয়, মানসিক ব্যাধি, কাজে দক্ষ।
মঙ্গল, বুধ, চন্দ্র, শুক্র শুভ। রবি এবং শনি নিরপেক্ষ। বৃহস্পতি মারক।

তুলালগ্ন:

সাংসারিক জীবনে মনোমালিন্য, অসন্তোষ,অর্থসংকট ও ব্যায়, ভালো বিদ্যা, ক্রোধী, বহুশত্রু, পিতৃসম্পত্তি লাভে বাধা ,স্বাধীন, সংগীতভক্ত, আদর্শবাদী,স্বার্থপর ও তোষামোদ প্রিয়।
বুধ ও চন্দ্র শুভ। মঙ্গল মারক। শনি রাজযোগকারক। রবি, বৃহস্পতি অশুভ।

বৃশ্চিকলগ্ন:

আধ্যাত্মিক ভাব, কখনো নিচ প্রবৃত্তি, ক্ষমতালোভী, অন্তরে কাপুরুষতা, স্থাবর সম্পত্তি থাকেনা। ভ্রাতাভগিনী সহ মতের অমিল, বন্ধুরা সৎ নয়, সুবিবাহ, দুর্ভাগ্যের সাথে যুদ্ধ, ধার্মিক, দর্শিনিক, চঞ্চলতা, আত্মবিশ্বাস,স্বার্থপর,বুদ্ধিমান,তীক্ষ্ণ স্মৃতিশক্তি ধারণকারী।
রবি,বৃহস্পতি,মঙ্গল শুভ।  বুধ ও শুক্র অশুভ। চন্দ্র, শনি নিরপেক্ষ।

ধনুলগ্ন:

ভাগ্যবান, সাহসী, সুবিদ্যা, সম্পত্তি,বহুবিদ্যা, বন্ধু, স্বাধীন, বুদ্ধিমান, ভালো স্ত্রী লাভ, দীর্ঘায়ু, যুগোপযোগী, ধার্মিক, ভোগী, তীক্ষ্ণ বুদ্ধি।
রবি, বৃহস্পতি, মঙ্গল শুভ। বুধ ও শুক্র অশুভ। চন্দ্র ও শনি নিরপেক্ষ।

মকরলগ্ন:


ভাগ্যবান, জীবনে উন্নতি, ভালবিদ্যা, ক্ষিপ্রবুদ্ধি, চাকরিতে উন্নতি, বহু উপার্জন, বহু আকাঙ্ক্ষা, অধ্যাবসায়ী, দৃঢ়মন, বন্ধুত্বে কোমল,ধূর্ত, ঋণী।
বুধ, শুক্র, শনি শুভ। বৃহস্পতি, চন্দ্র অশুভ। রবি মারক। মঙ্গল নিরপেক্ষ।

কুম্ভলগ্ন:

অহংকারী, অন্তরে দুর্বলতা, পিতৃসম্পত্তি পায়না, ভোগী, বক্তা, সহজে বন্ধুত্ব স্থাপন, পিটার ব্যাথা, ভোগে সুখহীন, আত্মীয় স্বজন থেকে পৃথক, ক্রোধী, আইনের দক্ষ। বিবাহ জীবনে কৃতকার্য নয়। ধার্মিক, মুক্তির পথ দেখায়।
শুক্র, শনি, মঙ্গল শুভ। চন্দ্র অশুভ। বুধ নিরপেক্ষ। বৃহস্পতি, রবি মারক।

মিনলগ্ন:
সাংসারিক সুখ, দীর্ঘায়ু,ক্ষমতা ও কর্তৃত্বলাভ, উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তি, ধার্মিক, জনসাধারণের কাজ করে, উপার্জন ও ব্যায়, গম্ভীর, হিতৈষী, বন্ধুলাভ, শুচি, মেধাবী, স্বার্থপর,অর্থাভাব,শত্রুতা, লগ্নপতি স্বক্ষেত্রী হলে খুব বুদ্ধিমান।
রবি, চন্দ্র, মঙ্গল শুভ। বুধ ও শনি অশুভ। শুক্র মারক। 

শনিবার, ১ আগস্ট, ২০২০

দ্বাদশ রাশির অবস্থান+লগ্ন থেকে দ্বাদশ ভাবের কারকতা

দ্বাদশ রাশির অবস্থান

মেষরাশি - ০ ডিগ্রি থেকে ৩০ ডিগ্রি পর্যন্ত।
বৃষরাশি - ৩১ ডিগ্রি থেকে ৬০ ডিগ্রি পর্যন্ত।
মিথুনরাশি - ৬১ ডিগ্রি থেকে ৯০ ডিগ্রি পর্যন্ত।
কর্কটরাশি - ৯১ ডিগ্রি থেকে ১২০ ডিগ্রি পর্যন্ত।
সিংহরাশি - ১২১ ডিগ্রি থেকে ১৫০ ডিগ্রি পর্যন্ত।
কন্যারাশি - ১৫১ ডিগ্রি থেকে ১৮০ ডিগ্রি পর্যন্ত।
তুলারাশি - ১৮১ ডিগ্রি থেকে ২১০ ডিগ্রি পর্যন্ত।
বৃশ্চিকরাশি - ২১১ ডিগ্রি থেকে ২৪০ ডিগ্রি পর্যন্ত।
ধনুরাশি - ২৪১ ডিগ্রি থেকে ২৭০ ডিগ্রি পর্যন্ত।
মকররাশি - ২৭১ ডিগ্রি থেকে ৩০০ ডিগ্রি পর্যন্ত।
কুম্ভরাশি - ৩০১ ডিগ্রি থেকে ৩৩০ ডিগ্রি পর্যন্ত।
মীনরাশি - ৩৩১ ডিগ্রি থেকে ৩৬০ ডিগ্রি পর্যন্ত।

লগ্ন থেকে দ্বাদশ ভাবের কারকতা

প্রথম ঘর অর্থাৎ লগ্নভাবের কারকতা
দৈহিক রূপ, বর্ণ, আকৃতি, প্রকৃতি, দৈহিক চিহ্ন, যশ, গুন্, নির্গুণ, দৈহিক সুখদুঃখ, প্রবাস, স্বদেশবাস, সবল ও দুর্বল দেহ, মূলপ্রকৃতি, চরিত্র, স্বভাব, রোগমুক্তি,ইন্দ্রিয়নিগ্রহ, আয়ুর স্টুল পরিমান,জাতি, ক্লেশ, প্রশংসা, সন্তানের ভাগ্য, শত্রুর মৃত্যু, পিতামহের সম্পত্তি, মস্তক প্রভৃতি বিচার করা হয়। এছাড়া আত্মীয় গণনার ক্ষেত্রে -
পিতামহী,মাতামহ, শশুড়বাড়ির সম্পর্ক, দীক্ষা গুরু পরিবার বিচার্য।

দ্বিতীয় ভাবের কারকতা

ধন, সঞ্চিত অর্থ, মনিমুক্তা, রত্ন, সর্বপ্রকার ধাতুদ্রব্বো, আত্মীয় ও পোষ্যবর্গ, ভোজন, খাদ্যদ্রব্বো, বিদ্যা, ক্রয়বিক্রয়, হঠাৎ ধনলাভ, সন্তানলাভ, অস্থাবর সম্পত্তি, গুপ্তশত্রু, স্ত্রীর শুভাশুভ, ডানচক্ষু, বাক্য, বাক্কের মধুরতা, বক্তৃতা, মুখ হতে কাঁধ পর্যন্ত স্থান বিচার করা হয়।  এছাড়া অন্ননালী, স্বরনালী, ও মস্তিষ্কের নিম্নভাব দ্বিতীয় ভাব হতে বিচার করা হয়।  আত্মীয় গণনার ক্ষেত্রে-
পোষ্যবর্গ, সর্বশ্রেণীর আত্মীয়, মাতার অগ্রজ, মাতুল, জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা ভগিনী বিচার্য।

তৃতীয়  ভাবের কারকতা 

সাহস, পরাক্রম, স্ত্রীর ভাগ্য, অধীনস্ত কর্মচারী, কণ্ঠ, কণ্ঠস্বর,  ডান কর্ণ, ধৈর্য , বল, দাসদাসী, উত্তমভূষণ, সর্বপ্রকার বস্ত্র, উপদেশ, পিতার শত্রু, পিতার স্বাস্থ্য, যাত্রা, জ্ঞাতি, প্রতিবেশী, আশ্রিত ব্যাক্তি, মনের সংশয়, মনের বহিঃপ্রকাশ, আত্মপ্রচার, স্থানচ্যুতি, আকস্মিক ঘটনা, দুর্নাম, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, নাটক, কাব্যগ্রন্থাদি রচনা, রোগবৃদ্ধি, শত্রুর অভ্যুদয়, ঔষধ, ফুসফুস, হাত, নিশ্বাসপ্রস্বাস ও গলদেশ থেকে বক্ষ পর্যন্ত বিচার করা হয়ে থাকে। আত্মীয় গণনার ক্ষেত্রে -
জাতকের কনিষ্ঠ অনুজ বা  অনুজা, দৌহিত্র দৌহিত্রী , পৌত্র বধূ।

চতুর্থ ভাবের কারকতা 

মন, হৃদয়, হৃদপিন্ড, মনোবৃত্তি, বিদ্যা, গুন্, আত্মবৃদ্ধি, গৃহ সজ্জা, রাজার অনুগ্রহ, সামাজিক কর্ম, বাহন সুখ, ভূমি, ক্ষেত্র , বাস্তুভূমি, যানবাহন, ভোজ্যদ্রব্য, উদ্যান, পানীয়, সুখ, ভূগর্ভস্থ ধন, সর্বপ্রকার শস্য, পাতাল, বিশ্রাম স্থান, ঔষধ, গ্রাম , নগর, দুগ্ধ, দৈব ওষুধ, দেব মন্দির, নির্মল বুদ্ধি প্রভৃতি বিচার করা হয়। আত্মীয় গণনার বিচারে -
মাতা, বন্ধুবর্গ এবং জাতকের শ্বশুর।

পঞ্চম ভাবের কারকতা 

দেবভক্তি, পুত্রকন্যা, বিদ্যাবুদ্ধি, পুন্য , মন্ত্রাদি সিদ্ধি, গুপ্ত মন্ত্রণা, বিনয়, নীতি, সঞ্চয়, প্রবন্ধ রচনা, অস্ত্রনির্মান, প্রতিভা, বিবেকশক্তি, অনুসন্ধানী জ্ঞান, শিষ্য, স্বভাব, অনুগতজন, প্রণয়, তৃতীয় ভ্রাতাভগিনী, মাতার ধন, দূরদৃষ্টি, ধন উপায়ের পথ, ভাবাবেগ, অনুকম্পা, দয়াদাক্ষিণ্য, উদ্ভাবনী শক্তির বিকাশ, উদর, অন্ত্র রোভিটি বিচার করা হয়।
আত্মীয় গণনায় - দ্বিতীয় অনুজ বা অনুজা, প্রথম সন্তান, গুরু, জ্যেষ্ঠ ভ্রাতার স্ত্রী, জ্যেষ্ঠ ভগ্নিপতি, জ্যেষ্ঠ জামাতা।

ষষ্ঠ ভাবের কারকতা 

রোগ, রিপু, শত্রু, বাধাবিগ্ন, ক্ষত, প্রতিরোধশক্তি, ভয়, আশংকা, বিমাতা, বিষাদ, চতুস্পদ হিংস্র জন্তু, চোর, ক্লেশ, উপদংশ পীড়া, পুত্রের ধন, দুশ্চিন্তা, মামলা মোকদ্দমা, সংগ্রাম, পরাশ্রয়, ক্রোধ, লোভ, মাৎসর্য ও নাভি বিচার করা হয়। আত্মীয় গণনায় -
মাতুল, মাতার অনুজ ও অনুজা, পিতার গুরু।

সপ্তম ভাবের কারকতা 

কাম, বিবাহ, বিবাহিত জীবন , আহার্য ব্যাঞ্জনাদি, গমনাগমন, গর্ব, মত্ততা, পদপ্রাপ্তি, নষ্টধন, বিবাদ, মামলা মোকদ্দমা, বাণিজ্য, ব্যাবহারিক কর্ম, ক্রয়, চৌর্য, অস্থিরতা, শোক, রাত্রি, মৃত্যু, যুদ্ধক্ষেত্র, শত্রুর ধন, অংশীদারি অজ্ঞতা, বিস্মৃত বস্তুর স্মরণ, আন্দোলন, বস্তি, দেহাঙ্গ বিচার করা হয়। আত্মীয় গণনার ক্ষেত্রে -
স্ত্রী, তৃতীয় ভ্রাতা ভগিনী, দ্বিতীয় সন্তান, ভ্রাতুষ্পুত্র, পিতামহ, মাতামহী, জ্যেষ্ঠা কন্যার দেবর, ননদ, স্ত্রীর অগ্রজ ভ্রাতা ভগ্নী, প্রভাতী বিচার করা হয়।

অষ্টম ভাবের কারকতা 

জীবনীশক্তি, আয়ু, মৃত্যস্থান, মরণের হেতু, বন্ধন, অপবাদ, জয় পরাজয়, মনোব্যাথা, কারাবরণ, মোকদ্দমায় অর্থব্যয়, নদী পারাবার, পথের বাধা, জলযানে বিপদ, দাঙ্গা হাঙ্গামা, দুর্ঘটনা, বন্ধু বিচ্ছেদ, শোক, ভয়, উদ্বেগ, ব্যাকুলতা, পরলোকের বিশাসী গণের সম্পর্কে মৃতের বার্তা, ঋণদান, ঋণগ্রহণ, অস্ত্রশস্ত্র, আকস্মিক বিপদ, ব্যাধির উৎপত্তি, পুনর্জন্ম, প্রাণবায়ু, গুহ্যস্থান ও শিশুর বিচার করা হয়। আত্মীয় গণনার ক্ষেত্রে -
জেষ্ঠতাত, মাতার দ্বিতীয় অনুজ বা অনুজা, জ্যেষ্ঠ কন্যার শাশুড়ি।

নবম ভাবের কারকতা 

ভাগ্য, ধর্ম, ধর্মানুষ্ঠান, উচ্চশিক্ষা, আদর্শ, দেবগৃহ, দীক্ষা, গুরু, বেদপাঠ, তপস্যা, তীর্থযাত্রা, দূরদেশে বার্তা, পবিত্র মন, সুখস্বপ্ন, স্বপ্নে অন্তর্দৃষ্টির জ্ঞানলাভ, গুহ্যবিদ্যা, ঋণদান, ভাগ্যদোয়, পূর্বজন্ম, সমুদ্রযাত্রা। নবম ভাবের ফলদাতা বৃহস্পতি অতএব নবমভাব ও বৃহস্পতি বলাবল থেকে এইসকল কারকতা বিচার করতে হবে। আত্মীয় গণনার ক্ষেত্রে - দীক্ষাগুরু, পৌত্র পৌত্রীর প্রথম সন্তান, দৌহিত্র পত্নী, সালোক শালিকা প্রভৃতি।

দশম ভাবের কারকতা 

পিত, জীবিকা, কর্মজ্ঞান, কর্মস্থল, বিদ্যাজনিত যশ, বিজ্ঞান শিক্ষা, আকাশীয় বিদ্যা, বৃত্তি, জ্যোতিষ বিদ্যা, আগম জ্ঞান, ঐশী, সম্পদ, প্রব্রজ্যা, স্বর্গীয় সম্পদ, প্রবাস, প্রবৃত্তি, পদলাভ, মুদ্রা, কীর্তি, প্রতিষ্ঠা, প্রতিপত্তি, পূর্বজন্মের জ্ঞান, বার্তা, সর্গ গমন, পরম পুন্য, সম্ভ্রান্ত ব্যাক্তির অনুকুলতা ও প্রতিকূলতা লাভ। আত্মীয় গণনার ক্ষেত্রে-
পিত ও মাতার তৃতীয় অনুজ বা অনুজা এবং শাশুড়ি।

একাদশ ভাবের কারকতা 

আয়, লাভালাভ, বিষয়ে, উপার্জিত ধন, গুন্, সম্পদ, ধান্যমূল্য, অর্থ, বুদ্ধির প্রকাশ, যাত্রা, পরিচিত বন্ধুবর্গ, শান্তি, আশা আকাঙ্খা, সুবর্ণজাত দ্রব্য, যানবাহন লাভ, অলংকার, পিতার ধন, ভ্রাতার ভাগ্য, পত্নীর গর্ভ, পত্নীর বুদ্ধি, ইষ্টসিদ্ধি, জঙ্ঘাদ্বয় প্রভৃতি। আত্মীয় গণনার ক্ষেত্রে - জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা ভগিনী, কন্যা, জামাতা, পুত্রবধূ, স্ত্রীর দ্বিতীয় অনুজ বা অনুজা ও জ্যেষ্ঠ পুত্রবধূ।

দ্বাদশ ভাবের কারকতা 

সদ্ব্যায়, কারাগার, অধঃপতন, কঠিন রোগ, আত্মীয় বিরোধ, পত্নীর রোগ, সন্তানের আয়ু ও মৃত্যু, নরকবাস, রাজদণ্ড, মানসিক অশান্তি, বিরস, ব্যাবসায়ে ক্ষতি, দৈহিক ক্ষতি, ক্রোধ, স্ত্রীর মৃত্যু, রাজদ্বারে অর্থহানি, ঋণগ্রহণ, দুর্গমন, দুর্গতি, পরাভব, রুদ্ধ অহংকার, আধ্যাত্মিক চেতনার পুনর্জন্ম এবং মোক্ষ বিচার করা হয়। আত্মীয় গণনায় - দ্বিতীয়া স্ত্রী ও খুল্লতাত ও বিচার করা হয়।