সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

নিজের রত্ন নিজে পরীক্ষা করুন

প্রবাল - চিকন, রক্তের মধ্যে রাখলে, রক্তের চারদিকে রক্ত জমে যায়। এক বিন্দু জল ওপরে দিলে গড়িয়ে পড়েনা। সাধারণত মঙ্গলবার ধারণীয়।

হীরা - দেখতে বেশ চমকদার, স্পর্শে ঠান্ডা বোধ হবে। রোদে রাখলে ইন্দ্রধনুর ন্যায় রংবেরঙের কিরণ বের হতে থাকে। কঠিন বস্তুর আঘাতে ভেঙে যায়। গরম দুধে ফেললে দুধকে ঠান্ডা করে দেয়। বিদ্যুতের কুচালক। যদি একে গরম করা হয় তাহলে এর বর্ণ কিছুটা হালকা হয়, ঠান্ডা হলে পূর্বরূপ ধারণ করে।

পান্না - সবুজ ঘাসের যেমন রং সেইরকম হয়ে থাকে। বেশ মখমলী ও দেখতে সুন্দর হয়। সবুজ ও সাদা মিশ্রিতও হয়। পারদর্শী ও অপারদর্শী এর দুটি রূপ। যদি কাঠের উপর ঘষা যায় তাহলে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। জলের বিন্দু এর উপর দিলে গড়িয়ে যায়না।

মুক্তা - উজ্জ্বল, আঁকাবাঁকা বা গোলাকার ইত্যাদি হয়ে থাকে। এই রত্নটি কাটিং করা যায়না। হলদে বা গোলাপি কাপড়ের উপর ঘষলে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। এটি সাদা,চকচকে নীল, কালো প্রভৃতি কয়েক রঙের হয়ে থাকে। এবং প্রকাশমান হয়ে থাকে।

রুবি - এটি ওজনদার, রেশ যুক্ত। বার্মার রুবি ধারণ করলে কিছুটা গরম অনুভূত হয়। লাল, কালো, লাক্ষা রঙের পারদর্শী ও অপারদর্শী দুরকম হয়। চকচকে, কান্তিমান ও চিক্কন যুক্ত হয়ে থাকে।

পোখরাজ - ভারী বোধ হয়। চকচকে ও পারদর্শী। আসল পোখরাজে কিছু রেশা অবশই থাকবে। রোদে রাখলে হলুদ বর্ণের কিরণ ফুটে উঠবে।

নীলা - রোদে রাখলে নীল কিরণ বের হবে। কাঁচের গ্লাসে জল ভর্তি করে তার মধ্যে রেখে দিলে নীল কিরণ বেরোতে থাকে। বেশ চিক্কন, স্বচ্ছ, উজ্জ্বল পারদর্শী অর্থাৎ প্রভাবশালী। এর মধ্যে একটি রেশা দেখা যাবে। খুব দ্রুত ফলাফল দান করে থাকে সে শুভ হোক বা অশুভ।
নীলার সতর্কবাণী - যদি দেহে কোনো বিকার উৎপন্ন হয়, দেহের আকৃতিতে কোনো পরিবর্তন আসে, চোখের কোনো সমস্যা দেখা দেয় , গৃহে চুরি, রোগব্যাধি প্রভৃতি উৎপন্ন হয়ে থাকে, রাত্রে সবার সময় বা জেগে থাকার সময় ভয় লাগে তাহলে নীলাকে অশুভ মনে করে ধারণ করবেননা। অন্যথায় আরো বেশি ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। এই রত্নের প্রভাব খুব দ্রুত পড়ে। রাতারাতি ধনবান করে তুলতে পারে আবার পথের ভিকারী করে দিতে পারে। মোটামুটি ধরণের ৩ ঘন্টার মধ্যে প্রভাব ফেলতে শুরু করে।

গোমেদ - গোমেদ নিয়ে যদি গোমূত্রে ২৪ ঘন্টা রাখা যায়, তাহলে গোমূত্রের রং পরিবর্তন হয়। কিছু কালিমাযুক্ত গোমেদ, সম্পূর্ণ লালবর্ণের হয়ে থাকে। গোমেদ কাঠের উপর ঘষলে চকচকে ও স্বচ্ছ হয়। এটি স্বচ্ছ ও সমডোল হয়ে থাকলে। সাধারণত এটি গরুর চর্বির রং অথবা হালকা হলুদ বর্ণের হয়ে থাকে। দুধে ডুবিয়ে রাখলে তাকে গোমূত্রের মতো করে দেয়।

ক্যাটসআই - এটি নাড়লে, এর মধ্যে দুধের বর্ণ, নীল বর্ণ বা সোনায় বর্ণের চমক দেখা যায়। এই রেখার ওপর দিকটা উন্নতদর অথবা গম্বুজকের মনে হয়। সূর্য উদয় হলে এটি রুপার তারের মতো মনে হয়। বাঁশপাতার ন্যায় এর কান্তি অর্থাৎ আভা ঝলসায়। হলদে বিড়ালের চোখের মতো ছায়া পড়ে। কাপড়ের উপর ঘষলে খুব উজ্জ্বল হয়।  

রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

কিছু রত্ন ও উপরত্নের বিশেষত্ব

কিছু রত্ন ও উপরত্নের বিশেষত্ব

হকিক - মাথা ঠান্ডা রাখে , মানসিক প্রশান্তি আনে , কাজকর্মে মনোযোগী করে তোলে , মনে বিশুদ্ধ চিন্তার উদয় হয়। ভালো কাজের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে মনের মিল হয় , পরকীয়া প্রবণতা থেকে রাখা করে। হৃদরোগীদের ক্ষেত্রে হকিক বিশেষ ভাবে গ্রহণীয়। রক্তচলাচল স্বাভাবিক রাখে, দুর্ঘটনা, ব্ল্যাক ম্যাজিক ও নানারকম বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করে।

ম্যালাকাইট - এটি বুধের পাথর।উপরত্ন হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অপরাধ, অসন্তুষ্টি, আধ্যাত্মিক অভিব্যাক্তি, আবেগপ্রবণ নিরাময় ,সম্পর্ক, বন্ধুত্ব প্রভৃতি নিয়ন্ত্রণ করে। এই পাথর অতীত স্পষ্ট করার জন্যে বিশেষ ভাবে কাজ করে। মাথা ধরা, মাথা ঝিমঝিম করা প্রতিরোধ করে।  ভালোবাসা ও বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে কাজ করে।  কপারের সাথে পরা উচিত। দাম মোটামুটি ৩০০ - ৪০০ টাকা।

ওপাল - চন্দ্র ও শুক্রের উপরত্ন হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তীব্র কামনা থেকে রক্ষা করে।  শত্রুদমন , কর্মে সফলতা, মানসিক শান্তি, শরীরী ও স্বাস্থ্যের বিশেষ সহায়ক। দৃষ্টিশক্তির উপর ওপাল রত্নের শুভ প্রভাব রয়েছে বলে মানা হয়।

ফিরোজা - এই রত্নটি বুধের কাজ করে থাকে। স্বামী স্ত্রীর, প্রেমিক প্রেমিকাদের মধ্যে মনের মিল, পারিবারিক শান্তি বজায় রাখতে ফিরোজা ব্যবহার করা হয়। বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করতে এই রত্নটি কাজ করে থাকে।

সবুজ পান্না - সুখশান্তি, প্রশান্তি, পারিবারিক শান্তি, কর্মে সাফল্য, শত্রুদমন, শুভ কর্মসম্পাদন, শারীরিক ভাবে সক্ষমতা বজায় রাখার জন্যে সবুজ পান্না বিশেষ ভাবে কাজ করে। বুধ ও মঙ্গলের সমতল হিসেবে কাজ করে।

ব্লাকস্টোন - রত্নটি ঘন কালো হয়। অস্বচ্ছ হলেও বেশ চকচকে হয়। এই রত্নটি মঙ্গলের সমতল ও শনির কাজ করে। পুরুষ ৫ থেকে ১৭ রতি  নারী ৫ থেকে ৮ রতি ধারণ করতে পারে।

স্পটিক - এই রত্নটি ঝকঝকে সাদা হয়। এই রত্নটির মধ্যে ছিদ্র করে বাম হাতে ধারন করতে হয়। এটি অর্ধস্বচ্ছ। এই রত্নটি চন্দ্র ও শুক্রের কাজ করে। পুরুষরা ৭ থেকে ১০ রতি ও মহিলারা ৪ থেকে ৮ রতি ধারণ করে থাকে।

গোল্ডস্টোন - এই রত্নটি সৌভাগ্য বৃদ্ধিকারক। সোনার মতো বর্ণ বিশিষ্ট। পুরুষ ও মহিলা উভয়েই ১০ রতি ধারণ করতে পারে।

আইস্টোন - এই রত্নটি অর্ধস্বচ্ছ বা অস্বচ্ছ হয়ে থাকে। এর ওপর চক্র বা চোখের মতো থাকে সাদা বা কালোর উপরে।  তাছাড়া সামান্য খয়েরি রঙের রত্নের উপরেও নানা ধরণের চোখ থাকে। পুরুষরা ৬ থেকে ২০ রতি ও মহিলারা ৫ থেকে ২০ রতি ব্যবহার করতে পারে।

রাজপট্ট - এটি বরফের মতো ঠান্ডা ও পিত্তনাশকারী রত্ন। মঙ্গলের সমতলে ভালো কাজ করে। নারীরা গহনায় ব্যবহার করলে সৌভাগ্য বৃদ্ধি করে। পুরুষরা ৭ থেকে ১৫ রতি  ও নারীরা ৫ থেকে ১০ রতি ব্যবহার করতে পারে।

নীলি - এটি বেশ স্বচ্ছ রত্ন।  ওপরে পালিশ করা থাকে ও নীল বর্ণের হয়। এটিতে শনির কাজ হয়। পুরুষরা ৮ থেকে ১৬ রতি ও নারীরা ৫ থেকে ৮ রতি ব্যবহার করতে পারে।

টাইগারআই - এটি সৌখিন রত্ন। এই রত্নটি মঙ্গলের প্রথম ও দ্বিতীয় সমতলে উপর একসঙ্গে কাজ করে। এটি দেখতে অনেকটা বাঘের চোখের মতো। এর উপরের অংশ মসৃন এবং তাতে কালো দাগ থাকে। এটি খুব সাফল্যদায়ক রত্ন এবং দামেও কম। পুরুষরা ৮ থেকে ১৫ রতি ও মহিলারা ৬ থেকে ৮ রতি ব্যবহার করতে পারে।

গোলাপি টোপাজ - এই রত্নটি রবি ও চন্দ্রের খুব ভালো কাজ করে থাকে। এতে অল্প গোলাপি আভা দেখা যায়। মাঝখান থেকে সাদা আভা দেখা যায়। পুরুষরা ৭ থেকে ১২ রতি ও মহিলারা ৪ থেকে ৭ রতি ব্যবহার করতে পারে।

জেড - এই রত্ন বুধের কাজ করে তবে খুব বেশি কাজ করতে পারে না। এটি সবুজাভ হলেও বিশেষ উজ্জ্বল নয়। অনেকে একে জেড পান্নাও বলে। ওনেক্স পানার থেকেও এর দাম কম।  এটি অর্ধস্বচ্ছ। পুরুষরা ৮ থেকে ১০ রতি ও নারীরা ৫ থেকে ৮ রতি ব্যবহার করতে পারে।

ব্ল্যাকষ্টার - এটি সাধারণত কালো রঙের হয়। অস্বচ্ছ রত্ন এটি। একদিকে পালিশ করা থাকে। পালিশ করা দিক কালো রং হয় এবং যেদিকে পালিশ থাকেনা সেদিকে ছাই রঙের হয়ে থাকে। কালো পালিশের ভিতরে একটি রেখার মতো উজ্জ্বল রং দেখা যায় এবং তার মধ্যে দিয়ে তারার মতো দেখায়। এই রত্নটি শনি ও মঙ্গলের সমতলের কাজ করে থাকে। অনেকে cats eye এর পরিবর্তে এটি ব্যবহার করে। পুরুষরা ৮ থেকে ১৬ রতি  ও নারীরা ৮ রতি  ব্যবহার করে থাকে।

টারকুইজ বা ষ্টারস্টোন - এটি বিদেশী রত্ন হলেও বহুল ব্যবহৃত। এটি নানাপ্রকারের বর্ণের হয়।  একদিক থেকে উজ্জ্বল রশ্মি বের হয় বা তারার মতো রশ্মি বের হয়। বর্ণ অনুযায়ী নানাগ্রহের জন্য ব্যবহার করা হয়। পুরুষরা ৭ থেকে ১৫ রতি এবং নারীরা ৫ থেকে ১০ রতি  ব্যবহার করতে পারে।

ব্ল্যাকস্যাফায়ার - এটি কালো রঙের হয় ও এর থেকে উজ্জ্বল আভা বের হয়। পোখরাজের মতো কিন্তু আলো আভাযুক্ত স্বচ্ছ রত্ন এটি। এই রত্ন শনি ও প্রথম মঙ্গলের কাজ দে। এটি কাটিং এবং আনকাটিং দুরকমের পাওয়া যায়। পুরুষরা ৮ থেকে ১৭ রতি ও নারীরা ৬ থেকে ৮ রতি  ধারণ করতে পারে।

মার্গাস পান্না - এটি কচি কলাপাতার মতো দেখতে হয়। অর্ধস্বচ্ছ ও বেশি উজ্জ্বল হয়না। দামেও কম এবং এটি বুধ ও কেতুর কাজ করে। পুরুষরা ১০ থেকে ১২ রতি ও নারীরা ৬ থেকে ১০ রতি ধারণ করতে পারে।

ইয়েলো স্টোন - এটি অর্ধস্বচ্ছ রত্ন। এরবর্ণ সম্পূর্ণ হলদে। এটি বৃহস্পতির কাজ করে। পোখরাজের দাম বেশি বলে অনেকে ইয়েলো স্টোন ব্যবহার করে। এর থেকেও উজ্জ্বল আভা বের হয়।  পুরুষরা ৭ থেকে ১২ রতি ও নারীরা ৭ থেকে ১০ রুটি ব্যবহার করে থাকে।

ওনেক্স পান্না - এটি ভালো জাতের অথচ কম দামি পান্না। এটি উজ্জ্বল, সবুজাভ ও কচি কলাপাতার রঙের হয়। এটি বুধ ও মঙ্গলের সমতল ক্ষেত্রে ও কেতুর কাজ করে থাকে। পুরুষরা ৫ থেকে ১৫ রতি  ও নারীরা ৫ থেকে ৮ রতি ব্যবহার করে থাকে।