মঙ্গলবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

মণিবন্ধ ও মণিবন্ধ রেখা কি ? এবং তার গুরুত্ব সন্মন্ধে জেনে নিন -

হাতের কব্জিকে ভালো কথায় মণিবন্ধ বলা হয়। যে মানুষের মণিবন্ধ সুগঠিত, সেই মানুষ রাজা বা রাজতুল্য ঐশ্বর্যশালী হন। হাত নাড়াচাড়া করলে যদি মণিবন্ধ থেকে শব্দ বের হয় এবং হাতের রেখায় যদি অনেক ছেদ বা কর্তিত অনেক প্রতিকূল রেখা যদি হাতে দৃষ্ট হয়, তবে ব্যাক্তি শ্রমহীন, পরশ্রীকাতর, ভীতু ও অধার্মিক হয়। নারীর করতলের ন্যায় যদি মণিবন্ধ সুদৃশ্য ও চকচকে হয় এবং করতলের ও হাতে যদি সমতল বজায় থাকে, তবে সেই নারী প্রবল ঐশ্বর্যশালিনী ও সৌভাগ্যবতী হন। যে নারীর মণিবন্ধ শিরাবহুল ও অসমতল, সেই নারী দুঃখিনী, পাপকার্যে আসক্তা ও কষ্টের জীবনযাপন করে। মনিবন্ধরেখা প্রান্ত সীমায় অবস্থিত; এই রেখা কব্জির এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত পরিলক্ষিত হয়। কারোর হাতের কব্জিতে একটিমাত্র মণিবন্ধ রেখা পরিদৃষ্ট হয়। আবার কারোর হাতে তিনটি বা তার অধিক মণিবন্ধ রেখা পরিদৃষ্ট হয়। করতলের উপর মনিবন্ধের প্রথম বলয় স্বাস্থ্য, দ্বিতীয় বলয় থেকে অর্থ ও তৃতীয় বলয় থেকে পুত্রসন্তান, লাভাদি এবং চতুর্থ বলয় থেকে জাগতিক সুখভোগের বিচার হয়ে থাকে। প্রাচীন রোমে ও গ্রিসদেশে বিবাহের পূর্বে নারীর হাতের মণিবন্ধ বিচারের রেওয়াজ ছিল। যদি মণিবন্ধ বলয়ে শাখা রেখা পরিলক্ষিত হয় এবং তা কোণের সৃষ্টি করে তবে ব্যাক্তি কোনো আত্মীয়ের মৃত্যুর পর উত্তরাধিকার সূত্রে ধনলাভ করেন এবং বৃদ্ধবস্থায় তার যোগ্যতা অনুসারে সম্মান লাভ করে। ব্যাক্তিটি সৎ স্বভাবযুক্ত ও স্বাস্থ্যবান হয়ে থাকেন। কারও মণিবন্ধে সুবিন্যস্ত তিনটি বলয় রেখা থাকলে এবং তা অগভীর ও বিসতৃত হলে, সেই ব্যাক্তির ষাট বছর পরমায়ু হয় এবং তিনি প্রচুর সম্পদের অধিকারী হন। কিন্তু যৌবনে দারিদ্র কষ্ট পেয়ে থাকেন। যদি প্রথম বলয়ের স্থলে, দ্বিতীয়টি সরু ও তৃতীয়টি ভগ্ন হয়, তবে প্রথম জীবনে ঐশ্বর্য, মধ্যজীবনে অল্পতা ও শেষ জীবনে অর্থ উপার্জন হয়ে থাকে। মণিবন্ধে দুটি সরল অভগ্ন রেখা থাকলে আয়ু পঞ্চাশ বছর হয়ে থাকে। ব্যাক্তি রুগ্ন হন। মণিবন্ধে মাত্র একটি রেখা পরিদৃষ্ট হলে জাতকের অল্পায়ু যোগে জন্ম হয়। মনিবন্ধের বলয়গুলি একটি অপরকে স্পর্শ না করলে জাতক শ্রেষ্ঠ, প্রতিভাবান, অতি কৌতূহলী, উচ্চস্তরীয় চিন্তা নিমগ্ন, সৎসাহসী, উন্নতিশীল ও উচ্চব্যাক্তি হিসেবে পরিগনিত হন। মনিবন্ধের রেখাসমুখ অবিমিশ্রিত রক্তবর্ণের হলে যুদ্ধে জাতকের সৌভাগ্য সূচনা হয়। মনিবন্ধের রেখাসমূহ বিযুক্ত বা শৃংখলাকার হলে জাতককে কৃপণ করে। এবং অনেক পরিশ্রম করে অর্থ উপার্জন করতে হয়। তবে মনিবন্ধের প্রথম রেখাতে যব চিহ্ন থাকলে বা শৃঙ্খলিত হলে জাতককে পরিশ্রমী করে। এঁরা কৃতকার্য ও সফল হন। পরিশ্রমের দ্বারা প্রচুর ধন ও ব্যাবসায়ে প্রচুর লাভ করতে পারেন। এক্ষেত্রে মনিবন্ধের শৃঙ্খলিত রেখাগুলি ঈষৎ শুভ্র বা রক্তবর্ণের হলে সামুদ্রিক দ্রব্যের ব্যাবসায়ে প্রভ্যুর ধন উপার্জনের সম্ভাবনা দেখা যায়। মণিবন্ধ থেকে রেখা সমান্তরাল ভাবে উর্ধমুখী হয়ে চন্দ্রের ক্ষেত্রের দিকে গমন করলে এবং তা অসমান হলে মানসিক দুর্দশা ও দুর্ভাগ্যের সূচনা করে। শুধু তাই নয় গুপ্তহত্যা ও শত্রূতা ও প্রতারণা এবং সাংঘাতিক কার্য সমূহের নির্দেশ দেয়। যদি প্রথম মনিবন্ধরেখাটি গভীর এবং স্পষ্ট হয়, তবে দৈহিক সাংগঠনিক শক্তি প্রবর্ধিত হয়ে থাকে। আয়ুরেখাটি যদি তৎসঙ্গে উত্তম হয়, তবে বুঝতে হবে, ঐ ব্যাক্তি নিশ্চিতরূপেই সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবেন। কিন্তু যদি ঐ রেখা দুর্বল হয়ে ত্রূটি যুক্ত হয়, শৃঙ্খলচিহ্ন অথবা অগভীর এবং চওড়া হয় তবে জাতকের দৈহিক সাংগঠনিক শক্তি তেমন সবল হবেনা। যদি মনিবন্ধরেখা থেকে উচ্চমুখী ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রেখাদি নির্গত হয়, তবে উক্ত জাতক জীবনে উন্নতি লাভ করার জন্য বিশেষভাবে সচেষ্ট হবেন।  


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন