মঙ্গলবার, ২ মার্চ, ২০২১

রাবণের কিছু অজানা তথ্য:

রাবণের কিছু অজানা তথ্য:

রাবণ একটি পুরান ইতিহাস। পুরান অনুযায়ী এর ব্যাখ্যা পাওয়া যায় অনেক। তবে সবচেয়ে প্রচলিত ব্যাখ্যাটি পুরান অনুযায়ী রাবণের দশটি মাথা আসলে মানুষের দশটি বদ চরিত্রের বৈশিষ্টের প্রতীক। (১) অহংকার, (২) মোহ, (৩) অনুতাপ, (৪) ক্রোধ, (৫) ঘৃণা, (৬) ভয়, (৭) হিংসা, (৮) লোভ, (৯) কাম, (১০) জড়তা। এই দশটি চারিত্রিক বৈশিষ্টের প্রতীক হিসেবেই রাবন দশানন। 
রাবণ ভারতীয় মহাকাব্যে রামায়ণের অন্যতম চরিত্র। রামায়ণের উত্তরাকাণ্ডে তাঁর পূর্বজীবেনের কথা বলা হয়েছে। মহাকাব্যে কামুক ও ধর্ষকামী বলে নিন্দিত হলেও রাবণকে মহাজ্ঞানী ও তাপসও বলা হয়েছে। রাবণ আদিযুগে সর্বপ্রথম উড়ন্ত যান পুস্পক রথ ব্যবহার করেন। 
রাবণের পিতা ব্রম্ভ ঋষি বিশ্রবা এবং মাতা কৈকসী। বিশ্রবা মহর্ষি পুলস্তর (সপ্তর্ষি) পুত্র এবং কৈকসী হলেন অসুর রাজা সুমালীর কন্যা। রাবণ ও তার সহোদররা তাঁদের পিতার কাছে শিক্ষা সম্পন্ন করেন। রাবণ বেদশাস্ত্রের অন্যতম একজন পন্ডিত ছিলেন। রাবণ গীতরচনায় অতি নিপুন ছিলেন। তিনি ছিলেন শিবের পরম ভক্ত। সার্বক্ষণিক শিবের সান্নিধ্য পাওয়ার লক্ষ্যে তিনি যখন কৈলাস পর্বতকে লংকায় প্রতিস্থাপনের জন্য নিজ তপোবলের দ্বারা দুই হস্তে তুলে নেন তখন মহাদেব তাঁর পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি কৈলাসে স্পর্শ করলে রাবণের দুইহাত কৈলাসে চাপা পড়ে যায়। রাবণ তখন প্রচন্ড চিৎকার করতে থাকেন এবং শিবকে শান্ত করার নিমিত্তে একটি গীত রচনা করেন যা পরে "শিবতান্ডব স্ত্রোত্র" নাম পরিচিত হয়। শিবের ক্রোধ শান্ত হয় এবং মহাদেব রাবনকে চন্দ্রোহাস নামক খড়গ উপহার দেন। এবং অতি উচ্চমাত্রায় রোদন করার কারণে তাঁর নাম রাবণ বলে পরিচিত হয়। "শিবতান্ডব" স্ত্রোত্র গীতমালাটি রাবণ পুত্র ইন্দ্রজিৎ মুছে দেন কারণ পরবর্তীকালে আর কেউ কোনোকালে এই স্ত্রোত্রটি ব্যবহার করে শিবকে অনুকূল করতে না পারেন। 
রাবণ জ্যোতিষ ও বাস্তুশাস্ত্রে অতীব জ্ঞান রাখতেন। জ্যোতিষ শাস্ত্রে তাঁর জ্ঞানের দ্বারা সে তার পুত্রের জন্মলগ্নে সকল গ্রহকে বশে এনে সেই তিথিকে মঙ্গল তিথি  বানিয়ে নেন। 
রাবণ পূর্বজন্মে ছিলেন অভিশাপগ্রস্ত বিষ্ণুভক্ত বিজয়। রাবণ তাঁর নিজ শক্তিতে ত্রিলোকের অধিপতি হন। শ্রীরাম অবতারিত হন এবং রাবণকে বধ করেন। কথিত আছে রাবণকে হত্যা করে ১ বছর ব্রম্ভ হত্যার অনুশোচনায় হিমালয়ে তপস্যা করেন। কারণ রাম ছিলেন পুরুষোত্তম। 







কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন