বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২১

কর্ম নির্দেশে রাশির ভূমিকা :



অগ্নিরাশি : মেষ, সিংহ ও ধনু 
যেসকল কাজে বুদ্ধি, কৌশল, উদ্দম, সাহসিকতা এবং ব্যাক্তিগত প্রচেষ্টা ও তৎপরতার প্রয়োজন আছে এবং অগ্নি ও যন্ত্রের সহিত যোগাযোগ আছে সেই কর্মবৃত্তি নির্দেশ করে। 

পৃথ্বীরাশি : বৃষ, কন্যা ও মকর 
যেসকল কাজে স্থুল ও ভারী জিনিসের সংযোগ আছে, প্রভ্যুর দৈহিক পরিশ্রমের প্রয়োজন হয় এবং বুদ্ধি ও কৌশলের তুলনায় অধ্যাবসায়ের বেশি প্রয়োজন হয় সেই সকল কর্মবৃত্তিকে নির্দের্শ করে। 

বায়ুরাশি : মিথুন, তুলা ও কুম্ভ 
মস্তিষ্কের কাজ, বিজ্ঞানের কাজ,- যেসকল কাজে শারীরিক পরিশ্রমের চেয়ে মস্তিষ্কের অধিক প্রয়োজন হয়। সৃজনশীল কর্ম, বুদ্ধিজীবী- উকিল, শিক্ষক। অধ্যাপক, কেরানি, একাউন্ট্যান্ট প্রভৃতি। 

জলরাশি : কর্কট, বৃশ্চিক ও মীন 
যেসকল কাজে সুক্ষ অনুভূতি ও মানসিক ক্রিয়ার প্রয়োজন অথবা যেসকল কাজে জল বা অন্য তরল পদার্থের প্রয়োজন বা সংস্রব আছে- অর্থাৎ গান,বাজনা, নাটক, কবিতা বা জনগণের আনন্দ দেওয়ার জন্য যেসকল কর্ম তা নির্দেশ করে। 

চররাশি : মেষ, কর্কট, তুলা ও মকর 
সেই সকল কাজ যেখানে মৌলিকতা ও উদ্ভাবনী শক্তির প্রয়োজন এবং জনসাধারণের সংযোগ আছে। 

স্থিররাশি : বৃষ, সিংহ, বৃশ্চিক ও কুম্ভ 
সেই সকল কাজ যেখানে ধৈর্য, সহিষ্ণুতা ও দৃঢ়তার প্রয়োজন আছে। 

দ্বিস্বরাশি : মিথুন, কন্যা, ধনু ও মীন 
সেই সকল কাজ যেখানে অপরের নির্দেশে বা অপরের অধীনে কাজ করতে হয়। 














সোমবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০২১

জাতচক্র বিচার - বিশ্লেষণ :

 

সম্পর্ক-জ্যোতিষ :
কোনো জাতকের জন্মপত্রিকা বিচার করতে হলে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি প্রধানত বিচার করতে হবে। 
১. স্বভাব ও প্রকৃতি। 
২. শিক্ষা। 
৩. পেশা ( চাকুরী/ ব্যবসা )
৪. অর্থ ও সম্পত্তি। 
৫. বিবাহ ও বিবাহোত্তর জীবন। 
৬. দুর্ঘটনা। 
৭. রোগ, স্বাস্থ্য, আয়ু। 

বিভিন্ন প্রকার সম্পর্ক :
১. ব্যাক্তিগত সম্পর্ক (আত্মীয় ও পরিবারগত)
২. পরিবেশগত সম্পর্ক। 
৩. শিক্ষাগত সম্পর্ক। 
৪. পেশাগত সম্পর্ক। 
৫. রাজনৈতিক সম্পর্ক। 
৬. আন্তর্জাতিক সম্পর্ক। 

ব্যাক্তিগত সম্পর্ক ( স্থিরকারক গ্রহ ):
সাধারণমতে :
১. রবি - পিত ও পিতৃতুল্য ব্যাক্তি। 
২. চন্দ্র - মাতা ও মাতৃতুল্য ব্যাক্তি। 
৩. মঙ্গল - ভ্রাতা, ভগ্নী, চোর। 
৪. বুধ - মাতুল, বন্ধু-বান্ধবী। 
৫. বৃহস্পতি - পুত্র, গুরুজন, শিক্ষক, চিকিৎসক। 
৬. শুক্র - পতি ও পত্নী। 
৭. শনি -দাসদাসী, চোর। 
৮. রাহু - শত্রু। 
৯. কেতু - গুপ্তশত্রু। 

বিভিন্নভাবে আত্মীয় সম্পর্ক :
লগ্নস্থান থেকে বিচার্য : শত্রু ও মাতুলের মৃত্যু, সেপার্জিত অর্থ, ভাগিনেয় বধূ। 
দ্বিতীয়স্থানে থেকে বিচার্য : গুপ্তশত্রু, জেঠিমা, বড়ো মাতুল, কুটুম্ব। 
তৃতীয়স্থান থেকে বিচার্য : পিতারমামা, মাতার কাকা, অনুজ ভ্রাতা ও ভগিনী। 
চতুর্থস্থান থেকে বিচার্য : মাতা, বন্ধু। 
পঞ্চমস্থান থেকে বিচার্য : পিতার পুন্য, পুত্রকন্যা, পত্নীর আয়, ভাসুর, বড়ো শ্যালক। 
ষষ্ঠস্থান থেকে বিচার্য : ছোটমামা, চোর, শত্রু, কাকিমা। 
সপ্তমস্থান থেকে বিচার্য : পত্নী/স্বামী, দত্তক পুত্র। 
অষ্টমস্থান থেকে বিচার্য : ছোটভায়ের শত্রু, জেষ্ঠতাত, সম্পদ (স্থাবর অস্থাবর) 
নবমস্থান থেকে বিচার্য : পিতা, পৌত্র, ছোট শ্যালক, দেবর, পিতার অর্থ, পিতা (ব্যাক্তি)
দশমস্থান থেকে বিচার্য :  চিকিৎসক, প্রভু, রাজসম্মান, পিতা (সম্পর্ক) 
একাদশস্থান থেকে বিচার্য : শত্রুর শত্রু (বন্ধু), জেষ্ঠভ্রাতা/ভগিনী। 
দ্বাদশস্থান থেকে বিচার্য : পিতার ছোটভাই (কাকা), ছোট শ্যালকের মিত্র। 

ভাবের সাপেক্ষে আত্মীয় বিচার :

লগ্ন -
 পিতামহী (পিতার মাতা ) ---- (১০-৪)
মাতামহ (মাতার পিতা ) ----- (৪-১০)
শ্যালক পুত্র (পত্নীর ভায়ের পুত্র) ----(৭-৩-৫)
শাশুড়ির মাতা (পত্নীর মাতার মাতা)----(৭-৪-৪)
ভাগিনেয় বধূ (বোনের পুত্রবধূ )----(৩-৫-৭)
শত্রুর মৃত্যু ---(৬-৮)
ছোট মাতুলের মৃত্যু (মায়ের ছোট ভায়ের মৃত্যু)---(৪-৩-৮)
পুত্রের ভাগ্য ---(৫-৯)

দ্বিতীয় ভাব :(কুটুম্ব প্রতিপাল্য বিষয়)
মায়ের বড়ভাই (মাতুল) ---(৪-১১)
জেঠিমা (জেঠার পত্নী) ---(১০-১১-৭)
গুপ্তশত্রু 

তৃতীয়ভাব: (অনুজ ভ্রাতা/ভগিনী, জ্ঞাতি)
পিতার মামা ---((১০-৪-৩)
মাতার কাকা ---(৪-১০-৩)
ছোট শ্যালকের পত্নী (পত্নীর ছোটভায়ের স্ত্রী) ---(৭-৩-৭)

চতুর্থভাব : মাতা, বন্ধু, সুখ, বিদ্যা, ভূমি প্রভৃতি। 
শশুর (পত্নীর পিতা)---(৭-১০)
ছোট মাতুলের পুত্রবধূ (মায়ের ছোটভায়ের পুত্রবধু)---৪-৩-৫-৭)
পিতৃব্য পুত্র (পিতার ছোটভায়ের পুত্র)---(১০-৩-৫)
পিতার সম্পদ (স্থাবর-অস্থাবর)---(৯-৮)
পিতার আয় ---(৯-৮)

পঞ্চমভাব: পুত্র/কন্যা (প্রথম), শিষ্য, প্রতিভা। 
তৃতীয়ভ্রাতা ---(৩-৩)
জেষ্ঠভ্রাতার পত্নী ---(১১-৭)
পিতার পুন্য ---(৯-৯)
পত্নীর আয় ---(৭-১১)
মাতার ধন ---(৪-২)

ষষ্ঠভাব: শত্রু, চোর, মাতুল (মায়ের ছোট ভাই )
পিতৃব্য পত্নী (পিতার ছোটভায়ের স্ত্রী)---(১০-৩-৭)
পিতার গুরু--- (১০-৯)
বিবাহবিচ্ছেদ ---(৭-১২)
স্ত্রীর বিচ্ছেদ ---(৭-১২)
পুত্রের ধন ---(৫-২)

সপ্তমভাব :পতি/পত্নী 
দত্তক পুত্র ---(৩-৫)
দ্বিতীয় পুত্র ---(৩-৫)
চতুর্থভ্রাতা ---(৩-৩-৩)
মাতামহী(মায়ের মাতা)---(৪-৪)
পিতামহ(পিতার পিতা)---(১০-১০)

অষ্টমভাব: নিধন, মৃত্যু,আয়ু। 
ভ্রাতার শত্রু---(৩-৬)
স্বামী/স্ত্রীর শারীরিক কষ্ট 
পিতৃব্য পৌত্র ---(১০-৩-৫-৫)

নবমভাব:পিতা(ব্যাক্তি), ভাগ্য, ধর্ম। 
শ্যালক (পত্নীর ভ্রাতা )---(৭-৩)
দেবর (পতির ভ্রাতা ) ---(৭-৩)
পৌত্র(পুত্রের পুত্র)--- (৫-৫)
পঞ্চমভ্রাতা ---(৩-৩-৩-৩)
দ্বিতীয় পত্নী ---(৭-৩)
তৃতীয় পুত্র ---(৫-৩-৩)

দশমভাব: পিতা(সম্পর্ক), কর্ম। 
শাশুড়ি(পত্নীর মাতা) ---(৭-৪)
কনিষ্ঠ ভ্রাতার মৃত্যু ---( ৩-৮)
পুত্রের শত্রু ---(৫-৬)
মাতুল পুত্র ---(৬-৫)
চিকিৎসক 
প্রভু 

একাদশভাব: জেষ্ঠভ্রাতা, আয়। 
পিতার ধন---(১০-২)
মাতার আয়ু---(৪-৮)
শত্রুর শত্রূ ---(৬-৬)
ভ্রাতার ভাগ্য ---(৩-৯)
পত্নীর বুদ্ধি ---(৭-৫)
চতুর্থ সন্তান---(৫-৩-৩-৩)

দ্বাদশভাব : 
পিতৃব্য ব্যয় ---(১০-৩)
মাতুলানী(মামী)---(৬-৭)
পুত্রের মৃত্যু ---(৫-৮)
শ্যালকের মিত্র---(৭-৩-৪)
পত্নীর রোগ ---(৭-৬)
শত্রূর পত্নী---(৬-৭)
  













রবিবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০২১

কেন্দ্র ত্রিকোনাদি সংজ্ঞা :

 কেন্দ্র ত্রিকোনাদি সংজ্ঞা :

কেন্দ্র :
চতুর্থস্থান, সপ্তমস্থান, এবং দশমস্থানকে কেন্দ্র আখ্যা দেওয়া হয়। কেন্দ্র হিসেবে লগ্ন অপেক্ষা চতুর্থস্থান, চতুর্থস্থানে অপেক্ষা সপ্তমস্থান, এবং সপ্তমস্থান অপেক্ষা দশমস্থান অধিক বলবান। কেন্দ্রের নামান্তর কণ্টক ও চতুষ্টয়। কেন্দ্রবর্তী শুভগ্রহ বিশেষ শুভফল ও কেন্দ্রস্থ পাপগ্রহ বিশেষ অশুভ ফল প্রদান করে থাকে। 
ত্রিকোণ :
লগ্নের পঞ্চমস্থান এবং নবমস্থানকে ত্রিকোণ বা কোণ আখ্যা দেওয়া হয়ে থাকে। নবম কোণ অপেক্ষা পঞ্চম কোণ অধিক শুভপ্রদ। লগ্নের কেন্দ্রত্ব ও কোনত্ব প্রবল বলেই স্বীকৃত। এই জন্যই নবম ও পঞ্চমকে বিশেষভাবে কোণ বলা হয়। 
চতুরস্র :
লগ্নের চতুর্থস্থান এবং অষ্টমস্থানকে চতুরস্রও আখ্যা দেওয়া হয়ে থাকে। 
পনফর :
লগ্ন থেকে গণনায় দ্বিতীয়, পঞ্চম, অষ্টম ও একাদশস্থানকে পনফর আখ্যা দেওয়া হয়ে থাকে। 
আপক্লিম : লগ্ন থেকে গণনায় তৃতীয়, ষষ্ঠ, নবম ও দ্বাদশস্থানকে আপক্লিম আখ্যা দেওয়া হয়ে থাকে। 
উপচয় : লগ্ন থেকে গণনায় তৃতীয়, ষষ্ঠ, দশম ও একাদশস্থানকে উপচয় আখ্যা দেওয়া হয়ে থাকে। 
দুঃস্থান ;
লগ্ন থেকে গণনায় ষষ্ঠ, অষ্টম, এবং দ্বাদশস্থানকে দুঃস্থান আখ্যা দেওয়া হয়ে থাকে। 
যার জন্মকুণ্ডলীর দুঃস্থানে অধিক গ্রহ অবস্থান করে সে জীবনে সহজে শান্তিলাভ করতে পারেনা। দুঃস্থানের ষষ্ঠস্থানে যে কেন গ্রহই কিছু না কিছু অশুভ ফল প্রদান করে। তবে ষষ্ঠ স্থানের অপর নাম শত্রুস্থান। ষষ্ঠস্থানে পাপগ্রহ শত্রু হানি ঘটাতে সক্ষম। তাই ষষ্ঠস্থানে পাপগ্রহ থাকাকে মন্দের ভালো বলা হয়ে থাকে। 













  

শনিবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০২১

গ্রহরত্ন ধারণে রোগ প্রতিরোধ :

 গ্রহরত্ন ধারণে রোগ প্রতিরোধ :
মানুষ গ্রহ রত্ন ধারণ করে নানা সমস্যা, বিপদ, অর্থহানি, জীবনহানি প্রভৃতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। মানবদেহের উপর গ্রহগণের প্রভাব সীমাহীন। একারণে গ্রহগণের কুপ্রভাবে মানুষকে নানা জটিল রোগেও ভুগতে হয়। গ্রহরত্ন ধারণে গ্রহশান্তি ঘটে এবং মানুষের নানা সমস্যার সঙ্গে সঙ্গে দেহস্থ রোগেরও উপশম ঘটে। নিম্নে রোগ প্রতিরোধক গ্রহ রত্নের একটি তালিকা দেওয়া হলো:-
চুনী :
হৃদরোগ, অস্থিরোগ ও ব্লাডপ্রেসারের প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। 
মুক্ত :
দন্তরোগ, হাঁপানি, মূত্রাশয়ের রোগ, মানসিক রোগ, হার্টের রোগ, জড়বুদ্ধি, বন্ধ্যাত্ব প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। 
প্রবাল :
চক্ষুরোগ, রক্তস্রাব,রক্তামাশয়,অর্শ, ভগন্দর, ব্রঙ্কাইটিস, রক্তশুন্যতা, সন্ন্যাসরোগ, কোষ্ঠবদ্ধতা, হার্টের রজার উপশম হিসেবে কাজ করে। 
পান্না :
\চর্মরোগ, বাত, অম্ল অজীর্ণ, তোতলামি, হাঁপানি, বক্ষপীড়া, মানসিকরোগ, কোষ্ঠকাঠিন্য, পক্ষাঘাত, জড়বুদ্ধি, ব্রণ বা ফোঁড়া উপশমে কাজ করে। 
পোখরাজ :
টিউমার, যকৃৎ ও গ্ল্যান্ডের রোগ প্রতিরোধে কাজ করে। 
হীরা :
ডায়াবেটিসের মোক্ষম প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। 
নীলা ;
চর্মরোগ, চক্ষুরোগ, গেঁটেবাত, ক্যান্সার, অস্থি, কৃশতা, যক্ষা, ব্লাডপ্রেসার, ডায়াবেটিসের প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। 
গোমেদ :
লিভার ও পাকস্থলীর রোগ, ব্রণ বা ফোঁড়া প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। 
ক্যাটস আই:
চর্মরোগ ও ক্যান্সারের প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। 







শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২১

মানবদেহে গ্রহগণের অবস্থান


গ্রহগণ মানবদেহের কোনো না কোনো অংশে অবস্থান করেন। অর্থাৎ দেহের সেই অংশগুলিতে সেই গ্রহগণ আধিপত্য বিস্তার করেন। কোনো জাতকের নিকট সেই গ্রহ শুভ হলে, তার প্রভাবিত দেহাংশের শুভ প্রয়োগ ঘটে, আবার সেই গ্র্রহ অশুভ হলে, এর বিপরীত ফল দান করেন। অর্থাৎ সেই অংশগুলিতে নানা রোগ দেখা দিতে পারে। তাই এই বিষয়টি জানা থাকলে আমরা সতর্ক হতে পারি এবং এর প্রতিকার গ্রহণ করাও সম্ভব হতে পারে। এভাবে আমরা নিজেদের চিন্তাশক্তি, দৃষ্টিশক্তি, হজমশক্তি, প্রজননশক্তি ইত্যাদির বিষয়ে শুভাশুভ ফল অবগত হতে পারি। 

মানবদেহে গ্রহগণের অবস্থান চিত্রটি এরূপ :
রবি গ্রহের প্রভাব : মস্তিস্ক, মেরুদন্ড, অস্থি, পুরুষের ডানচুক্ষ, স্ত্রীলোকের বামচক্ষু, মুখ ও হৃদয়। 
চন্দ্র গ্রহের প্রভাব : পুরুষের বাম অঙ্গ, স্ত্রীলোকের ডান অঙ্গ, কণ্ঠ, তালু, উদোর, গ্রন্থি ও মূত্রাশয় যন্ত্র। 
মঙ্গল গ্রহের প্রভাব : গুহ্যদেশ (আংশিক), মস্তিষ্কের পিছনের দিক। 
বুধ গ্রহের প্রভাব : হাত, মুখ, দাঁত, গলনালী, নিঃস্বাস গ্রহণ যন্ত্র, মস্তিস্ক প্রভৃতি। 
বৃহস্পতি গ্রহের প্রভাব : পাকযন্ত্র, যকৃৎ, গ্লান্ড প্রভৃতি। 
শুক্র গ্রহের প্রভাব : জননেন্দ্রিয় এবং বীর্য। 
শনি গ্রহের প্রভাব : স্নায়ু, পেশী, চুল, নখ, লোম, দাঁত, অস্থি প্রভৃতি। 
রাহু গ্রহের প্রভাব : যকৃৎ, পাকস্থলী, নাক, মুখ, চোখ, কান, জিহ্বা, ত্বক ইত্যাদি। 
কেতু গ্রহের প্রভাব : মেরুদন্ড, ক্ষুদ্রান্ত মন্ডলী ইত্যাদি। 

গ্রহ শান্তির জন্য দান :


কোনো গ্রহ প্রতিকূল হলে জাতকের জীবনে অশুভ প্রভাব পড়ে। কিন্তু সব কিছুরই কোনো না কোনো প্রতিকার আছে। গ্রহ শান্তির জন্য কেউ রত্ন, ধাতু, মূল বা কবজ ধারণ করেন। এতে কম বেশি অবশ্যই সুফল লাভ সম্ভব। এছাড়াও নানাবিধ উপায় আছে। যেমন - ঈশ্বরের নাম জপ, গ্রহমন্ত্র জপ, ভজন, কীর্তন ইত্যাদি। উপরন্তু আরও একটি পথ হলো- গ্রহশান্তির জন্য দান। হিন্দুশাস্ত্রে উল্লেখ আছে, দানে মহাপুণ্য সঞ্চিত হয়। সুতরাং গ্রহশান্তির দানেরও অবশ্যই কিছু মূল্য আছে। তাই এখানে আমরা শাস্ত্রে উল্লেখিত, কোন গ্রহের জন্য কি দান, তা বর্ণনা করলাম। এগুলি থেকে কিছু কিছু বস্তু দান বিধেয়। একান্ত অসম্ভব হলে, অন্তত কিছু দুঃখীজনকে অনুদান করা কর্তব্য। 
রবির দান :
মানিক বা চুনী , অভাবে যথাসাধ্য অর্থমূল্য। সবৎসা গাভী, অভাবে যথাসাধ্য অর্থমূল্য। স্বর্ণ বা তাম্র, অভাবে যথাসাধ্য অর্থমূল্য। এছাড়া গম, কুম্ভ, রঞ্জিত বস্ত্র, গুড় বা শর্করা, রক্তচন্দন, রক্তপদ্ম,আতপচাল ইত্যাদি। 
চন্দ্রের দান :
মুক্ত, অভাবে যথাসাধ্য অর্থমূল্য, রৌপ্য পাত্রপূর্ণ আতপচাল, হাল চাষের উপযোগী বৃষ, অভাবে যথাসাধ্য অর্থমূল্য। এছাড়া কর্পূর, শ্বেতবস্ত্র, ঘৃতপূর্ণ কুম্ভ ইত্যাদি। 
মঙ্গলের দান :
প্রবাল, অভাবে যথাসাধ্য অর্থমূল্য। স্বর্ণ, অভাবে যথাসাধ্য অর্থমূল্য। লালবর্ণের বৃষ,অভাবে যথাসাধ্য অর্থমূল্য। এছাড়া গম, মুসুর, কলাই, গুড়, রক্তবর্ণ বস্ত্র, করবী পুষ্প ইত্যাদি। 
বুধের দান :
পান্না, অভাবে যথাসাধ্য অর্থমূল্য। স্বর্ণ, অভাবে যথাসাধ্য অর্থমূল্য। হস্তিদন্ত, অভাবে যথাসাধ্য অর্থমূল্য। এছাড়া কাঁসা, দ্রাক্ষা, মগ, কলাই, পীতপুষ্প ইত্যাদি। 
বৃহস্পতির দান :
পোখরাজ, অভাবে যথাসাধ্য অর্থমূল্য। স্বর্ণ, অভাবে যথাসাধ্য অর্থমূল্য। ঘোড়া, অভাবে যথাসাধ্য অর্থমূল্য। এছাড়া পীতবস্ত্র, চিনি, হরিদ্রা, লবন ইত্যাদি। 
শুক্রের দান :
হীরক, অভাবে যথাসাধ্য অর্থমূল্য। স্বর্ণ- রৌপ্য, অভাবে যথাসাধ্য অর্থমূল্য। ধেনু, অভাবে যথাসাধ্য অর্থমূল্য। এছাড়া শ্বেতবস্ত্র, সুগন্ধি দ্রব্য, আতপচাল, ঘৃত ইত্যাদি। 
শনির দান :
নীলকান্তমণি বা নীলা, অভাবে যথাসাধ্য অর্থমূল্য। মহিষ, অভাবে যথাসাধ্য অর্থমূল্য। এছাড়া লৌহপাত্র, তেল, কৃষ্ণতিল, মাষকলাই, কুলত্যাকলাই ইত্যাদি। 
রাহুর দান :
গোমেদ, অভাবে যথাসাধ্য অর্থমূল্য। অশ্ব, অভাবে যথাসাধ্য অর্থমূল্য। এছাড়া লৌহপাত্র, নীলবস্ত্র, কালো কম্বল, তেল, ক্রিস তিল ইত্যাদি। 
কেতুর দান :
ক্যাটসআই বা বৈদুর্যমনি, অভাবে যথাসাধ্য অর্থমূল্য। মৃগমেধ, অভাবে যথাসাধ্য অর্থমূল্য। এছাড়া তেল, কৃষ্ণ তিল, কালো কম্বল, খড়গ ইত্যাদি।  










গ্রহগণের উপাস্য দেবীগণের মাহাত্ম্য

রবিগ্রহের অধিষ্ঠাত্রী দেবী "মাতঙ্গী":

দেবী মাতঙ্গী হলেন দশমহাবিদ্যার নবম মহাবিদ্যা। তিনি কিরাতরূপী মহাদেবের সঙ্গে চণ্ডালিনীরূপে মিলিত হয়েছিলেন। শিবের বরে তিনি "উচ্ছিষ্টা চণ্ডালিনী" নাম পরিচিতা। শক্তি পূজান্তে তাঁর নামে পূজা দিলে তবেই পূজার সিদ্ধি ঘটে। দেবী মাতঙ্গির ধ্যানে বলা হয়েছে, তিনি রত্নময় বেদিতে বিনাবাদনরতা অবস্থায় উপবেশন করে আছেন। প্রস্ফুটিত শতদলের উপর তিনি তাঁর একটি চরণ রেখেছেন।তাঁর মস্তকে শোভিত চন্দ্রকলা, তাঁর কণ্ঠে শ্বেতপদ্মের মালা দোদুল্যমান এবং তিনি রক্তবস্ত্র পরিহিতা। তাঁর মাথার চুল একত্র করে বাঁধা। শঙ্খপাত্রে অমৃত পান করে তিনি বিহব্বল হয়ে আছেন। তাঁর কপালে বিচিত্র তিলক সুশোভিত। বৈদিক আচার্যদের মতে, তিনি স্বরস্বতী স্বরূপা, কেননা তাঁর  চারটি হস্তে চারটি বেদ প্রতিষ্ঠিত আছেন, এবং তিনি বীণাবাদনের মাধ্যমে বিদ্যা বিতরণ করছেন। খ্যাতিমান গ্রহ রবি সঙ্গত কারণে তাঁর উপাসনা করে থাকেন।  

চন্দ্রের অধিষ্ঠাত্রী দেবী ও তার বর্ণনা :

চন্দ্রের অধিষ্ঠাত্রী দেবী হলেন "কমলা" : দশমহাবিদ্যার সর্বশেষ দেবী হলেন এই কমলা। তিনি হলেন মহালক্ষ্মী স্বরূপা। তাঁর মূর্তি অতি স্নিগ্ধ এবংহ তিনি সর্বদা কৃপা ও করুনা দান করে থাকেন। একই দেহে তিনি কালী ও কমলা রূপে বিরাজিত। কালী হলেন বিমূর্ততার প্রতীক এবং দেবী কমলা হলেন শ্রীরূপিণী মূর্তিময়ী বিগ্রহ। তাঁর বর্ণনা করতে গিয়ে বলা হয়েছে , তিনি কাঞ্চনাবর্ণা, হিমগিরির মতো চারটি হস্তী শুঁড় দিয়ে হিরণ্ময় অমৃত ঘট তুলে তাঁকে অমৃত ধারায় ম্লান করাচ্ছে। দেবীর চারটি হস্ত, দুটি হস্তে তিনি দুটি পদ্ম ধারণ করেন, আর দুটি হস্তের একটিতে বরাভয় মুদ্রা, অপরটিতে অভয়মুদ্রা সংস্থাপিত থাকে। তিনি পট্টবস্ত্র পরিহিতা এবং তার মস্তকে উজ্জ্বল মুকুট শোভিত হয়ে আছে। তিনি বিষ্ণুর বক্ষ বিলাসিনী রূপে অবস্থান করেন। অনুভূতিশীল চন্দ্র গ্রহ এই কমলাদেবীর উপাসনা করেন।  

মঙ্গল গ্রহের অধিষ্ঠাত্রী দেবী হলেন "বগলামুখী"

দশমহাবিদ্যার অষ্টম মহাবিদ্যা হলেন এই বগলামুখী। দেবী বগুলা পীতবস্ত্র পরিহিতা, পিত পুষ্পপ্রীয়া এবং পীত অলঙ্কারভূষিতা। তিনি গম্ভীরা ও মদোন্মত্তা, তাঁর যত্ন তপ্ত কাঞ্চনের মতো। তিনি চতুর্ভূজা, ত্রিনয়না, এবং কমলাসনে আসীনা। তন্ ডানহস্তে দুদ্গর ও পাশ এবং বামহস্তে ধরা আছে শত্রুর জিহ্বা ও নাসিকা (বক্র), তাঁর কানে রয়েছে স্বর্ণময় কুন্তল এবং মস্তকে রয়েছে পীতবর্ণের অর্ধচন্দ্র। বিষ্ণুর তপস্যায় বগলাদেবীর আবির্ভাব ঘটেছিলো। সত্যযুগে একবার প্রবল বায়ুবেগ সৃষ্টি হলে চরাচর রসাতলে যেতে বসেছিল। তখন বিষ্ণুর তপস্যায় সন্তুষ্ট হয়ে তিনি আবির্ভূত হন এবং বায়ুবেগ রোধ করেন। বীরের কারক গ্রহ মঙ্গল তাই সূর্য-বীর্যের প্রতীক স্বরূপ বগলামুখীর উপাসনা করে থাকেন। 

বুধ গ্রহের অধিষ্ঠাত্রী দেবী "ত্রিপুরাসুন্দরী"

দশমহাবিদ্যার পঞ্চম মহাবিদ্যা হলেন এই দেবী। মহিষাসুরকে বোধের পূর্বে দূর্গা যে চন্ড মূর্তি ধারণ করেছিলেন, তিনিই হলেন ত্রিপুরাভৈরী বা ত্রিপুরাসুন্দরী। শিবকে স্বামীরূপে পাওয়ার জন্য হিমালয় কোননা উমা কঠোর তপস্যা করেছিলেন। তাই তিনি অপর্ণা বা ত্রিপুরাভৈরবী। তপস্যায় সিদ্ধিলাভ করে তিনি হলেন কালভৈরবের ভার্যা, এই অর্থেও তিনি ভৈরবী। তিনি সূর্যকল্প রক্তবর্না এবং রক্তবস্ত্র পরিহিতা। তিনি অসুরদলনী, তাঁর কণ্ঠে বিভিন্ন বর্ণের মুণ্ডমালা। তাঁর চারটি হস্তে যথাক্রমে জপমালা, শাস্ত্রগ্রন্থ, বরমুদ্রা ও অভয়মুদ্রা উপস্থাপিত। তাঁর তিনটি নেত্রে বেদ রক্ষিত। এই দেবীর মুখশ্রী পদ্ম সাদৃশ্য, তিনি দুঃখসংহন্ত্রী, যমদুঃখনাশিনী।  মনন শক্তিকারক গ্রহ বুধ ত্রিপুরাসুন্দরীর উপাসনা করেন।  

বৃহস্পতি গ্রহের অধিষ্ঠাত্রী দেবী "তারা":

দশমহাবিদ্যার দ্বিতীয় মহাবিদ্যা হলেন জগন্মাতা। তিনি তারা, তারিণী, ভবানী, তিনিই মা দূর্গা। তিনি তারা অর্থাৎ নক্ষত্র বা জীবজগতের চোখের মনি। তিনি তারিণী, অর্থাৎ ভক্তদের চণ্ডরূপ বিপদ থেকে রক্ষা করেন। তিনি ভবানী, অর্থাৎ জগৎ পালন করেন। তিনি দূর্গা, কারণ তিনি মহামায়া ও ভাগবতী -সৃষ্টিকর্ত্রী পরমেশ্বর স্বরূপা। তিনি নীলবর্ণা, খর্বাকৃতি, লম্বোদরী, মুণ্ডমালা বিভূষিতা। বাঘছালে তাঁর কটিদেশ আবৃত। তিনি চতুর্ভূজা- তাঁর ডানহাতে খড়গ এবং কাটারি, বামহাতে খরপর ও পদ্ম। তিনি ত্রিনয়নের দ্বারা অভয় প্রদান করেন। বিশ্বব্যাপী জলের মধ্যে তিনি শ্বেতপদ্মে বিরাজ করেন এবং ভক্তদের পারের সন্ধান দেন। তিনি জ্বলন্ত চিতার মধ্যেও অবস্থান করেন, তাই তিনি অন্তিমের ভাবনা জাগিয়ে তোলেন, ভক্তদের আধ্যাত্মবাদের সন্ধান দেন। পরম প্রজ্ঞাবান বৃহস্পতি গ্রহ তাই জগন্মাতা তারার উপাসনা করেন।  

শুক্র গ্রহের অধিষ্ঠাত্রী দেবী "ভুবনেশ্বরী ":

দশমহাবিদ্যার চতুর্থ মহাবিদ্যা হলেন ভুবনেশ্বরী দেবী। সৃষ্টিকর্তা ব্রম্ভা যখন সৃষ্টির বাসনায় তপস্যামগ্ন ছিলেন, তখন মহামায়া ভূবনেশ্বরী রূপে তাঁকে দর্শন দেন। জগন্মাতা দুর্গাকে তাই ভুবনেশ্বরী বলা হয়। তিনি বিশ্ব পালন করেন। যতদিন পর্যন্ত বসুন্ধরা শস্যশ্যামলা হয়নি, ততদিন পর্যন্ত মাতা ভুবনেশ্বরী তাঁর করস্থিত ফলমূল শাকসবজি দিয়ে জীবের প্রাণ রক্ষা করেন, এজন্য তাঁর নাম হয় শতাক্ষী এবং শাকম্ভরী। তিনি সূর্যের মতো প্রভাময়ী, তাঁর মস্তকে চন্দ্রকিরীট। তিনি হাস্যময়ী। এই চতুর্ভূজা দেবীর বামহস্ত বরমুদ্রা ও পাশ এবং ডানহস্তে অংকুশ ও অভয়মুদ্রা। এই ত্রিনয়না দেবীর দক্ষিণ পদটি রত্ন ঘটের উপর অবস্থিত। তিনি যেমন পৃথিবীকে জলময়তা থেকে উদ্ধার করেছেন। এই দেবীর সন্তানবৎসলা ও ভক্তদের পরমাশ্রয় এবং তিনি সৃষ্টিরক্ষাকর্তী। একারণে বীর্যবান শুক্র গ্রহ নিয়ত তাঁর ভজনা করেন। 

শনি গ্রহের অধিষ্ঠাত্রী দেবী "দক্ষিণাকালী"

দশমহাবিদ্যার প্রথম মহাবিদ্যা হলেন দক্ষিণাকালী বা কালীমাতা। স্বরূপগত ভাবে কালী এক, কিন্তু ভক্ত হৃদয়ে তিনি বিভিন্নরূপে বিরাজিতা, যেমন - দক্ষিণাকালী, সিদ্ধকালী, গুহ্যকালী, শ্রীকালী, ভদ্রকালী, চামুণ্ডাকালী, স্মশানকালী ও মহাকালী। দক্ষিণাকালী বা কালীমাতা হলেন করালবদনা, মুক্তকেশী, ঘোর আকৃতি বিশিষ্ট ও চতুর্ভূজা। তিনি মুণ্ডমালাবিভূষিতা। তাঁর বামহস্তে রক্ত ক্ষরিত নরমুণ্ড ও খড়গ এবং ডানহস্তে স্থিত হয়ে আছে অভয়মুদ্রা ও বরমুদ্রা। শ্যামবর্ণা এই দেবী দিগম্বরী। সাধকের নিকট তিনি চিন্ময়ী, ব্রম্ভস্বরূপা, স্বগুনা এবং নির্গুণা। তিনি তাই অখণ্ড মন্ডলকার। তিনি আবরণহীন, ফলে তিনি মায়াতীত। তিনি সংসার বন্ধনকারী, আবার তিনি মৃত্যুর প্রতীক। একাধারে তিনি রোগ, শোক ও মহামারী বিষকুম্ভ থেকে বিতরণ করেন, আবার আরাধনাকারীকে তিনি মুক্তিময় অমৃত দান করেন, ভক্তের নিকট তাই তিনি করুণাময়ী মহামায়া। একারণে ধর্মরাজ শনি নিয়ত তাঁর আরাধনা করেন।  

রাহুর অধিষ্ঠাত্রী দেবী "ছিন্নমস্তা":

দশমহাবিদ্যার ষষ্ঠ মহাবিদ্যা হলেন এই ছিন্নমস্তা দেবী। দেবী পার্বতী একদিন মন্দাকিনী ধারায় স্নান করতে গিয়েছিলেন, তাঁর সঙ্গে ছিলেন তাঁর দুই সখি- ডাকিনী ও বর্ণিনী। তাঁদের হঠাৎ ক্ষুদার উদ্রেক হলে দেবীর কাছে আহার্য প্রার্থনা করেন। কিন্তু বারবার এভাবে একই প্রার্থনা করে দেবী ঈষৎ কুপিতা হয়ে তাঁর বাম নখর দিয়ে নিজের মস্তক ছিন্ন করেন এবং নিজের মস্তকটি ডানহস্তে ধারণ করেন। তৎক্ষণাৎ ছিন্ন গলদেশ থেকে তিনটি রক্তধারা নির্গত হলো। এর একটি ধারা গেল বাম দিকের ডাকিনীর মুখে আর একটি ধারা গেল ডানদিকের বর্ণিনীর মুখে এবং তৃতীয় ধারাটি গেল দেবীর ছিন্ন মুন্ডের মুখে। এই দেবীর মুখ বিকৃত, তাঁর উগ্র জিভটি লেলিহান অবস্থায় আছে। তাই তিনি ভয়ঙ্করী। দেবীর গাত্রবর্ণ কালো হলেও তিনি কোটি সূর্যের মতো প্রভাবিশিষ্ট। এই দিগম্বরীর গলদেশে নাগ উপবীত ও সঞ্চরণশীল মালা। জগতে মস্তক হলো অহংকারের মূল উৎস, তাই দেবী ছিন্নমস্তা। তাঁকে আরাধনা করলে শিবত্ব লাভ হয়। নির্মম ও নিরহংকারী সাধনার দ্বারা তাঁকে প্রাপ্ত হওয়া যায়। ছিন্ন মস্তক ও ত্যাগের অধিকারী গ্রহ রাহু তাই এই দেবীর নিয়ত উপাসনা করে থাকেন।  

কেতু গ্রহের অধিষ্ঠাত্রী দেবী "ধূমাবতী":

দশমহাবিদ্যার সপ্তম মহাবিদ্যা হলেন এই দেবী ধূমাবতী। দেবী সতী স্বামী নিন্দায় বিহুবলচিত্ত হয়ে দেহত্যাগ করেন। তখন তাঁর দেহ থেকে বিপুল ধুমরাশি নির্গত হয়েছিল, তা থেকে ধূমাবতী দেবীর উত্থান ঘটে। এই দেবী হলেন বিবর্না, চঞ্চলা, কৃষ্ণা ও দীর্ঘাঙ্গী। তিনি মলিন বস্ত্র পরিহিতা, তাঁর কেশরাশিও বিবর্ণ এবং বিরলদন্তী। তিনি রুক্ষা ও বিধবা। তাঁর চোখগুলি রুক্ষ ও কালো। তিনি কম্পিত হস্তে সুর্প ধরে আছেন। তাঁর ওপর হস্তে রয়েছে বরমুদ্রা। তিনি বিশাল বদনা, কুটিল নয়না, কলহপ্রিয়, স্বভাব কুটিলা ও সর্বদা ক্ষুদা তৃষ্ণায় কাতর এবং তাঁর হস্ত দুইটি সদা কম্পমান। তিনি হয়তো মোক্ষ দান করেন না, কিন্তু এই দেবী কিন্তু শত্রুবিনাশিনী। কেতু হৃদয়হীন গ্রহ হলেও কৈবল্যের কারণ এবং তাঁর অধিষ্ঠাত্রী দেবী হলেন এই দেবী ধূমাবতী। দেবী ধূমাবতী শত্রুনাশ করেন এবং রাহুগ্রহ স্থবির চিত্তে পাপনাশ করেন। 





মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী, ২০২১

বিশেষ কয়েকটি উপরত্নের ব্যাবহারিক প্রয়োগ :

 

১. গারনেট - বৃশ্চিক, কুম্ভ বা মীন লগ্নে জন্ম যাদের এবং জন্মকালীন রবি বা চন্দ্র এই তিনটি রাশির কোনো একটি রাশিতে অবস্থান করলে গারনেট ধারণ করা উচিত। 

২. ফিরোজা - বৃষরাশির জাতক জাতিকা ফিরোজা ব্যবহার করতে পারে। 

৩. হকিক - যেসকল বিবাহিত নারীর মিথুনরাশিতে রবি বা চন্দ্র অবস্থিত অথবা যাদের মিথুনলগ্নে জন্ম তাদের সার্বিক সুখশান্তির জন্য হকিক ব্যবহার করা যেতে পারে। 

৪. মুনস্টোন - যাঁরা কৃষ্ণপক্ষে জন্মগ্রহণ করেছেন তাঁরা মুনস্টোন ধারণ করলে ভবিষ্যতের পূর্বাভাস পেতে পারেন। আবার যাঁরা শুক্লপক্ষে জন্মগ্রহণ করেছেন তাদের বিবাহিত জীবনের নানাবিধ অশান্তিনাশ করে। 

৫. স্ফটিক - জন্মসময়ে রবি মেষ বা তুলারাশিতে অবস্থিত হলে মুনস্টোন ধারণ না করে স্ফটিক ধারণ করলে শুভফল পাবে। 

৬. তুরমলিন - জন্মসময়ে রবি বৃষ বা বৃশ্চিকরাশিতে অবস্থিত হলে তুরমলিন ধারণ করা যায়। 

৭. লাপিসলাজুলি - জন্মকুণ্ডলীতে রবি কর্কট বা মকররাশিতে অবস্থিত হলে লাপিসলাজুলি, প্রবাল ও ওপাল ধারণ করা উচিত নয়। 

৮. এমেথিস্ট - যাদের জন্মলগ্ন মকররাশি এবং জন্মকালে রবি বা চন্দ্র মকর রাশিতে অবস্থিত এবং যাদের চুনী ক্রয় করার সামর্থ্য নেই, তাদের পক্ষে এই রত্নটি ধারণে সর্বপ্রকার শুভ হয়ে থাকে। 

৯. ব্লাডস্টোন - শুধুমাত্র রুপাতেই ব্লাডস্টোন ধারণ করতে হয়। এই রত্নটি শুধুমাত্র পুরুষের উপযুক্ত, স্ত্রীলোকেরা এই রত্নের পরিবর্তে একোয়ামেরিন ধারণ করবেন। 

১০. ক্রাইসো - এই রত্নটি হাতে বা গলায় ধারণ করা যেতে পারে। কিন্তু যেসকল জাতক জাতিকার জন্মকালে রবি মীন বা কর্কটরাশিতে অবস্থিত তাদের পক্ষে এই রত্ন ধারণ করা উচিত নয়। 

১১. সার্ডনিক্স - রবিগ্রহের প্রতিকারে চুনীর পরিবর্তে এই রত্নটি ধারণ করা যেতে পারে। 

১২. কর্ণেলিয়ান - যাদের জন্মসময়ে রবি কন্যারাশিতে অবস্থিত, তাদের কখনো হলুদ বর্ণের এই রত্নটি ধারণ করা উচিত নয়। 

১৩. জেড - জন্মসংয়ে রবি ধনুরাশিতে বা মিথুনে অবস্থিত হোম তাদের পক্ষে জেড বা কর্ণেলিয়ান ধারণ করা সঙ্গত। জেড শুধুমাত্র রুপার আংটিতে বা লকেট, কবজে ধারণ করা যায়। 

১৪. ওপাল - যাদের রাশিতে চন্দ্র ও শুক্র কু- দৃষ্টিতে থাকে, তারা এই রত্ন ধারণ করলে পাপগ্রহের দৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে পারে। যারা অক্টোবর মাসে জন্মগ্রহণ করেছেন তারা এই ধারণ করলে ভাগ্য ক্রমে ক্রমে পরিবর্তিত হয়।  










শনিবার, ২ জানুয়ারী, ২০২১

২০২১ সালের রাশিগত জ্যোতিষ প্রতিকার


মেষরাশি :

১. তামা বা সোনার আংটিতে  রক্তপ্রবাল ধারণ করুন অনামিকাতে। 

২. স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য অনন্তমূল ধারন করুন। 

৩. প্রতিদিন হনুমান চালিশা পাঠ করুন। 

৪. দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের যেকোনো একটি দর্শন করুন। 

৫. গৃহে সত্যনারায়ণ পূজা করুন। 

৬. সূর্যদেবের উদ্দেশ্যে অর্ঘ্য প্রদান করুন। 

বৃষরাশি :

১. সোনা বা রুপার আংটিতে অপ্যাল বা হীরা ধারণ করুন। 

২. শুক্রবার দরিদ্র ভিক্ষুকদের সাদা মিষ্টি দান করুন। 

৩. প্রতিদিন আদ্যাস্ত্রোত্র পাঠ করুন। 

৪. মহামৃত্যঞ্জয় কবজ ধারণ করুন। 

৫. লক্ষ্মী পাদুকা গৃহে স্থাপন করুন। 

মিথুনরাশি :

১. উন্নতমানের পান্না কনিষ্ঠাঙ্গুলে ধারন করুন। 

২. পরিবারে প্রবীণ মহিলাদের বস্ত্র দান করুন। 

৩. নবগ্রহ স্তোত্র পাঠ করুন। 

৪. গৃহে বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লক্ষ্মীশ্রী যন্ত্র স্থাপন করুন। 

৫. পঞ্চমুখী রুদ্রাক্ষ ৩টি গলায় ধারণ করুন। 

কর্কটরাশি :

১. যেকোনো সোমবার চন্দ্রের হোরা চলাকালীন সময়ে উৎকৃষ্ট মুক্ত ধারণ করুন। 

২. হনুমান চালিশা ও গণেশের ধ্যান প্রত্যহ পাঠ করুন। 

৩. ডানহাতের কব্জিতে লাল ও হলুদ সুতো ইষ্টদেবতাকে স্মরণ করে বেঁধে নিন। 

৪. প্রতি সোমবার দেবাদিদেব মহাদেবের পূজা করুন। 

৫. গৃহের শিবলিঙ্গের ওপর প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার বেলপাতা প্রদান করুন। 

সিংহরাশি :

১. যেকোনো রবিবার সোনার আংটিতে রুবি বা মানিক ধারণ করুন। 

২. প্রবাহমান জলে গমের আটার গুলি বানিয়ে ভাসিয়ে দিন। 

৩. প্রতিদিন ঘর মোছার সময় লবন দিয়ে ঘর মুছুন। 

৪. বৃহস্পতিবার উপবাস রাখতে পারেন। 

৫. রবি প্রণাম মন্ত্র প্রতিদিন স্নানের পর পাঠ করুন। 

৬. গলায় সাদা বা কালো হকিক ধারণ করুন। 

কন্যারাশি :

১. যেকোনো বুধবার উৎকৃষ্ট শ্রেণীর পান্না কনিষ্ঠা আঙুলে সোনার আংটিতে ধারণ করুন। 

২. মুগডাল জলে ভিজিয়ে গরুকে খেতে দিন। 

৩. প্রতি শুক্রবার দুর্গাস্ত্রোত্র পাঠ করুন। 

৪. শুক্রবার কালীমাতাকে লাল জবাফুল অর্পণ করুন। 

৫. মানিব্যাগে ছোট রুপোর বল রেখে দিন। 

৬. পঞ্চমুখী রুদ্রাক্ষ তিনটি গলায় ধারণ করুন। 

তুলারাশি :

১. যেকোনো শুক্রবার রুপোর আংটিতে হীরা বা অপ্যাল রত্ন ধারণ করুন। 

২. অষ্টধাতুর আংটিতে নীলা বা এমিথিস্ট ধারণ করুন। 

৩. কাঁচাকলা প্রবাহমান জলে নিক্ষেপ করে মনোবাঞ্ছা জানান। 

৪. মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র সকাল সন্ধ্যা জপ করুন। 

৫. নবগ্রহ স্ত্রোত্র সকাল সন্ধ্যা পাঠ করুন। 

বৃশ্চিকরাশি :

১. উৎকৃষ্ট শ্রেণীর প্রবাল তামার আংটিতে ধারণ করুন। 

২. গলায় রৌপ্যকেন্দ্রিক চন্দ্রযুক্ত মুক্ত ধারন করুন। 

৩. শুভ কাজে যাওয়ার আগে জাফরানের তিলক কপালে আঁকুন। 

৪. তামার পাত্রে জল ও চিনি রেখে সূর্য উদয় হওয়ার আগে ছাদে রেখে আসুন। 

ধনুরাশি :

১. শুভফলের জন্য বৃহস্পতিবার বেলা ১২:০০ থেকে ১:৩০ এর মধ্যে উৎকৃষ্টশ্রেণীর পোখরাজ তর্জনীতে ধারণ করুন। 

২. প্রতি শনিবার পিপুল গাছকে স্পর্শ না করে জল সরবরাহ করুন। 

৩. রবিবার সকাল ৮:০০ আগে অনামিকাতে রুবি বা মানিক্য ধারণ করুন। 

৪. তিনমুখী রুদ্রাক্ষ গলায় ধারণ করুন। 

৫. প্রতি শনিবার শনি মন্দিরে দেবতা সাধ্যমতো সরিষার তেল অর্পণ করুন। 

মকররাশি :

১.যেকোনো শনিবার পঞ্চ বা অষ্টধাতুর আংটিতে নীলা বা এমিথিস্ট ধারণ করুন। 

২. যেকোনো ধাতুতে আংটিতে বানিয়ে অপ্যাল রত্ন ধারণ করুন। 

৩. যেকোনো মঙ্গলবার অভাবী মানুষকে সাধ্যমতো দান করুন। 

৪. বুধবার গরুকে নিজ হাতে খেতে দিন। 

৫. প্রত্যহ নবগ্রহ স্ত্রোত্র সকাল সন্ধ্যা পাঠ করুন। 

৬. প্রত্যহ সংকট স্ত্রোত্র সকাল সন্ধ্যা পাঠ করুন। 

কুম্ভরাশি :

১. যেকোনো শুক্রবার হীরা বা অপ্যাল রত্ন ধারণ করুন। 

২. চতুর্মুখি বা সপ্তমুখী রুদ্রাক্ষ ধারণ করুন। 

৩. প্রতিবন্ধী কোনো ব্যাক্তিকে আহার্য দান করুন। 

৪. প্রতি বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীদেবীর ধ্যান ও প্রণাম মন্ত্র পাঠ করুন। 

৫. প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যা আদ্দ্যা  স্ত্রোত্র পাঠ করুন সকাল সন্ধ্যা। 

৬. পঞ্চমুখী রুদ্রাক্ষ তিনটি গলায় ধধারণ করুন। 

মীনরাশি :

১. শুভফলের জন্য বৃহস্পতিবার বেলা ১২:০০ থেকে ১:০০ এর মধ্যে উৎকৃষ্টশ্রেণীর পোখরাজ তর্জনীতে ধারণ করুন। 

২. দ্বিমুখী বা তিনমুখী রুদ্রাক্ষ ধারণ করুন। 

৩. প্রতিদিন হনুমান চালিশা পাঠ করুন। 

৪. প্রতি শনিবার সরিষার তেল শনিদেবকে উৎসর্গ করুন। 

৫. গৃহে স্বস্তিক বা ওম চিহ্ন লাগান। 


বিঃদ্র: রত্নের ক্ষেত্রে পুরুষেরা ডানহাত ও নারীরা বামহাতে রত্ন ধারণ করবেন    










 

শুক্রবার, ১ জানুয়ারী, ২০২১

২০২১ জানুয়ারি মাস কেমন কাটবে :


মেষরাশি : 

এই মাসে কর্মক্ষেত্রে উন্নতি ঘটতে পারে। নতুন চাকরির যোগাযোগ হতে পারে। দশম গৃহে শনি সারাবছর বিরাজ করবে। ফলে পরিশ্রম বাড়তে পারে। তবে সহকর্মীদের সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হতে। পারেন আর্থিক দিক থেকে বছরের শুরুতে কিছুটা সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। ব্যয় বারবার সম্ভাবনা রয়েছে। অনিচ্ছাকৃত ব্যয় বাড়বে। মাসের প্রথম থেকেই শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ায় মনোযোগী হবেন এবং তাদের প্রত্যাশাপূর্ণ হবে। পারিবারিক জীবন সমস্যার মধ্য দিয়ে এগোবে। তবে মাসের শেষের দিকে পরিস্থিতি আপনার আয়ত্তে আস্তে পারে। ব্যাক্তিগত জীবনে কিছু সমস্যা থাকবে। দাম্পত্যজীবন সুখের হবে। সঙ্গীর সঙ্গে বিরোধ হবে এবং উত্তেজনা থাকবে সময়ের সাথে সমস্যার সমাধান হবে। সন্তান সন্ততি উন্নতি করবে। প্রেম ভালোবাসার ক্ষেত্রে মাসটি অনুকূল হবেনা। বহু প্রতিবন্ধকতা থাকবে। স্বাস্থ্য স্বাভাবিকের থেকে ভালো হবে। 

বৃষরাশি :

জামুয়ারি মাসে কর্মে কিছু পরিবর্তন আশা করা যায়। ভাগ্যস্থানে শনি অবস্থান করায় ফলাফল দেরিতে লাভ হবে। ব্যাবসায়ীদের ক্ষেত্রে মাসটি অনুকূল হবেনা। বিনিয়োগ বুঝে করুন। পেশা পরিবর্তন এই মাসে না করে ভালো। আর্থিক ক্ষেত্রে মিশ্র ফলাফল পাবেন। ব্যয় বাড়তে পারে। আয়ের পথ খুলবে। জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সমস্যায় ফেলবে। শিক্ষার ক্ষেত্রে এই মাসে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হবে। অমনোযোগী হয়ে পড়বার সম্ভাবনা রয়েছে। পারিবারিক ক্ষেত্রে চাপ অনুভব করবেন। দৈনিক প্রত্যাশা পূরণে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। দাম্পত্য জীবনে এই মাসে সমস্যা থাকবে। মতবিরোধ ও কলহ ঘটতে পারে। কেতু সপ্তমে থাকার ফলে সমস্যা ভোগ করতে হবে। প্রেম ভালোবাসার ক্ষেত্রে স্বাভাবিক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকবে। স্বাস্থ্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে। 

মিথুনরাশি :

কর্মজীবন এই মাসে শুভ হতে চলেছে। মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ইতিবাচক ফলাফল লাভ হবে। উচ্চপদস্থ কর্মচারীর সুনজরে পড়তে পারেন। ব্যাবসায়ীরা এই মাসে সতর্কতার সাথে পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। আর্থিক ভাবে কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। ব্যয়কে নিজের আয়ত্তে রাখার চেষ্টা করুন। তবে এই মাসে কিছু আর্থিক প্রাপ্তি ঘটতে পারে। শিক্ষার্থীদের এই মাসে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে অন্যথায় শুভফল লাভ হবেনা। পারিবারিক জীবনে কিছু লাভ পাবেন। মানসিক উত্তেজনা প্রশমিত করুন। এইমাসে কিছু বিলাসবহুল দ্রব্য ক্রয় করতে পারেন। ভ্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে। দাম্পত্য জীবন সুখের হবে। উভয়ের মধ্যে সুন্দর বোঝাপড়া থাকবে। সন্তান নিয়ে কিছু উদ্বেগ থাকবে। প্রেমভালোবাসার ক্ষেত্রে সম্পর্কের উন্নতি ঘটতে পারে। বিবাহের সম্ভাবনা রয়েছে। স্বাস্থ্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে। 

কর্কটরাশি :

জানুয়ারি মাসে কর্মক্ষেত্রে মিশ্র ফলাফল পাবেন। কর্মে উন্নতি ও অগ্রগতি পথকে প্রশস্ত করবে। তবে কর্মক্ষেত্রে প্রতিপক্ষ সক্রিয় হবে। ব্যাবসার পক্ষে এইমাসটি অনুকূল হতে পারে। নতুন বিনিয়োগ করলে লাভবান হবেন। অর্হতিক পরিস্থিতি আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। মাসের শুরু থেকে ব্যয় গুলিকে আয়ত্তে আনুন। শিক্ষার্থীদের মাসের প্রথম থেকে কঠোর অনুশীলনের মধ্যে দিয়ে এগোতে হবে। পারিবারিক জীবনে বহু প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হবে। অহেতুক ঝামেলায় জড়িয়ে পড়তে পারেন। বিবাহিত জীবন স্বাভাবিক হবে ১৪ ই জানুয়ারির প বিবাহিত জীবনে পরিবর্তন আসবে। সন্তান সাফল্য পাবে। প্রেমভালোবাসার ক্ষেত্রে সম্পর্ক স্বাভাবিকের থেকে ভালো হবে। মাসটি আপনার ক্ষেত্রে উপযুক্ত হবে। স্বাস্থ্য বিশেষ ভালো থাকবেনা নিজের প্রতি যত্নশীল হতে হবে। 

সিংহরাশি :

দশম গৃহে শনি সারাবছর অবস্থান করবে এবং শনি শুভ হলে কর্মক্ষেত্রে সাফল্য আস্তে পারে।  কর্মক্ষেত্রে শত্রু সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। আপনার কাজের উপর তাদের প্রভাব স্থিমিত হবে। শত্রুজয়ী হয়ে উঠতে পারেন। ভাগ্য আপনার পক্ষে থাকবে। ব্যাবসায়ীদের পক্ষে মাসটি অনুকূল নয়। অনেক সমস্যার মধ্যে দিয়ে এগোতে হবে। আর্থিক শ্রীবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মাসের প্রথম থেকে ব্যয় বাড়বে। শিক্ষার্থীদের প্ৰতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হবে। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসতে পারে। পারিবারিক সকল সমস্যার ধীরে ধীরে অবসান হবে। পারিবারিক উন্নতি ও শ্রীবৃদ্ধি ঘটবে। দাম্পত্যজীবন কিছুটা সম্যসায় ফেলতে পারে। কর্মসূত্রে দূরত্ব একে অপরের মধ্যে সৃষ্টি হবে। সন্তানের উন্নতি ঘটবে। প্রেম ভালোবাসার ক্ষেত্রে মাসটি অনুকূল হতে পারে। স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতন হন.মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে পারে। 

কন্যারাশি :

কর্মজীবন এইমাসে খুব শুভ হবেনা। মিশ্র ফলাফল পাবেন। পেশার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এইমাসে সফলতা নাও আসতে পারে। দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে কর্মজীবনে শুভ পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাবে। এবং প্রত্যাশা পূরণ করতে সক্ষম হবেন। ব্যাবসায়ীদের পক্ষে মাসটি অনুকূল হবেনা। শেষের দিখে কিছু শুভ পরিবর্তন ঘটতে পারে। বিনিয়োগ এই মাসে না করাই ভালো। আর্থিক জীবনে উত্থানপতন চলবে। ব্যয় বাড়বে, আয় স্থির থাকবে। সঞ্চয় এই মুহূর্তে সম্ভব হবেনা। মাসের শেষে আয়ের উৎস দেখা দিতে পারে। শিক্ষার্থীরা সমস্যায় পড়তে পারেন। অমনোযোগী হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিপক্ষ অনেক বেশি সক্রিয় হয়ে উঠবে। পারিবারিক জীবন এইমাসে শুভ হবে। পরিবারের সমর্থন পাবেন। ভ্রাতাভগিনী আপনাকে সাহায্য করবে কঠিন পরিস্থিতিতে। দাম্পত্য জীবন সুখের হবে। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক নিবিড় হবে। সন্তান আপনার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে। প্রেমভালোবাসার ক্ষেত্রে মাসটি অনুকূল হতে চলেছে। স্বাস্থ্য আপনার পক্ষে থাকবে। ছোটোখাটো সমস্যায় কষ্ট পেতে হতে পারে। 

তুলারাশি :

কর্মক্ষেত্রে স্বাভাবিকের থেকে ভালো ফল পেতে চলেছেন। আপনার প্রত্যাশাপূর্ণ হবে। সহকর্মীদের সহযোগিতা পেতে পারেন। চাকরির সাথে ছোটোখাটো ব্যাবসা শুরু করলে তা শুভ প্রভাব ফেলতে পারে। ব্যাবসায়ীদের পক্ষে মাসটি অনুকূল। বিনিয়োগ করতে পারেন। আর্থিক জীবনে কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। ব্যয় বাড়বে। এইমাসে আয়ের পথ বিভিন্ন কারণে বাধাপ্রাপ্ত হবে। ধৈর্য্য ধরুন আর্থিক সমস্যার সমাধান হবে। শিক্ষার্থীদের পক্ষে মাসটি অনুকূল হবে। উচ্চশিক্ষার সঙ্গে যুক্ত জাতক জাতিকারা তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবেন। তবে পরিশ্রম ও অনুশীলন চালিয়ে যেতে হবে। পারিবারিক জীবন মোটের উপর শুভ হবে। বিভিন্ন ঝামেলায় জড়িয়ে পড়তে পারেন। দাম্পত্যজীবন সমস্যার হতে পারে। মাসের শেষভাগে মনোমালিন্য ও কলহের সম্ভাবনা রয়েছে। সন্তানের পক্ষে মাসটি অনুকূল হবে। লেখাপড়ায় ও কর্মজীবনে সাফল্য আসতে পারে। প্রেম ভালোবাসার ক্ষেত্রে মাসটি অনুকূল হতে পারে। ভ্রমণের পরিকল্পনা করতে পারেন। স্বাস্থ্য মাসের শেষভাগে সমস্যায় ফেলতে পারে। সাবধানতা অবলম্বনের প্রয়োজন রয়েছে। 

বৃশ্চিকরাশি :

বছরের প্রথম থেকেই কর্মজীবন বিশেষ ভাবে বিড়ম্বিত হতে পারে। পরিশ্রম আগের তুলনায় অনেক বাড়বে। সহকর্মীদের সহযোগিতা সেই তুলনায় পাবেন না। মাসের প্রথম পর্যায় থেকে সতর্কতার সঙ্গে কাজ করুন। কর্মক্ষেত্রে গুপ্ত শত্রু বারবার সম্ভাবনা রয়েছে। এবং তারা সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। ব্যাবসায়ীদের পক্ষে মাসটি অনুকূল হতে চলেছে। তারা সাফল্য লাভ করবে। ব্যয় বৃদ্ধি পেলেও আপনার আয়ত্তের মধ্যে থাকবে। আয়ের পরিমান বাড়ার সম্ভাবনা কম। শিক্ষার্থীদের কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হতে পারে। পরিবেশগত বাধা লেখাপড়ায় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। মাসের তৃতীয় সম্প্যাহ থেকে পারিবারিক সমস্যার মডেল পড়তে হতে পারে। অশুভ গ্রহের দৃষ্টি পারিবারিক জীবনে প্রত্যক্ষ ভাবে প্রভাব ফেলবে। এখন থেকে সাবধানতা অবলম্বন করুন। বিবাহিত জীবন স্বাভাবিক হতে চলেছে। কিছু সমস্যা থাকলেও আপনার আয়েত্তের মধ্যেই থাকবে। প্রেমভালোবাসার ক্ষেত্রে মাসটি অনুকূল হবেনা। বিশ্বাস ও আত্মবিশ্বাসের অভাব সম্পর্কের মধ্যে স্পষ্ট দেখা যাবে। ছোটোখাটো সমস্যা ছাড়া স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন জরুরি। 

ধনুরাশি :

মাসের প্রথম পর্যায় কর্মক্ষেত্রে শুভ না হলেও ধীরে ধীরে পরিস্থিতি আপনার পক্ষে আসবে। কর্মে উন্নতি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সুনজরে পরে পদোন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে। সেলসের কাজে যুক্ত জাতক জাতিকা সাফল্য পাবে। গুপ্তশত্রু থাকবে। তবে প্রভাবহীন হয়ে পর্বে তারা। আর্থিকজীবনে শুভ পরিবর্তন আসতে চলেছে। আয়ের বৃদ্ধি ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। মাসের শেষে আর্থিক উন্নতি ঘটবে। শিক্ষার ক্ষেত্রে অপরিসীম সাফল্য আসতে  চলেছে। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে, উচ্চশিক্ষার সঙ্গে যুক্ত জাতক জাতিকারা তাদের প্রত্যাশা মতো স্কুল বা কলেজে ভর্তি হতে পারবে। পারিবারিক জীবনে সুখ সমৃদ্ধি বজায় থাকবে। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় থাকবে। দাম্পত্য জীবনে বিশেষ কোনো সমস্যার সম্ভাবনা নেই তবে স্ত্রীর স্বাস্থ্যহানি ঘটার সম্ভাবনা থাকছে। সন্তানের জীবনে উত্থানপতন থাকবে। প্রেম ভালোবাসার ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। মাসটি সাবধানে অতিবাহিত করা প্রয়োজন। স্বাস্থ্য স্বাভাবিক থাকবে। 

মকররাশি :

মাসের প্রথম থেকেই পরিশ্রম বাড়বে। কর্মক্ষেত্রে চাপ অনুভূত হবে। সাফল্য আসতে সময় লাগবে। ব্যাবসায়ীদের পক্ষে মাসটি অনুকূল হতে চলেছে। যেকোনো বিনিয়োগ মাসের শেষ ভাবে করা উচিত। ব্যবসা স্বাভাবিক থাকবে। অর্থনৈতিক জীবন সমস্যার হতে পারে। অনিচ্ছাকৃত ব্যয় বাড়ার সম্ভাবনা থাকছে। তবে আয়ের পথ খুলবে নিজেকে তার জন্য প্রস্তুত করতে হবে। শিক্ষার্থীরা শুভ ফল পাবে। লেখাপড়ায় মনোনিবেশ এবং যেকোনো পরীক্ষার প্রস্তুতি তাদের প্রত্যাশা মতোই হবে। মাসটি তাদের পক্ষে অনুকূল হবে। পারিবারিক ক্ষেত্রে মানসিক চাপ বৃদ্ধি পেতে পারে। মাতার স্বাস্থ্যহানি ঘটবার সম্ভাবনা রয়েছে। দাম্পত্যজীবনে বিবাদ ও ছোটোখাটো বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য ঘটতে পারে। প্রেমভালোবাসার ক্ষেত্রে শুভ পরিবর্তন আশা করা যায়। সন্তানসন্ততি সাফল্য অর্জন করবে। বিবাহের চূড়ান্ত দিনক্ষণ ধার্য হতে পারে। স্বাস্থ্যজীবন অনুকূল হবে। 

কুম্ভরাশি :

কর্মক্ষেত্রে সমস্যা দিয়ে দুরু হলেও পরবর্তীকালে পরিস্থিতি আপনার আয়ত্তে থাকবে। প্রতিপক্ষ দুর্বল হবে। কর্মসূত্রে স্থানান্তর ঘটতে পারে। সহকর্মীদের সহযোগিতা পাবেন। ব্যাবসায়ীরা মাসের প্রথম থেকেই শুভ পরিবর্তন আশা করতে পারেন। নতুন ব্যবসা শুরুর আগে সমস্ত শর্ত বুঝে নিন। অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কিছুটা সমস্যায় ফেলতে পারে। আটকে থাকা অর্থ পুনরুদ্ধার করতে সময় লাগবে। স্বাস্থ্যজনিত খাতে ব্যয় হতে পারে। শিক্ষার্থিরা অনুকূল ফলাফল পেতে পারেন। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে প্রত্যাশা পূরণ হতে পারে। পারিবারিক ক্ষেত্রে উন্নতি ঘটতে পারে। পরিবারে কোনো ধর্মীয় শুভ অনুষ্ঠানের কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারেন। বিবাহিতজীবন সুখের হবে। ভ্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে। একে অপরের সঙ্গে সুন্দর বোঝাপড়া থাকবে। সন্তান শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নতি করবে। এবং আপনার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে। সন্তানের স্বাস্থ্য কিছুটা উদ্বেগের সৃষ্টি করতে পারে। প্রেম ভালোবাসার ক্ষেত্রে শুভ পরিবর্তন আশা করা যায়। সম্পর্কের বিশ্বাস ও ভরসা বিদ্যমান থাকবে। স্বাস্থ্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে। 

মীনরাশি :

কর্মজীবনে এইমাসে সাফল্য ও পদোন্নতির নির্দেশ করে। মার্কেটিংএর কাজে যুক্ত ব্যাক্তিদের সাফল্য আসতে পারে। কর্মসূত্রে দূরে কোথাও যেতে হতে পারে। বাসায়ীদের পক্ষে শুরুটা ভালো না হলেও পরবর্তী কালে শুভ হবে। এইমাসে কোনো প্রকার বিনিয়োগ না করাই ভালো। আর্থিক দিক থেকে মিশ্র ফলাফল পাবেন। স্থায়ী উপার্জন বৃদ্ধি পাবে। শিক্ষার্থীদের আশা প্রত্যাশা পূরণ হতে চলেছে। লেখাপড়ায় মনোযোগ বাড়বে প্রতিপক্ষ আপনার কাছে দুর্বল হতে পারে। পারিবারিক সুখ সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে। গৃহে শুভ অনুষ্ঠানের কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারেন। পারিবারিক ভ্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে। দাম্পত্যজীবনে কোনোরকম অশুভ প্রভাব নেই তবে স্ত্রীর স্বাস্থ্যহানি হতে পারে। সন্তানের সাফল্যে আপনার ভূমিকা থাকবে। প্রেম ভালোবার ক্ষেত্রে মাসটি উপযুক্ত নয়। বহু ক্ষেত্রে পরিবন্ধকতার সৃষ্টি হবে। স্বাস্থ্য স্বাভাবিকের থেকে ভালো হবে।